বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: কৃষি প্রধান সবুজ বাংলার বিশাল ক্যানভাসকে ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো আঁকা হবে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি। নতুন ধরনের এই চিত্রকর্মর মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা হবে কৃষি দরদী বঙ্গবন্ধুকে । ১০০ বিঘা জমির উপর বিশাল সৃষ্টি কর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে শস্যচিত্রটি। এতে ব্যবহার করা হবে দুই ধরনের ধানের চারা। শস্যচিত্রটির আয়তন হবে প্রায় ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট বা ১ লাখ ২০ হাজার বর্গ মিটার। যার দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটার ও প্রস্থ ৩০০ মিটার। যার মাধ্যমে গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করবে বলে প্রত্যাশা আয়োজকদের। শুক্রবার দুপুরে শস্যচিত্রের ক্যানভাসের পাশের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় উদ্বোধনী কার্যক্রম। শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। এসময় শস্য চারা রোপন মধ্যদিয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের আহবায়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল। ওইদিন বিকাল সাড়ে ৩টায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্ত্বরে মুজিব শতবর্ষ পালনে শস্যচিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়াওমী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও আহবায়ক, ‘শস্য চিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’ বাস্তবায়ন জাতীয় পরিষদ ও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম-এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাবিবর রহমান (এমপি), সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এমপি তানভিন শাকিল জয়, ‘শস্য চিত্রে জাতীয় পরিষদ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ কৃষক লীগে সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মজিবর রহমান মজনু, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু। এ সময় প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মহামারী করোনা সহ বিভিন্ন দূর্যোগ মোকাবেলা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দেশ নয়, বিশ্বের কাছে সমাদৃত হয়েছেন। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার খোকা দেশে খাদ্য, শিক্ষা ও বসবাসের নিশ্চয়তা সহ মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন। সারের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১৮জন কৃষককে হত্যা করেছেন। কৃষিবান্ধব বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় এসে সেসব সমস্যা ও সংকট দূর করেছেন। বর্তমান সরকার শিক্ষা ও প্রযুক্তি মানুষের দোড় গোরায় পৌছে দিয়েছেন। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুকে এ শস্যক্ষেতের মাঝে সারা বিশ্বের মানুষ অবিসাংবাদিত নেতা হিসেবে দেখতে পাবেন। প্রধান বক্তা হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন দেখেছেন স্বাধীন ভূ-খন্ডের মানুষ খেয়েপরে বাচবে, এজন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে কৃষিতে উন্নয়নের বিপ্লব আনতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পথ অনুসরণ করেই আমরা পেরিয়ে এসেছি সাফল্যের এই সোনালী পথ, এবং গড়ে উঠছে সোনার বাংলায়। সভাপতির বক্তব্যে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও আহবায়ক, ‘শস্য চিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’ বাস্তবায়ন জাতীয় পরিষদ ও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, শেখ হাসিনা শুধু এদেশের ১৮ কোটি মানুষের নেতা হিসেবে বিশ্বের কাছে সুনামধন্য নেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের ব্যপক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা থাকা স্বত্তেও করোনা দুর্যোগের কারণে আমরা যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করতে পারিনি। তাই কৃষি প্রধান সবুজ বাংলার বিশাল ক্যানভাসকে ব্যবহার করে প্রথম বারের মতো আমরা বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরতে একটি নতুন ধরনের চিত্রকর্ম আঁকতে যাচ্ছি। যা বিশ্ববাসীর সামনে আবারো মাটি ও মানুষের তথা কৃষক দরদী হয়ে উঠবে বঙ্গবন্ধু। এটি হবে জাতির পিতার শত জন্মবার্ষিকীর এক অনন্য উদযাপন। জাতির পিতা সারাজীবন আমাদের মাঝে আছেন, গোটাবিশ্বে সর্বপ্রথম শস্যচিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্ এ ঠাঁই নেবে এবং অর্জিত হবে বাংলাদেশে একটি নতুন ইতিহাস। উল্লেখ্য গিনেজ বুক বিশ্ব রেকর্ড অনুযায়ী ২০১৯ সালে চীনে ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র তৈরী করা হয়েছিল। তাইতো বাংলাদেশ শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরী করতে এবছর প্রায় ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট বা ১ লাখ ২০ হাজার বর্গমিটার এবং ৪০০ মিটার দৈর্ঘ, ৩০০ মিটার প্রস্থ হবে। শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি রোপনে সঠিক ও বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি পূর্নাঙ্গ ফসল আকারে উজ্জীবিত হলে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘‘ শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু” এর ভিডিওসহ প্রয়োজনীয় দলিল গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে এবং ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে বাংলাদেশ নতুন বিশ্বরেকর্ড অর্জন করবে।