গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার আলু চাষিরা বিপাকে। বর্তমান বাজারে আলুর দাম কম এবং সংরক্ষণাগারের অভাবে উৎপাদিত আলু কমদামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হওয়ায় কৃষকরা সময়মত বাজারজাত করতে পারছে না আলুসহ অন্যান্য ফসল। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ১৫১ হেক্টর জমিতে গোল আলু এবং ১০০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু চাষাবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। উৎপাদিত আলুর শতকরা ৮০ ভাগ চরাঞ্চলের চাষাবাদ হচ্ছে। সুন্দরগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম জানান, বাজারে প্রতি কেজি আলু গ্রেড অনুয়ায়ী ৮ হতে ১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে হলেন্ডার আলুর চাহিদা নেই বললে চলে। তিনি বলেন চরের আলু বাজারের আসায় আলুর দাম কমে গেছে। যে আলু এখন ১০ টাকা সেই আলু ২ মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ হতে ৬০ টাকায়। বেলকা চরের কৃষক রেজাউল আলম জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছে। প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষাবাদে খরচ হয় ২০ হতে ২৫ হাজার টাকা। আগাম জাতে আলু বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় ৫৫ হতে ৬০ মন এবং নমলা জাতের আলু ৮০ হতে ১০০ মন। প্রতি মন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা দরে। তিনি আরও জানান, আলু সংরক্ষণ করতে পারলে অধিক দাম পাওয়া যেত। কিন্তু উপজেলায় একটি মাত্র হিমাগার থাকায় আলু সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। সে কারণে কম দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া চরের রাস্তাঘাট বিছিন্ন হওয়ায় উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে কষ্ট হচ্ছে। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান, চরে চলতি মৌসুমে প্রচুর আলু চাষাবাদ হয়েছে। ফলনও ভাল হয়েছে। সম্ভাবনাময় চরাঞ্চলের উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষণাগার একান্ত প্রয়োজন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান, পলি জমে থাকার কারণে চরের জমি অনেক উর্বর। যার কারণে যে কোন প্রকার ফসলের ফলন ভাল হয়। তিনি বলেন, চরের কৃষকরা নিজে পরিজন নিয়ে জমিতে কাজ করে। সেই কারণে তারা অনেক লাভবান হয়। চরের জমি আলু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক হিমাগার থাকলে আলু চাষিরা আরও লাভবান হত।