মিয়ানমারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় ৭০০ জন মুসলিম নিহত হয়েছে। সেই সঙ্গে শুধু মান্দালয় ও সাগাইং অঞ্চলে প্রায় ৬০টি মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। স্প্রিং রেভোলুশন মায়ানমার মুসলিম নেটওয়ার্কের বরাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতি এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের মতে, মান্দালয়, সাগাইং, নেপিতাও, পাইনমানা, পিয়াবওয়ে, ইয়ামেথিন, থাজি, মেইকটিলা, কিয়াউকসে এবং পালেইক টাউনশিপের মসজিদগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ইরাবতি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর অনেক এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তাই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে।
পবিত্র মাস রমজানের শেষ জুমার নামাজের সময় মিয়ানমারে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ সময় বেশিরভাগ মসজিদে নামাজের প্রস্তুতি চলছিল। তাই মুসলিমদের প্রাণহানির সংখ্যা এতো বেশি।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুধুমাত্র মান্দালয়েই কমপক্ষে ১৮টি মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বেশিরভাগই রাজা মিন্ডনের (১৮৫৩-১৮৭৮) রাজত্বকালে নির্মিত। এই পুরনো মসজিদগুলো পরে আর কখনো মেরামত করা হয়নি।
ভূমিকম্পে ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদ থেকে উদ্ধার করা লাশ। ছবি: সংগৃহীত
মুসলিম সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, নির্মাণের পর থেকেই সরকারের পক্ষ থেকে মসজিদ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া হয়নি। মুসলিমবিরোধী ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অফ রেস অ্যান্ড রিলিজিয়ন’ নামের একটি সামরিক-সমর্থিত অতি-জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে মসজিদের বিরুদ্ধে জনমতকে প্রভাবিত করে।
২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সতর্ক করেছিল, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে না দেওয়ায় মিয়ানমারের ঐতিহাসিক মসজিদগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে।
ইরাবতির প্রতিবেদন বলছে, জান্তা সরকারের মিডিয়া মান্দালয় অঞ্চলে ভূমিকম্পে ১৫৯১টি বাড়ি, ৬৭০টি মঠ, ৬০টি স্কুল, তিনটি সেতু এবং কমপক্ষে ২৯০টি প্যাগোডা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু এরা মসজিদের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে কিছুই উল্লেখ করেনি।
ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদগুলোতে জান্তার উদ্ধারকারী দল উপস্থিত না হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষের দেহাবশেষ থেকে দুর্গন্ধের কথা জানিয়েছে।