গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত বৃক্ষ সজনে গাছ। বসত বাড়ির আঙিনা, রাস্তার আশ পাশে অবহেলা, অনাদরে সজনে গাছ বেড়ে ওঠে। গাছের মালিককে এর পরিচর্যা করতে হয়না বললেই চলে। বছরে একবার সবজির জোগান দিলেও সারা বছর শাক হিসেবে এর পাতা পাওয়া যায়। সবজি হিসেবে সজনের কচি ডাটা যেমন উপাদেয় এবং পুষ্টিকর তেমনি এর পাতাও ওষুধি গুনে ভরপুর। তাই গবেষকরা সজনে পাতাকে নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজনে গাছকে মিরাকেল ট্রি বলে অভিহিত করেন।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, সজনে গাছ খরা সহিষ্ণু গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের উদ্ভিদ। আমাদের দেশে সাধারণত এপ্রিল মাসে ডালের মাধ্যমে সজনে গাছের বংশ বিস্তার করানো হয়। ফাল্গুন মাসে সজনে গাছ ভরে ওঠে শ্বেত শুভ্র ফুলে। এসময় এর রুপ আমাদের মোহিত করে। সজনের পাতা ও ফলে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি উপাদান থাকায় এগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি জীবন ধারণের পুষ্টির যোগান ও দেয়। এর শিকড় ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। নিম পাতার চেয়েও বেশি ওষুধি গুনাগুন থাকে সজনে পাতায়। এটি সহজলভ্যও বটে। সজনে চাষ সম্প্রসারণে, রাস্তার পাশে সজনে গাছ লাগাতে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। প্রাণী খাদ্য হিসেবেও সজনে পাতা ব্যবহৃত হয়।
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ রুহল কুদ্দুস ডলার জানান, সজনেতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন এ, জিঙ্ক, আয়রণ এবং পটাশিয়াম থাকে। সজনেতে এগুলো থাকে বলে তা অন্ধত্ব, রক্তস্বল্পতাসহ ভিটামিনজনিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। সজনে শরীরের সুগার ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। হজম ক্ষমতা বাড়াতে, শরীরের ওজন কমাতে, মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সজনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এছাড়া সজনেতে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকে। এটি যকৃত ও কিডনী ভাল রাখে। সৈন্দর্য বাড়াতেও ভূমিকা রাখে সজনে। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা রাখতে এবং অকাল বার্ধক্য সমস্যা দূরীকরণেও সজনের ভূমিকা অপরিসীম।