পাবনা-৪ (আটঘরিয়া-ঈশ্বরদী) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস জাতীয় সংসদে প্রথম ভাষণ দিলেন আর এই গুরুত্বপূর্ণ ভাষণের কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও এলাকাবাসী অভিনন্দন জানিয়েছেন।
১লা ফেব্রুয়ারি সকালের অধিবেশনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবে আলোচনার সময় জাতীয় সংসদে তাঁর প্রথম ভাষণে ঈশ্বরদীর বিমান বন্দর, রেলগেটে ফ্লাইওভার নির্মাণ, পাবনা সুগার মিল চালুসহ আটঘরিয়া ও ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন সমস্যার কথা স্পষ্টতা তুলে ধরে সেগুলি দ্রæত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবী জানিয়েছেন।
সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, ইতিহাসের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগষ্টের কালোরাতে ঘাতকের বুলেটের আঘাতে নিহত বেগম ফজিতুলনেসা মুজিব ও শিশুপুত্র রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহীদদের, কারাগারে বন্দি অবস্থায় শহীদ জাতীয় চার নেতা, একাত্তরের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মোৎসর্গকৃত ত্রিশ লাখ শহীদ এবং সম্ভ্রম হারানো দুই লাখ মা-বোনদের আত্মত্যাগ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
মহামান্য রাষ্ট্রপতির ঐতিহাসিক ভাষণে কৃষিবান্ধব সরকার ফসলচাষে উদ্বুদ্ধকরণ ও দূর্যোগে প্রণোদনা এবং কৃষি উপকরণ সরবরাহ ও ভর্তুকি নীতির বিষয়টি উল্লেখ করায় মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং স্বশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি অভিনন্দন জানান, বাংলার আশা ও আকাঙ্খার মূর্ত প্রতীক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে।
মহান জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, পাবনা-৪ আসনে (আটঘরিয়া-ঈশ্বরদী) এলাকার সর্বস্তরের জনগণকে, যারা আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে সংসদে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
পাবনা সুগার মিল জোন এলাকায় ৫ হাজার ২শ একর জমিতে আখ চাষের বিষয় উল্লেখ করে তিনি পাবনা চিনিকল বন্ধ না করে আধুনিকীকরণ, চিনির সাথে রপ্তানীযোগ্য উপজাতদ্রব্য উৎপাদন এবং আখের ছোবড়া দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
এমপি কৃষি প্রসংগে আলেচনায় বলেন, ঈশ্বরদী দেশের ‘ফ্রুট বাস্কেট’। কৃষিতে অবদানের জন্য ঈশ্বরদীর ১৬ জন কৃষক জাতীয়ভাবে বঙ্গবন্ধু পদকে ভূষিত হয়েছেন। এখানকার মাটিতে সোনার ফসল ফলছে। ঈশ্বরদীর কৃষির সমৃদ্ধির ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং কৃষিকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য কয়েকটি বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করার কথাও বলেন। এসময় তিনি ঈশ্বরদীতে মৃত্তিকা পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবী জানিয়ে বলেন, লিচুর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য লিচু গবেষণাগার এবং লিচু প্রসেসিং সেন্টার স্থাপিত হলে লিচু থেকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো বাড়বে।
সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, কর্মচঞ্চল ঈশ্বরদী ইপিজেড, রেলওয়ের বিভাগীয় সদর দপ্তর, সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট, ডাল গবেষনা কেন্দ্রের মতো প্রতিষ্ঠান এবং ছোট-বড়ো সহস্রাধিক শিল্প-কলকারখানা ঈশ্বরদীতে অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন। এসময় তিনি অনেক বিদেশী রূপপুর, ইপিজেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার বিষয় উল্লেখ করেন।
তিনি আটঘোরিয়া দেশের মৎস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত উল্লেখ করে তিনি ফিস কোয়ালিটি কন্ট্রোল সেন্টার এবং ফিস ল্যান্ডিং সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব করেন।
কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সূচকে অনেক এগিয়েছে। আইএমএফ-এর প্রতিবেদনে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশী জিডিপি অর্জন করা শীর্ষ দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় বলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেছেন।
সামাজিক সুরক্ষা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ, বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ ও ১০ টাকা কেজি চাল এবং নগদ অর্থ বিতরণের ব্যবস্থা সরকার গ্রহন করায় করোনাকালে আমার এলাকায় কাউকে একদিনের জন্য না খেয়ে থাকতে হয়নি। করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্ব দরবারে সমুজ্জল করার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়, প্রাজ্ঞ ও দূরদর্শী নেতৃত্ব পৃথিবীতে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
এমপি আরো বলেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ও নির্যাতিত ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মানবতার পরিচয় দিয়েছেন, তা সমগ্র বিশ্বে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। সর্বশেষ ভাসাণচরে আবাসন শিবির বানিয়ে আমাদের নেত্রী বিশ্ব মানবতার ‘বাতিঘর’ হয়ে উঠেছেন। বিশ্বব্যাপী তিনি ‘‘মাদার অব হিউম্যানিটি’’ অর্থাৎ ‘‘মানবতার মা’’ অলঙ্কারে ভূষিত হয়েছেন।’ এই ভূষণ বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ও বাঙ্গালী জাতিকে আজ এক অনন্য উচ্চতার আসনে অলংকিত করেছে।
সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস আইসিটি ক্ষেত্রে অতি অল্প সময়ে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জনের বিষয়ে আলোচনা করে বলেন, এর সফল বাস্তবায়নের রূপকার জাতির পিতার দৌহিত্র এবং আমাদের সংসদ নেত্রীর সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। আইসিটি ক্ষেত্রে সজীব ওয়াজেদ জয় একজন ‘ভিশনারি লিডার’। তারই রোডম্যাপ অনুযায়ী মাত্র ১৩ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়ন হয়েছে। তার নেতৃত্বেই এখন শ্রম নির্ভর অর্থনীতি থেকে প্রযুক্তি নির্ভর অর্থনীতির দিকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে তথা দেশের ডিজিটাল উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও আমাদের গর্ব সজিব ওয়াজেদ জয়ের অবদান অনস্বীকার্য।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই অর্জনে বাঙ্গালী হিসেবে আমাদের বিশ্ব দরবারে গর্বিত করেছে। তাই তিনি মাননীয় স্পীকারের মাধ্যমে আর্ন্তজাতিক নোবেল কমিটির কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নোবেল শান্তি পুরুস্কারের জন্য মনোনীত করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস।
পাবনা-৪ (আটঘরিয়া-ঈশ্বরদী) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস এর জাতীয় সংসদের গুরুত্বপূর্ণ প্রথম এই ভাষণে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও এলাকাবাসী অভিনন্দন জানিয়েছেন।