সুন্দরগঞ্জের বালুচরে আলী বাবা থিম পার্ক

আবহমান বাংলার  অতিত, ঐতিহ্য এবং গ্রামীণ  সংস্কৃতিকে বর্তমান সমাজের আবালবৃদ্ধবনিতাদের সামনে উপস্থাপনা করার প্রত্যয় নিয়ে ধূ-ধূ বালু চরে গড়ে উঠছে আলী বাবা থিম পার্ক। সম্ভাবনাময় চরবাসিকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে  গঠনমুলক বিনোদন কেন্দ্রের নিমার্ণ কাজ এখন অনেকটা এগিয়ে। ইতিমধ্যেই বিনোদন প্রেমীরা ভিড় করছে প্রতিনিয়ত। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে মীরগঞ্জ-চৈতন্যবাজার-ইমামগঞ্জ বাজার হয়ে সোজা উত্তর দিকে গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম জেলার সম্মিলন স্থানে তিস্তা নদীর তীরে ৩৫ একর জমির  উপর  চমৎকার  এক নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশে এই ‘আলী বাবা থিম পার্ক’র অবস্থান। আরব্য উপন্যাসের সহস্র রজনীর ‘আলীবাবা ও চল্লিশ চোর’ গল্প অবলম্বনে পার্কটি নিমার্ণ করা হচ্ছে। যে গল্পে চল্লিশজন চোর তাদের চুরিকৃত ধনরত্ন  ‘চিচিংফাঁক’ শব্দটি বলে একটি গুহার মুখ খুলে সেখানে লুকিয়ে রাখতেন। আর কাঠুরে আলীবাবা সেই শব্দটি ব্যবহার করে ওই গুহা থেকে অর্জন করেছিলেন অনেক ধনরত্ন। এটি আরব্য রজনীর সেই ‘আলীবাবা চল্লিশ চোর’ গল্প না হলেও এটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নির্মাণাধীন ‘আলীবাবা থিমপার্ক’র গল্প। যা এখন অনেকটাই  দৃশ্যমান বটে। আরব্য উপন্যাসের সেই জাদু শব্দ চিচিং ফাঁক বলে দরজা খুলে মণিমাণিক্য না মিললেও এই আলী বাবা থিম পার্কের প্রবেশ পথেই চোখে পড়বে মহান আল্লাহর ৯৯ নাম খচিত নির্মাণাধীন ২০মিটার উঁচুভাস্কর্য, দেয়ালে দেয়ালে চোখে পড়বে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, জেরুজালেমের পবিত্র মসজিদ আলআকসা, পবিত্র কাবা শরীফ, হযেত ফাতেমা (রাঃ) বাড়ি, জর্ডানের মরুভূমির সেই সাহাবী গাছসহ খোদাই করা বিভিন ঐতিহাসিক নিদর্শনের চিত্র। দর্শনার্থীদের বসার জন্য রয়েছে সিমেন্ট দিয়ে গাছের আদলে তৈরী বসার চেয়ার, রয়েছে বেঞ্চ। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে নয়নাভিরাম রাস্তা। আলী বাবা পার্কের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ইয়ার আলী বলেছেন, ইনডোর গেমে দেখার সুযোগ থাকবে মহান আল্লাহর ৯৯ নামের উপর থ্রী ডি মুভি। সমুদ্রের বড় মাছের খাদ্য সংস্থান কিভাবে হয় এবং আগ্নেয় গিরির গলিত লাভা বা বড় বড় সাপ কিভাবে মানুষকে দংশন করতে পারে তা দেখানো হবে । পার্কের উত্তরে থাকবে পাহাড় ও পানির উপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা, থাকবে পানির ঢেউ, সেই ঢেউয়ে মেতে উঠবে দর্শনার্থীরা। পূর্ব পাশে থাকবে পুকুর, থাকবে সেই পুকুরে মাছ, সাথে লাগোয়া থাকবে পিকনিক স্পট। পুরো পরিকল্পনা অনুযায়ী আলীবাবা থিমপার্কটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি হবে মানুষের জন্য বিশেষত্বে ভরা বিনোদনের একটি অন্যতম মজার জায়গা। তিস্তার ভরা যৌবনে পার্কটি হয়ে উঠবে আরো মনোরম। দর্শনার্থীরা পাবে নির্মল হাওয়া। এলাকায় বিনোদনের কোন জায়গা না থাকায় ইতি মধ্যে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীরা তিস্তার তীরবর্তী বিশাল  উন্মুক্ত পার্কটিতে ভির করছেন প্রতিদিন। এটিকে কেন্দ্রে করে গড়ে উঠছে বিভিন্ন দোকানপাট। ছোঁয়া লেগেছে চরাঞ্চলে আধুনিকতার। তিস্তা পাওয়ার প্লান্টকে ঘিরে গড়েউঠা থিম পার্কটি,পাওয়ার প্লান্ট চালু হওয়ার সময় একই সাথে চালু হবে বলে জানিয়েছেন  স্বত্বাধিকারী । সম্প্রতি পার্কটির ভবিষত স্বপ্ন নিয়ে উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি। অশ্লীলতা মুক্ত স্বচ্ছ বিনোদন তেমনটি প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা।