। আমিরুল ইসলাম রাঙা। ২০ নভেম্বর ২০২০ শুক্রবার। খুব সকালে পর পর দুইটা ফোন পেলাম। প্রথম ফোন এলো ঢাকা থেকে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রাজ্জাকের এবং পরের ফোন আল মাহমুদ নিটু’র। শীতের সকাল চারিদিকে কুয়াশাছন্ন – অনেকটা অন্ধকার। এরমধ্যে এলো দুঃসংবাদ। ফজলুল হক মন্টু কিছুক্ষণ আগে মৃত্যুবরন করেছেন। বিষাদে মনটা কালো হয়ে গেলো। ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রাজ্জাক তখন ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে। ফজলুল হক মন্টু তাঁর সহপাঠী এবং অকৃত্রিম বন্ধু। আমাদের এক ব্যাচ সিনিয়র। ফজলুল হক মন্টু আমাদের নেতা। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারী থেকে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমরা ছিলাম ফজলুল হক মন্টু’র অনুগত সার্বক্ষনিক কর্মী। ফজলুল হক মন্টু’র কাছে বেশি ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম তাঁর সহপাঠী বন্ধু আব্দুল হাই তপন এবং ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রাজ্জাকদের কারনে। আব্দুল হাই তপন তখন পাবনা পলিটিক্যাল ইন্সটিটিউট ছাত্র সংসদের জিএস। আব্দুর রাজ্জাক তখন পলিটেকনিক্যালের ছাত্র। আমি এবং নিটু ( বর্তমান জেলা জাসদের সহ সভাপতি) জুনিয়র হলেও রাজ্জাক সহ তাঁর অনেক সহপাঠীকে তুমি করেই বলতাম। চলাফেরা সব একসাথে ছিল। ফজলুল হক মন্টু আমাদের সবার নেতা ছিলেন । আর উনার একমাত্র নেতা ছিলেন রফিকুল ইসলাম বকুল। স্বাধীনতার পর ফজলুল হক মন্টু পাবনা জেলা শ্রমিক লীগ পূনর্গঠন করেন। রফিকুল ইসলাম বকুল পুনর্গঠিত শ্রমিক লীগের সভাপতি, ফজলুল হক মন্টু ছিলেন সিনিয়র সহ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আব্দুল গফুর। তখন পরিত্যক্ত বানী সিনেমা হল পরিচালনা করতেন পাবনা জেলা শ্রমিক লীগ। বানী সিনেমা হলের মালিক অবাঙালী মোঃ ইউনূছ আলীর বাড়ী ছিল শ্রমিক লীগের অফিস। আওয়ামী লীগের অফিস ছিল আব্দুল হামিদ রোডে বর্তমান সোনালী ব্যাংকের উত্তর পাশের লতিফ হাজীর বিল্ডিং। নীচে বিখ্যাত পানের দোকান শান্তি স্টোর আর দোতালায় ৪/৫ কক্ষ বিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগ অফিস। তখন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব বগা মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক ওয়াজি উদ্দিন খান। পুনর্গঠিত পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছিলেন শাহাবুদ্দিন চুপ্পু এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক মন্টু। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে রফিকুল ইসলাম বকুল এবং ফজলুল হক মন্টু’র নির্দেশনা এবং সহযোগিতায় পাবনা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক ইছামতি। পত্রিকার সম্পাদক করা হলো আমাকে এবং প্রকাশক হলেন ফজলুল হক মন্টুর সহপাঠী পলিটেকনিক্যালের জিএস আব্দুল হাই তপনকে। ফজলুল হক মন্টুকে নিয়ে আমার ধারণা খুব একটা ছিলো না। স্বাধীনতার আগে উনাকে দেখার সুযোগ হলেও উল্লেখ করার মত কিছু জানা ছিলো না। উনাকে জানার সুযোগ পেলাম স্বাধীনতার পর। উনাকে প্রথম যখন কাছে থেকে দেখলাম। যখন উনার সাথে মেলামেশার সুযোগ পেলাম। তখন আমার কাছে মনে হয়েছে উনি ছিলেন খুব উচ্চ মাপের নেতা। অসাধারণ জ্ঞান, পাণ্ডিত্য, অনলবর্ষি বক্তা ছিলেন। সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল সবার উপরে। তাঁর এক সহপাঠীর কথা উল্লেখ করে উনার সম্পর্কে কিছু কথা লেখতে চাই। ফজলুল হক মন্টু খুব ছোটবেলা থেকে ছিলেন, ত্যাগী এবং সাহসী। ছিল সততা এবং একনিষ্ঠতা। রাজনৈতিক নেতাসুলভ গুণাবলী ছিল শিশুকাল থেকে। পাবনা জিলা স্কুলের সাথে লাগানো বাড়ী। ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। পাবনার বর্তমান টেলিফোন একচেঞ্জ ভবনের সামনে হেরাজ ম্যানসনের তিনটি বাড়ী। হেরাজ বিশ্বাস হলেন ফজলুল হক মন্টুর চাচা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোটভাই শেখ নাসের সাহেবের শ্বশুর। তৎকালীন সময়ে পাবনার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এবং খুলনা শহরে প্রতিষ্ঠিত ও স্থায়ী হন। পাবনা শহরে একাধিক বাড়ী এবং শহরের উপকন্ঠে অনেক সম্পদের মালিক ছিলেন। পাবনার পুরাতন ব্রীজের ঢালুতে বর্তমান তথ্য অফিস সেটাও হেরাজ বিশ্বাসের ভবন। স্মৃতিবিজড়িত এই সব বাড়ীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার এসে থেকেছেন। পাবনা জিলা স্কুলের উত্তর পাশের হেরাজ ম্যানসনের তিনটি বাড়ীর মাঝখানের বাড়ীটি হলো ফজলুল হক মন্টুদের । এই বাড়ীতেই ফজলুল হক মন্টু বড় হয়েছেন। ফজলুল হক মন্টুর পিতা রস্তম আলী বিশ্বাস এবং মাতা ফাতেমা বিশ্বাস। পরিবারের ৫ ভাইয়ের মধ্যে ফজলুল হক মন্টু তৃতীয়। বড়ভাই প্রয়াত তারা বিশ্বাস এবং মেজভাই তৎকালীন দেশখ্যাত ক্রীড়াবীদ মান্না বিশ্বাস। চাচাতো ভাই ইদ্রিস আলী বিশ্বাস এবং ইমদাদ হোসেন ভুলু বিশ্বাস। তাঁদের বাড়ীটি হলো মধ্যে শহরের গোপালপুর মহল্লায়। এই পাড়াতেই বাড়ী পাবনার মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক এমপি রফিকুল ইসলাম বকুলের। যিনি পাবনায় মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রথম পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। এই পাড়াতেই বাড়ী মুক্তিযুদ্ধের আরেক কিংবদন্তি যুদ্ধকালীন মুজিববাহিনী প্রধান ও সাবেক এমপি মোঃ ইকবাল সহ বীর মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমদাদ হোসেন ভুলু বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মাহমুদ, মোঃ ইসমত, মোঃ ইলিয়াস, আবুল কালাম আজাদ সহ এক ডজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ী। এই বিখ্যাত সব মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ফজলুল হক মন্টু কতবড় এবং বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন সেই বর্ননা করতে চাই। তাঁর এক সহপাঠীর বর্ননা থেকে তাঁর সম্পর্কে একটি কথা উল্লেখ করতে চাই। সেটা ছিল ১৯৬৬ সালের দিকে একটি ঘটনা। ফজলুল হক মন্টু তখন পাবনা জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন শ্রী সত্যেন পাল। স্কুল শেষে বিকাল বেলা পাড়ার ছেলেরা খেলাধুলা করার সময় স্কুলের কমনরুমে হৈচৈ করে এবং সেখানে ক্যারাম বোর্ড সহ বেশকিছু উপকরণ ভাঙ্গচুর করে। সে সময়ে স্কুলের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষক সহ বেশকিছু শিক্ষক ছিলেন। ছেলেদের হৈচৈ করার সময় প্রধান শিক্ষক সাহেব জোড়া বেত হাতে কমনরুমের দিকে এগিয়ে যান। ক্ষিপ্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করেন ক্যারামবোর্ড সহ এসব উপকরণ কে ভেঙ্গেছে। সবাই নিশ্চুপ কারো কোন কথা নাই। সবাই যখন নীরব তখন ফজলুল হক মন্টু বলেন আমি ভেঙ্গেছি। রাগান্বিত প্রধান শিক্ষক থমকে গেলেন। এরপর মাথা নীচু করে প্রধান শিক্ষক সত্যেন পাল স্থান ত্যাগ করলেন। পরেরদিন স্কুলের এ্যাসেম্বেলীতে প্রধান শিক্ষক ছাত্রদের উদ্দেশ্য নীতিবাচক বক্তব্য শেষে লাইনে দাঁড়ানো ফজলুল হক মন্টুকে সামনে নিয়ে এসে তাঁর সাহসী এবং সত্যিবাদী ভূমিকার কারণে প্রসংশা করে মাথায় হাত দিয়ে আর্শিবাদ করে বলেছিলেন, ফজলুল হক মন্টু একদিন অনেক বড় মানুষ হবে দেশের সবাই তাঁকে চিনবে। সত্যি ৫৩ বছর আগে প্রধান শিক্ষক সত্যেন পাল স্যারের সেই কথার প্রতিফলন ঘটেছে। ফজলুল হক মন্টু এদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সুপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন। ফজলুল হক মন্টু’র মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের অনেক ঘটনা আমার বিভিন্ন লেখায় উল্লেখ করা আছে। আজ তাঁর সম্পর্কে বলবো মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন অসীম সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা। হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে সাহসী হিসেবে যদি ক্রম অনুযায়ী সাজাতে বলা হয়, তাহলে আমার অনুসন্ধান এবং গবেষণা অনুযায়ী ফজলুল হক মন্টুকে এক অথবা দুইয়ে তাঁর নাম বসাতে চাই। কেন বসাতে চাই সেই বর্ননা আমি সংক্ষিপ্ত আকারে বলতে চাই। উনি ১৯৭১ সালের ২৮/২৯ মার্চ পাবনায় প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধের অন্যতম প্রধান যোদ্ধা ছিলেন। নগরবাড়ী ঘাটে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিরোধ যুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। তিনি ভারতের দেরাদূনে মুজিববাহিনীর প্রথম ব্যাচে প্রশিক্ষন গ্রহন করে প্রথম অগ্রগামী দলের সাথে পাবনায় প্রবেশ করেন। প্রথমে সুজানগর থানা এলাকায় এবং পরে সদর থানা এলাকায় ছোট বড় অসংখ্য অপারেশনে অংশ নেন। পাবনা সদর থানার মুজিববাহিনীর কমান্ডার রিদ্দিক পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার পর ফজলুল হক মন্টু কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। পাবনায় মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৭ নভেম্বর শানির দিয়াড়ে সংগঠিত সবচেয়ে বড় যুদ্ধটিতে সম্মুখে থেকে নেতৃত্ব দেন। এছাড়া গোহালবাড়ী, চর রামচন্দ্রপুর ও টিকরী সহ অনেকগুলি যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। তাঁর সাহসী ভুমিকার কথা সহযোদ্ধারা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মন্টু’র রাজনৈতিক জীবন নিয়ে সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করতে চাই। স্বাধীনতার পর পাবনায় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক অঙ্গনে গ্রুপিং এর শিকার হন। ১৯৭৩ এর প্রথমদিকে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওয়াজি উদ্দিন খান সহ ১১ জন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৭৪ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল, ফজলুল হক মন্টু, মাহতাব উদ্দিন নিশু, বিজয় ভূষণ রায়, হাবিবুর রহমান হাবিব, রেজা, মোহন, আজিজুল হক ( এডভোকেট) সহ অনেক ত্যাগী নেতা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জেলে যেতে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মন্টুকে আবার জেলে যেতে হয়। ১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগ পূনর্গঠিত হলে রফিকুল ইসলাম বকুল পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হন এবং বহিস্কৃত নেতা ওয়াজি উদ্দিন খান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মন্টু জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ ভেঙ্গে গেলে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিকদল – বাকশাল গঠন হয়। সেই সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মন্টু বাকশালে যোগ দেন। পরবর্তীতে কয়েক বছর পর বাকশাল বিলুপ্ত করে আওয়ামী লীগে একিভূত হলে ফজলুল হক মন্টু সহ বাকশাল গঠনকারীরা মুল নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়ে। বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনের অন্যতম পুরাধা ফজলুল হক মন্টু দীর্ঘদিন জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৯ সালে নভেম্বর মাসে সভাপতি হিসেবে মুল নেতৃত্ব ফিরে পান। বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মন্টু আওয়ামী লীগের মূল সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব ছাড়াও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া আইটিইউসি-বিসি এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি ঢাকাস্থ পাবনা সমিতির সভাপতি এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন পরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে ঈশ্বরদীতে উপনির্বাচনের প্রচারনায় এসেছিলেন। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য পাবনায় এসেছিলেন। পাবনায় এসে তাঁর অনেক আপনজনকে বলেছিলেন, আগামী জানুয়ারী মাসে পাবনায় তাঁর পৈত্রিক ভিটায় বাড়ী করবেন। অন্তিম ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেছিলেন শেষ জীবনে তিনি পাবনায় বাস করবেন। নির্মম ও বেদনাদায়ক ঘটনা হলো মাত্র দুইমাস আগে বলে যাওয়া অন্তিম ইচ্ছা আর বাস্তবায়ন হলো না। গত ২০ নভেম্বর ভোর সাড়ে ৪ টায় ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মাঝ থেকে চিরবিদায় নেন। ঐ একইদিন জুম্মার নামাজের পর বায়তুল মোকারম জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবি স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্সে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি ১৯৫২ সালে পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে পাবনা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর পাবনা বুলবুল কলেজ থেকে আইএ ও বিএ পাশ করেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী এবং ২ সন্তান সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে যান। তাঁর স্ত্রী হালিমা খাতুন ঢাকা পিজি হাসপাতালের সিনিয়র মেট্রোন। তাঁর ১ ছেলে ১ মেয়ে। ছেলে ফয়সাল বিশ্বাস এবং মেয়ে ফারহানা হক টুম্পা। তারা দুইজনই ব্যাংকে চাকুরী করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মন্টুর অকাল মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও শ্রমিক সংগঠনসমুহ শোক প্রকাশ করেন। ক্ষণজন্মা এই বীর তাঁর জীবনকালের বেশী সময় এদেশের মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। হে বীর তোমার চিরবিদায়ে অভিবাদন এবং গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করছি। ( সমাপ্ত) লেখক পরিচিতি -আমিরুল ইসলাম রাঙা রাধানগর মজুমদার পাড়া পাবনা।২২ নভেম্বর ২০২০