আজ থেকে ১৫ বছর আগে পান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল কৃষকরা। এরপর যতই দিন যাচ্ছে ততই পানের দাম বেড়েই চলছে। সে কারণে ইদানিং পান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার এক শ্রেণির কৃষকরা। উপজেলার মধ্যবিত্ত শ্রেণির কৃষকরা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার নিকট থেকে লোন নিয়ে পানের বরজ করছে। যে সকল পান চাষি বাপ দাদার ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে ভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছিল তারা আজ পান চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে পড়েছে। বেশ কিছুদিন থেকে পানের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে যাওয়ায় পুনরায় পান চাষে ঝুকে পড়েছে কৃষকরা। উপজেলার চন্ডিপুর, বেলকা, শান্তিরাম, কঞ্চিবাড়ি, ছাপড়হাটী, হরিপুর ও তারাপুর ইউনিয়নে পান চাষ বেশি হচ্ছে। কথা হয় কঞ্চিবাড়ী ইউনিয়নের পান চাষি আনোয়ার হোসেনের সাথে। এক সময় তার বাবার পানের বরজ ছিল। পানের দাম না থাকায় পান চাষ বন্ধ করে দেয় তারা। এরপর কৃষি কাজ শুরু করে। হঠাৎ পানের দাম বাড়তে থাকায় বেলাল মিয়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার নিকট থেকে লোন নিয়ে এক বিঘা জমিতে পান চাষ শুরু করে ৬ বছর আগে। শুরুতেই বেশি লাভ করতে না পারলেও গত দুই বছর ধরে খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বছর তার আয় হচ্ছে ৬ লাখ টাকা। বেলাল জানান, গত বছর ৮ মাসে সে পান বিক্রি করেছে ৮ লাখ টাকার। এতে তার খরচ হয়েছে ৩ লাখ টাকা। বর্তমান বাজারে প্রতি বিরা (একশত পান) পান বিক্রি হচ্ছে ১৫০ হতে ২৫০ টাকা দরে। পান চাষাবাদের উপকরণ হিসাবে বাঁশ, কাসিয়া খড়, পাটকাটি, সুতলি, সার ও কীটনাশক প্রয়োজন হয়। উপজেলার পাঁচপীর, মীরগঞ্জ, শোভাগঞ্জ, মজুমদার, ধর্মপুর, ডোমের হাট, বামনডাঙ্গা ও বেলকা বাজারে প্রতি হাট বারের দিন পান বিক্রির আরদ বসে। পৌর কলেজ মোড়ের পানের দোকানদার মমিনুল ইসলাম জানান, এখন স্থানীয় পানের চাহিদা বেশি। এর আগে রাজশাহী, কুষ্ঠিয়া, পাবনা ও যশোরের পান আমাদের এলাকায় আসত। এখন আর আসে না। সে কারণে পান চাষিরা পানের বাজার দর ভাল পাচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান, এই উপজেলার বেশ কিছু এলাকা পান চাষাবাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগি। তিনি মনে করেন পান চাষাবাদ একটি দীর্ঘ মেয়াদি প্রক্রিয়া। এখন পান চাষাবাদে অনেক লাভ।