লাউয়াছড়ায় বন্যপ্রাণীর জন্য বাড়ছে হুমকি

স্বল্প এই জনবল দিয়ে ১২৫০ হেক্টরের লাউয়াছড়া বিশাল বন রক্ষা করা খুবই কঠিন।” বিষয়টি নিশ্চিত করলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রাকৃতি সংরণ বিভাগের লাউয়াছড়া বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের ১২৫০ হেক্টরের লাউয়াছড়াকে ১৯৯৬ সনে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। জাতীয় এই উদ্যানটিতে বিশ্বের বিলুপ্ত প্রাায় উল্লুকসহ বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ও জীববৈচিত্রের সমৃদ্ধ। তবে এই বনের টিলা থেকে রাতের আঁধারে গাছ চুরি অব্যাহত আছে। এতে বন্যপ্রাণীর জন্য বাড়ছে হুমকি। জানা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বাঘমারা বনক্যাম্প সংলগ্ন মন্ত্রির টিলা থেকে অতিসম্প্রতি মেহগনি ও আকাশি প্রজাতির ছয়টি গাছ চুরি হয়েছে। বাঘমারা ক্যাম্পের সম্মুখে ও মুজিবের উঠনি টিলার কিছু অংশে গত আগস্ট মাসের শেষে কেটে নেয়া চারটি গাছের গোড়া পরিত্যক্ত অবস্থায়া পাওয়া যায়। রেলপথ, সড়কপথ ও বিদ্যুৎ লাইনের ঝুঁকির মধ্যে থাকা লাউয়াছড়া উদ্যানের বন্যপ্রাাণী ও জীববৈচিত্রের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নানা সময়ে সড়কপথ, রেলপথ ও বৈদ্যুতিক তারে পৃষ্ট হয়ে বন্যপ্রাণী মারা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়। তার উপর গাছ চুরি বনের মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে। তবে স্বল্প জনবলের কারণে বনের বিশাল এলাকা দেখভাল করা কঠিন হয়ে পড়ছে বলে বন্যপ্রাণী বিভাগ দাবি করছে। উদ্যানের লাউয়াছড়া, কালাছড়া ও চাউতলী তিনটি বনবিটের মধ্যে বিট কর্মকর্তাসহ আছেন মাত্র ১২ জন। এদের সাথে দেখাশুনায় জাতীয় উদ্যান কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটির লোকজন থাকলেও বর্তমানে তাদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এসব কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটির কিছু অসাধু লোকও গাছ চুরির সাথে সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দু’একদিন পরপরই গভীর রাতে কেটে নেয়া হয় গাছ। কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটির কিছু সদস্যসহ স্থানীয় পর্যায়েও কিছু লোক জড়িত আছেন। মূল্যবান গাছ গাছালি চুরি হওয়ায় বনের গভীরতা হ্রাস ও ফাঁকা হচ্ছে টিলাভূমি। কমে যা”েছ বন্যপ্রাণীর খাদ্যের উৎস। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘ দিন ধরে রাতে বনের ভেতর থেকে বৃহদাকার গাছ গাছা কেটে পাচার করছে। কেটে নেয়া এসব গাছের খণ্ডাংশ পিকআপ ও ঠেলাগাড়িযোগে দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়। ফলে হুমকির মুখে লাউয়াছড়া উদ্যানের জীববৈচিত্র।