পাবনা-৩ আসনের (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর) সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মকবুল হোসেনের আজ বুধবার ৭২ তম জন্মদিন। ১৯৫০ সালের ২০ জানুয়ারি ভাঙ্গুড়া উপজেলার সরদার পাড়া মহল্লার বিশিষ্ট মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তৎকালীন ভাঙ্গুড়া উপজেলার সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষা অনুরাগী আলহাজ্ব মহসিন আলীর একমাত্র সন্তান তিনি। পিতার কাছ থেকে রাজনৈতিক হাতেখড়ি পেয়ে মকবুল হোসেন দীর্ঘ তিন যুগের বেশি সময় ধরে মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। পাবনা-৩ আসনে একটানা তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি স্থানীয় রাজনীতিতে তিনি ইতিহাস রচিত করেছেন।
জানা যায়, তৎকালীন ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলে ভাঙ্গুড়ার রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তি ছিলেন আলহাজ্ব মহসিন আলী। ভাঙ্গুড়ার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সেসময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন আলহাজ্ব মহসিন আলী। সামাজিক পরিবর্তনের জন্য তিনি ভাঙ্গুড়াতে শিক্ষা বিস্তারে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হন। তার উদ্যোগে ভাঙ্গুড়ার বিশিষ্টজনেরা একত্রিত হয়ে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করে। নারী শিক্ষা বিস্তারে আলহাজ্ব মহসিন আলী ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। এ কারণে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা অধিকারী আলহাজ্ব মহসিন আলীর কাছ থেকেই রাজনীতির হাতেখড়ি অর্জন করেন বর্তমান সংসদ মকবুল হোসেন।
যুবক বয়সে মকবুল হোসেন ব্যবসায় মনোনিবেশ করার কারণে রাজনীতিতে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু আলহাজ্ব মহসিন আলীর অবর্তমানে ভাঙ্গুড়ার রাজনীতি সঠিক পথে এগিয়ে নিতে এলাকাবাসীর দাবির মুখে সন্তানকে রাজনীতির সঙ্গে জড়াতে বাধ্য হন আলহাজ্ব মহসিন আলী। আশির দশকের শুরু থেকেই আলহাজ মকবুল হোসেনের রাজনীতির পথ চলা শুরু হয়। পরে জনদাবির মুখে তিনি ১৯৮৬ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার চার বছরের শাসনামলে পিতার মতো তিনিও রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের কাছে নিজের গ্রহনযোগ্যতার প্রমাণ দেন। এতে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি আবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এভাবে ক্রমেই মকবুল হোসেনের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আশেপাশের উপজেলায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অবশেষে তিনি চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠলে ২০০১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাকে সংসদ সদস্য নির্বাচনে মনোনয়ন দেন। অনিয়মের কারণে তিনি সামান্য ভোটের ব্যবধানে ওই নির্বাচনে পরাজিত হন। তবে পরবর্তী সাত বছরে জনগণের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা তৈরি হওয়ায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে মকবুল হোসেন ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর তিনি ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জনগনের সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি বয়সের ভার এবং শারীরিক অসুস্থ থাকলেও তা উপেক্ষা করে প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক, সামাজিক, মানবিক ও শিক্ষামূলক কর্মকান্ডে জনগণের মাঝে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তিনি তার ১২ বছরের শাসনামলে এই আসনের অসুস্থ ও দরিদ্র মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে রেকর্ড পরিমাণ সহযোগিতা এনে দিয়েছেন। এছাড়া তিনি ভাঙ্গুড়া-নওগাঁ সড়ক নির্মাণ করে অবকাঠামোগত উন্নয়নে পাবনা তিন এলাকার মানুষের হৃদয়ে শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন।
আলহাজ মকবুল হোসেনের পরিবারের প্রতি মানুষের আস্থার কারণেই তার জৈষ্ঠ পুত্র গোলাম হাসনাইন রাসেল উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের কাছে মানবিক ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। পিতার মত গোলাম হাসনাইন রাসেলও রাজনীতিতে নিজের শক্তত অবস্থান তৈরি করার পাশাপাশি মানুষের মনে ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছেন।