১৯৮৬ সাল। মেক্সিকোর এস্তাদিও আজেতেকা স্টেডিয়ামে চলছিলো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল যেখানে মুখোমুখি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা ও ইংল্যান্ড। টানটান উত্তেজনার সেই ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর ইংল্যান্ডের জালে বল পাঠিয়ে দেন ম্যারাডোনা। পরবর্তীতে রিপ্লেতে দেখা যায় গোলটি তিনি করেছিলেন হাত দিয়ে। কিন্তু তাতে কী? শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জয়ের হাঁসি ছিলো আর্জেন্টাইনদের মুখে। ‘দ্য হ্যান্ড অব গড’ খ্যাত সেই গোলদাতা, ফিফার প্লেয়ার অব দা সেঞ্চুরির তালিকাভুক্ত এই পায়ের জাদুকরকে আর দেখা যাবে না মাঠে। মাঠের সেই জাদুকর আজ জীবনের শেষ জাদু দেখিয়ে হারিয়ে গেছেন না ফেরার দেশে। লক্ষ কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে বুধবার মারা যান এই কিংবদন্তী ফুটবলার।
দুই সপ্তাহ আগে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছিল তার। হাসপাতাল ছেড়ে ফিরেছিলেন নিজ বাড়িতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিদায় নিতে হলো এই কিংবদন্তী ফুটবল তারকাকে।
বিতর্ক থাকলেও অনেকেই তাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে মনে করেন। ২০০২ সালে ফিফা অনলাইনের ভোটে ‘শতাব্দীর সেরা গোল’ হিসেবে নির্বাচিত হয় ১৯৮৬ সালের কোয়ার্টার ফাইনালে তার করা দ্বিতীয় গোলটি। যেখানে ইংল্যান্ডের ৫ জন ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে ধোঁকা দিয়ে গোলটি করেন তিনি। তার এই গোলটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এস্তাদিও আজেতেকা সামনে স্থাপন করা হয় আর্জেন্টিনাকে দুইবার বিশ্বকাপ এনে দেয়া ম্যারাডোনার ‘গোল অব দ্যা সেঞ্চুরি’র প্রতিমূর্তি।
ক্যারিয়ার শেষভাগে অবশ্য বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ফুটবলার। যার শুরু নিজ ক্লাবের ট্রেনিংয়ে দেরি করে আসা ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ৭০ হাজার ডলার জরিমানার মধ্য দিয়ে। এরপর একে একে মাদকাসক্তিসহ আরো বেশ কিছু অভিযোগ আসতে থাকে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও বিতর্কিত মন্তব্য, নিয়ম বহির্ভূত আচরণ এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বারবার আলোচনায় উঠে এসেছেন এই শতাব্দী সেরা ফুটবলার। আলোচনা-সমালোচনা যাই হউক না কেনো, ভক্তদের হৃদয় কুঠরে চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবেন দিয়েগো ম্যারাডোনা।