শিমুল, দিনাজপুর প্রতিনিধি :
দিনাজপুরে বাংলাদেশ মশলা গবেষনা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিকদের উদ্ভাবিত গ্রীস্মকালিন (বারি পেয়াঁজ-৫) জাতের পেঁয়াজের বাল্ব উতপাদন কলাকৌশলের উপর কৃষক/কৃষাণীদের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দেশে পেয়াঁজের মহামারী ঠেকাতে ও কৃষকদের স্বয়ংসর্ম্পূন্ন করতে মসলা জাতীয় ফসল পেয়াঁজের আবাদ ও উতপাদনে কৃষকদের সহযোগীতায় বিপল্ব ঘটাতে চায় মশলা গবেষনা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিকরা। গতকাল দিনাজপুর সদরের খামারকান্তবাদ গ্রামে অনুষ্ঠিত দেড়শতাধিক কৃষক/কৃষানীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে সম্প্রতি পেয়াজের দূর্যোগ ও উত্তরণের উপায় নিয়ে কৃষকদের স্বর্নিভর হতে উদ্ধুদ্ধ করা হয়।
মসলা গবেষনা কেন্দ্র বিএআরআই শিবগঞ্জ বগুড়ার মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: হামিম রেজা‘র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বারি-৫ এর বাল্ব উতপাদনের মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষনা ইস্টিটিউটর ময়মনসিংহ‘র প্রাক্তন মহাপরিচালক ড.ধীরেশ কুমার গোস্বামী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাল গবেষনা কেন্দ্র বিএআরআই ঈশ্বরদ্বী পাবনার পরিচালক ড.দেবাশীষ সরকার।
বাংলাদেশে মসলা জাতীয় ফসলের গবেষনা জোরদারকরণ প্রকল্প,মসলা গবেষনা কেন্দ্র,শিবগঞ্জ বগুড়া‘র অর্থায়নে ও কৃষি গবেষনা কেন্দ্র দিনাজপুরের সহযোগীতায় মাঠ দিবসের আলোচনা স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষক প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন, মো: খায়রুল ইসলাম। তারা বারি-৫ জাতের ঁেপয়াজ আবাদের সফলতা এবং সম্ভবনা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও কর্মকর্তাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মশলা গবেষনা কেন্দ্র বিএআরআই শিবগঞ্জ বগুড়া কার্য্যালয়ের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: নুর আলম, মুহম্মদ শামসুল হুদা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন,পেঁয়াজের সংকট ও ঘাটতি মোকাবেলায় গ্রীস্মকালিন পেয়াজের জাত উদ্ভাবন করেছেন বিএআরআই‘র বৈজ্ঞানিকরা ইতিমধ্যেই ৬টি জাত উদ্ভাবন করেছেন, এরমধ্যে বারি ২, বারি ৩ ও বারি ৫ জাতের ৩টি গ্রীস্মকালিন এবং বারি-১ বারি-৪ ও বারি-৬ জাতের ৩টি শীতকালিন। সারাদেশে কৃষকদের মাঝে বিএআরআই বৈজ্ঞানিকরা অভাবনীয় সাফল্য এবং ফলন বেশী পাওয়ায় গ্রীস্মকালিন বারি-৫ জাতের আবাদ করতে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করছে।
তারা আরো বলেন, দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ৩৫ লাখ মে:টন সেখানে আবাদ হচ্ছে ২৫-৩০% স্টোরেজ ঘাটতি বাদে ১৮ লাখ মে:টন,এরপরেও দেশে ১০-১১ লাখ মে:টন পেঁয়াজের ঘাটতি থেকেই যায়।
এই ঘাটতি মোকাবেলায় সারাদেশের প্রায় ২ কোটি ৮৭ লাখ বসতবাড়ির মধ্যে ১ কোটি বসতবাড়িতে(প্রত্যেক বাড়িতে নুন্যতম ১ শতক জমির চারভাগের একভাগে) গ্রীস্মকালিন সময়ে ফেব্রুয়ারী,জুন ও সেপ্টেম্বর মাসে নুন্যতম ৩ বার পেঁয়াজ আবাদের লক্ষমাত্রা নেয়া হয়েছে। এই আবাদে সফলতা আনতে পারলে ৬/৭ লাখ মে:টন পেঁয়াজ পাওয়া যাবে এবং মৌসুমের আবাদ মিলিয়ে তখন অতিরিক্ত ফলন ঘরে তোলা সম্ভব হবে। ফলে পেঁয়াজের দূর্যোগ কাটিয়ে স্বর্নিভরতা অর্জন করতে আমরা সক্ষম হবো। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কৃষি গবেষনা কেন্দ্র ( বিএআরআই) দিনাজপুরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবা খানম।