চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুরে অবাধে ভরাট হয়ে দখল হচ্ছে ছোট ছোট খাল, বিল ও জলাশয়। এমনিভাবে সরকারি জিয়া খালটিও ভরাট করে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে চাতাল, বয়লার, মিল ও ইমারত। ভেঙে পড়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ময়লা পানিতে তলিয়ে যায় গুরুদাসপুর পৌর এলাকার রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয় স্থায়ী জলাবদ্ধতার। অথচ এ অনিয়মের ব্যাপারে প্রশাসন নির্বিকার।
আত্রাই ও গুমানী নদী থেকে চাঁচকৈড় পুরানপাড়া ও গাড়িষাপাড়া মহল্লার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সরকারি খালটি ভরাট করে দখল করে নিয়েছে খালের দুই পাড়ের মানুষ। দু-চার বছর পর মনে হবেনা এখানে একটি খাল ছিল। অথচ দক্ষিণ চলনবিলের মানুষের পানির ঘাটতি মেটাতে ১৯৮০ সালের দিকে এই খালটি খনন করা হয়েছিল। সেই খালটি এখন ভূমি দস্যূরা দখল করে নিচ্ছে।
পৌরসভার চাঁচকৈড় হাটবাজার সহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার পানি এ খালটিতে গোড়ানো হতো। অযন্ত অবহেলায় দখল হয়ে যাচ্ছে খালটি। সময়মতো বৃষ্টির পানি গোড়ানোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পুরানপাড়া, মধ্যমপাড়া, বাজারপাড়া, গাড়িষাপাড়াসহ বিভিন্ন মহল্লায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে পৌরবাসী। প্রশাসনের কোনো নজরদারি ও সমন্বয় না থাকায় রাতারাতি ভরাট হয়ে যাচ্ছে জিয়া খাল নামে পরিচিত সরকারি খালটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভূমি ব্যবসায়ী বলেন, তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে। তবুও পুকুর খনন থেমে নেই। এদিকে নদী পয়স্থী জায়গা ও সরকারি জিয়া খাল দখল হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন তৎপর হলে এবং জেল জরিমানার ব্যবস্থা এই নৈরাজ্য বন্ধ হয়ে যেতো।
চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আত্হার হোসেন বলেন, আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে যে যার খেয়ালখুশি মতো খালটিকে গিলে খাচ্ছে। এখনও উদ্যোগ নিলে খালটি রক্ষা করা সম্ভব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, খালটি রক্ষা করতে এসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসিল্যান্ড মো. আবু রাসেল বলেন, নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির মাধ্যমে ইতিমধ্যে দুটি জরিপ করা হয়েছে। এখন সরকারিভাবে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পেলেই খালটি রক্ষার্থে অভিযান পরিচালনা করা হবে।