করোনা মহামারির কারণে চলতি বছরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা পিছিয়ে ১৮ মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে বই মেলা করার অনুমতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। ফলে বই মেলা নিয়ে মানুষের মাঝে আর কোনও জল্পনা-কল্পনা থাকলো না।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, করোনার কারণে আগামী ১৮ মার্চ বইমেলা হবে। তবে কত দিন বই মেলা চলতে তা নির্ধারণ করা হয়নি। প্রকাশকদের সঙ্গে আলোচনা করে কত দিন মেলা চলবে, সেটি ঠিক করা হবে। আমাদের ইচ্ছা আছে ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত বইমেলার আয়োজন করা। তবে এর মধ্যে যদি কোনও আপত্তি ওঠে, তবে রমজান মাস শুরুর আগের দিন মেলার সমাপনী আয়োজন করব।
এর আগে প্রকাশকদের দাবি থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা (বইমেলা) হয়নি।
অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম আয়োজক বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পক্ষ থেকে গত ৫ জানুয়ারি এক সভায় আবেদন জানানো হয়, ফেব্রুয়ারিতে না পারলেও আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই যেন বইমেলার আয়োজন করা হয়। আগামী ১৮ মার্চ বই মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় আবেদনটি বাস্তবায়ন পেয়েছে।
১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেইটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন মুক্তধারা প্রকাশনীর মালিক চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৭৭ সালে তার সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। পরের বছর মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি।
১৯৮৩ সালে মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা আর করা যায়নি। পরের বছর ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ‘অমর একুশে বইমেলা’র সূচনা হয়।
মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের মাস ফেব্রুয়ারি জুড়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের এই বইমেলা এখন বাঙালির মননের মেলায় পরিণত হয়েছে।