গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলাবাসির দীর্ঘ দিনের প্রাণের দাবি স্বপ্নের তিস্তা সেতু নিমার্ণ কাজ পরিদর্শন করেছেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন ও প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মালেক। আজ মঙ্গলবার সকালে সেতুর নিমার্ণ এলাকার বিভিন্ন দিক ঘুরে ফিরে দেখেন এবং সেতু নিমার্ণ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সরকার লেবু, উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ আল মারুফ, জেলা নিবার্হী প্রকৌশলী আহসান কবির, উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল মুনছুরসহ সেতু নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের প্রথম সভা গত বছরের ৬ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটি (একনেক) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর- চিলমারি উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারি সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নিমার্ণ (দ্বিতীয় সংশোধীত) প্রকল্প অনুমোদন দেন। ২০১২ সালে তিস্তা সেতু নিমার্ণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। ২০১৪ সালে সেতু নিমার্ণ কাজের সুচনা হয়। সিডিউল মোতাবেক ২০২৩ সালে নিমার্ণ কাজ শেষ হবে।২০১৮ সালে সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল উপজেলার হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতু নির্মাণসহ সংযোগ সড়কের কাজ। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয়ের জটিলতার কারণে সংযোগ সড়কের ভুমি অধিগ্রহণ এবং সেতু নির্মাণের কাজ ঝুঁলে যায়। হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে সেতু নিয়ে স্বপ্ন দেখা দুই জেলার মানুষগুলো। স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য উপস্থাপন করলে গত বছরের ৬ জুলাই একনেক অনুমোদন দেন এবং কাজ শুরু করে। হরিপুর সেতু সংলগ্ন এলাকা হতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যার্ নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি সেতুর সংযোগ সড়কে রুপান্তের কাজ এবং গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজ অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাইবান্ধার সার্কিট হাউজে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হরিপুর-চিলমারি তিস্তা সেতুর ভিত্তি উদ্বোধন করেন । কুড়িগ্রামের চিলমারি, রাজীবপুর ও রৌমারী এবং গাইবান্ধা জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল হরিপুর চিলমারি তিস্তা সেতুর। ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দে নির্মাণ করার হবে তিস্তা সেতু। এর মধ্যে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে। সড়ক নির্মাণে ব্যয় হবে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নদী শাসনে ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। সেতুটিতে পিলার থাকবে ৩০টি এর মধ্যে ২৮টি পিলার থাকবে নদীর ভিতরে অংশে এবং ২টি পিলার থাকবে বাহিরের অংশে। সেতুর উভয়পাশ্বে নদী শাসন করা হবে ৩.১৫ কিলোমিটার করে। সেতুর উভয় পাশ্বে সড়ক নির্মাণ করা হবে ৫৭. ৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে চিলমারি মাটিকাটা মোড় থেকে সেতু পর্যন্ত ৭.৩ কিলোমিটার এবং গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার। চিলমারী অংশে একসেস সড়ক সেতু থেকে কাশিম বাজার পর্যন্ত ৫.৩ কিলোমিটার। এবং গাইবান্ধা ধাপেরহাট থেকে হরিপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মালেক জানান, সেতুর মুল কাজ শুরু হয়ে গেছে। আশা করা যাচ্ছে যথাসময়ে নিমার্ণ কাজ শেষ হবে। সেতুটি নিমার্ণ হতে দুই জেলাবাসির স্বপ্ন পুরণ হবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেকটা পরিবর্তন হবে।