লমনিরহাটে বিদ্যালয়ের কাজ শেষ না হলেও, শতভাগ বিল তুলেছে ঠিকাদার

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা ঠিকাদার মোট
চুক্তি মুল্যের ৯০ শতাংশ টাকা উত্তোলন করলেও দুই বছরে বিদ্যালয়ের ভবন
নিমার্ণ কাজ শেষ করেনি। ওই উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বারোদুনিয়া সরকারী
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নিমার্ণ কাজে ঠিকাদার আব্দুল হামিদ সরকারের
বিরুদ্ধে এ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৬০/৬৫ শতাংশ কাজ করলেও ৯০ শতাংশ কাজের
বিল তুলেছেন ঠিকাদার আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল। দীর্ঘ দিনেও নির্মাণ
কাজ শেষ না হওয়ায় এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
তবে ঠিকাদার আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুলের দাবী মুল সব কাজ শেষ হয়েছে।
কিছু ইটের কাজ বাকি আছে মাত্র। জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল
অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৭৯ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬ শত ৭৪
টাকা চুক্তি মুল্যে ওই বিদ্যালয়ের ভবন নিমার্ণের দায়িত্ব পান বিজয় কুমার
সুর নামে এক ঠিকাদার। তার কাছ থেকে কাজ ক্রয় করেন হাতীবান্ধা উপজেলা
আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল। বিদ্যালয় ভবন নিমার্ণের কাজ দুই বছর আগে
শুরু হলেও তা আজো শেষ হয়নি। নিমার্ণ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের
ইট। ৬০/৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হলেও তৎকালীন এলজিইডি অফিসকে ম্যানেজ করে ৯০
শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন দেখিয়ে ৭১ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকার বিল উত্তোলন করেছেন
হামিদুল। নিমার্ণ কাজ শেষ করতে একাধিক বার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে এলজিইডি
থেকে নোটিশ দিলেও কোনো কাজ হয়নি। দীর্ঘ দিনেও কাজ শেষ না হওয়ায় বিপাকে
পড়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এমন পরিস্থিতিতে
বিদ্যালয় খুললে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হবে শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে
চিন্তিত ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরন্নবী ইসলাম।  প্রধান শিক্ষক
জানান, দীর্ঘ দিন ধরে কি কারণে কাজ বন্ধ না আমি জানি না। ঠিকাদারের
লোকজনের সাথে একাধিকবার কথা হলেও নিমার্ণ কাজ শেষ হচ্ছে না। ওই কাজের মুল
ঠিকাদার বিজয় কুমার সুর এ বিষয়ে ফোনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।  তবে
আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল কাজটি তিনি নিজে করছেন দাবী করে বলেন, মুল সব
কাজ শেষ হয়েছে। কিছু ইটের কাজ বাকি আছে মাত্র। নতুন ইট বের হলে নিমার্ণ
কাজ শেষ করবো।  কাজের তদরকির দায়িত্বে থাকা এলজিইডি’র সহকারী প্রকৌশলী
হাসেদুল ইসলাম বলেন, ৬০/৬৫ শতাংশ নিমার্ণ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারী
প্রতিষ্ঠানকে নিমার্ণ কাজ শেষে করতে চাপ দেয়া হচ্ছে। হাতীবান্ধা উপজেলা
প্রকৌশলী নজির হোসেন বলেন, ওই সময় বরাদ্দ যাতে ফেরত না যায় সেই জন্য কাজ
শেষ করবেন এই প্রতিশ্রুতিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত বিল দেয়া
হয়েছে। ঠিকাদার আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুলের সাথে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে।
নতুন ইট বের হলেই বাকি কাজ করে দিবেন। কাজটি শেষ করতে ঠিকাদারী
প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। যার অনুলিপি স্থানীয় এমপিকেও দেয়া হয়েছে।