শাহজাদপুর প্রতিনিধি ঃ
শাহজাদপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই কমিটির বৈঠক আগামী ৩০ জানুয়ারি। এই বৈঠককে কেন্দ্র করে এক মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে চলছে বির্তক । ওই মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে আদাজল খেয়ে লেগেছেন তারই নিজ গ্রামের এক প্রভাবশালী । ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে জানা যায় উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জনগণের ভোটে পর পর দু’বার নির্বাচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদকে অপ্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ পত্র দিয়েছেন গ্রামের কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি । অভিযোগ পত্রটি প্রাপ্তির কথা জানিয়ে শাহজাদপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো: শামছুজ্জোহা । তিনি আরো জানান জালালপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ সহ বেশ কয়েক জন ব্যক্তি লিখিত ভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেন সেটি আগামী ৩০ জানুয়ারি যাচাই বাছাই কমিটিকে অবহিত করা হবে । সে কমিটি কি সিন্ধান্ত নেবেন তা পরে জানা যাবে । এদিকে এনিয়ে জালালপুর ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের দ্বন্দ এখন প্রকাশ্য দাঁড়িয়েছে । জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও শাহজাদপুর বঙ্গবন্ধু মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বজলুর রশিদের সাথে কথা হলে তিনি জানান জালালপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদের এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও আওয়ামী লীগে দলীয় অবস্থান নিয়ে আমার সাথে দ্বন্দ চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। আমি বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির সহ সভাপতি । আর সুলতান মাহমুদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি । তিনি আরো বলেন আমি যখন একাত্তুরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই সে বছর জানুয়ারী মাসে জালালপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ জন্ম গ্রহণ করেন । তাই উনি আমার ওই সময়ের অবস্থান নিয়ে কিছুই জানেন না । উনি (বর্তমান চেয়ারম্যান ) আমার বিরুদ্ধে যা বলছেন সেটি পুরোটই মিথ্যা বলছেন । বিষয়টি বিস্তারিত জানিয়ে আমি গত ১১ জানুয়ারি সোমবার আমার শাহজাদপুর পৌর এলাকার রুপপুর নিজ বাড়িতে শাহজাদপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের ডেকে আমার বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে প্রমাণ করেছি আমি প্রকৃতই মুক্তিযোদ্ধা । তিনি আরো বলেন আমার বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ কর্তৃক আনিত অভিযোগসমূহ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট । এদিকে গত ৬ ডিসেম্বর বুধবার সকালে শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের মুলকান্দি বাজারের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলন জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি হাজী সুলতান মাহমুদ জানান মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ও গেজেট থেকে বজলুর রশিদকে বাদ দিতে হবে । কারণ বজলুর রশিদ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয় । তিনি আরো বলেন ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ৬ -৭ বছর । তখন দেখেছি বজলুর রশিদের পিতা জয়নাল আবেদীন জালালপুর ইউনিয়নের শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন জয়নাল আবেদীন পাকবাহিনীর ও রাজাকারদের সহযোগিতা করেছেন। জয়নাল রাজাকার হিসেবে এলাকায় পরিচিত। স্বাধীনতাবিরোধীর সাথে একাত্ব হয়ে এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ব্যক্তিদের উপরে নানা অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়েছিলেন তিনি। এ কাজে তার পুত্র বজলুর রশীদ তার বাবাকে সহযোগিতা করেছেন। অথচ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করেও ভূয়া তথ্য ও কাগজপত্র দেখিয়ে বজলুর রশিদ ২০০৪ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট ভুক্ত হন। তার গেজেট নম্বর ১৭৯৪, ক্রমিক নম্বর ১৫৫, সনদ নম্বর ম-৭৬২৩, ভাতা বই নম্বর ৩২৮ বলে জানান। বজলুর রশিদের ভারতে কোন প্রশিক্ষণ নেই এবং এফএফ সনদ নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রামানিক দলিল লাল বই হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান তালিকা মুক্তিবার্তাতেও তার নাম নেই। শাহজাদপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডিপুটি কমান্ডার বিনয় কুমার পাল জানান এ ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য আপাতত: করছি না । তবে ৩০ তারিখে যাচাই বাছাই কমিটি যদি কোন মতামত চায় সেখানেই বলব।