ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
ঈশ্বরদীতে দুই নারী মা-মেয়ে ও ছেলেকে মারধর এবং সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের পিস্তল উঁচিয়ে হুমকির ঘটনার ৪ দিনেও ঈশ্বরদী থানায় মামলা রেকর্ড হয়নি। হুমকি প্রদানকারী এম.এন ইসলামের পক্ষ অবলম্বন করে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে ওসির অসৌজন্যমূলক আচরনের ঘটনারও সুরাহা হয়নি। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাসের নেতৃত্বে বুধবার রাতে ঈশ্বরদী থানায় পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা, নির্যাতিত পরিবারের সদস্য, আহত নারী. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির, ওসি সেখ নাসীর উদ্দীনসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠক বসলেও কোন সমঝোতা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলন আহবানকারী অসহায় বিধবা নারী সাহিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে সোমবার সকাল ৮টার দিকে দরজায় ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করে ঘুম থেকে ডেকে তুলে আচমকা তাকে এবং তার ছেলে-মেয়েদের বেধড়ক ভাবে পিটিয়ে আহত করেন এমএন ইসলাম এর ছেলে প্রিতমসহ ভাড়া করা কয়েকজন সন্ত্রাসী। এসময় এম এন ইসলামের পক্ষে বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন ছিল বলে তিনি জানান। একপর্যায়ে তাদের ঘরে অবরুদ্ধ করে ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করতে থাকলে, পুলিশ এসে উল্টো হামলাকারিদের পক্ষ অবলম্বন করেছে বলে অভিযোগ করেন।
এসব ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়িতেই সংবাদ সম্মেলন করার আয়োজন করেছিলেন তিনি। সাংবাদিকরা যথা সময়ে সেখানে উপস্থিত হলে ওই বাড়ির জনৈক ব্যক্তি নুরুল ইললাম ওরফে এম এন ইসলাম বাড়ির প্রধান দরজায় সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধাগ্রস্থ করে এবং প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বপন কুমার কুন্ডু ও সিনিয়র সাংবাদিক এম এ কাদেরকে ধাক্কা মেরে পিস্তল উঁচিয়ে বলে, এই মুহুর্তে আপনারা না গেলে গুলি করে মেরে ফেলবো। এই অবস্থায় ঈশ্বরদী থানার ওসিকে ফোন করে সহযোগিতা চাইলে তিনি ঘটনাস্থলে এসে উল্টো এমএন ইসলামের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বের হয়ে যেতে বলেন।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রেসক্লাবে তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ সভায় এম.এন ইসলাম নামে কথিত অস্ত্রধারীর অস্ত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার ও তাকে গ্রেপ্তার এবং ঈশ্বরদী থানার ওসি সেখ নাসীর উদ্দীনের অসৌজন্যমূলক আচরনের প্রতিবাদে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাকে ঈশ্বরদী থেকে প্রত্যাহারের দাবী জানানোর আল্টিমেটাম এখনো চলমান রয়েছে। এঘটনায় পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ, ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাব আটঘোরিয়া প্রেসক্লাব, ফরিদপুর প্রেসক্লাব ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেছেন ।
স্থানীয় এমপি মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস সমাধানের দায়িত্ব নিয়েছেন, সম্মানজনক সমাধান না হলে সাংবাদিকরা তাদের অবস্থানেই থাকবেন।
বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে ঈশ্বরদী থানার ওসি সেখ নাসীর উদ্দীন বলেন, ঘটনাটি মিমাংসা করার জন্য স্থানীয় এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস দায়িত্ব নিয়েছেন, থানায় অনুষ্ঠিত বুধবার রাতের বৈঠকে কোন মিমাংসা হয়নি, এবিষয়ে দুটি অভিযোগ ঈশ্বরদী থানায় জমা রয়েছে। কিন্তু কোন অভিযোগই মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) ফিরোজ কবীর বলেন, ঘটনা মিমাংসার জন্য রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মহোদয়ের নির্দেশে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে, তদন্ত রিপোর্ট জমার পর আশা করছি একটা সুরাহা হবে।