নির্মলেন্দু সরকার বাবুল
নেত্রকোণার দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ও বেরিবাঁধ না থাকায় আতংকে দিন পার করছে উপজেলার কুল্লগড়া ইউনিয়নের বড়ইকান্দি, ভূলিপাড়া, কামারখালী, রানীখ, বিজয়পুর সহ প্রায় ৮ গ্রামের মানুষ। ইতোমধ্যে নদীর ভাঙ্গনে বিলিন হতে চলেছে এই এলাকার নানা স্থাপনা।
নতুন করে তৃতীয় ধাপে বন্যা হওয়ায় সোমেশ্বরী নদীর হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ, মন্দিরসহ, বিদ্যালয়, ঐহিত্যবাহী রানীখং ধর্মপল্লী। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ওই এলাকার জনগন ৩দিন ধরে নিজ অর্থায়নে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন রোধে যুদ্ধ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ৩য় বারের মতো সোমেশ্বরী নদীতে ঢল আসায় এলাকার নিম্নএলাকা গুলো প্লাবিত হয়ে নতুন করে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় অনেকেই অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। নদী গর্ভে বিলীন হতে থাকে বসতবাড়ি সহ নানা স্থাপনা। ভাঙ্গন রোধে ২০১০ সালে ডাকুমারা এলাকার কিছু অংশে স্থায়ী বেরিবাঁধ নির্মাণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় ছিলো অনেক কম।
বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা রংচি রেমা বালুর বস্তা ফেলার বিষয়ে বলেন, আমার বলার ভাষা নাই প্রশাসনের এই বিমাতা সুলভ আচরন দেখে। আমরা এ দেশের নাগরিক কিনা, ঘৃনা হচ্ছে নিজের প্রতি। আমরা নিরুপায় হয়ে হোস্টেলের টাকা, কেউ বা টিফিনের টাকা থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আজকে ৪শত বালুর বন্তা ফেলেছি। প্রশাসনের কাছে নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক জানান, নদীর দুই পাড়ে স্থায়ী বেরিবাঁধ নির্মানের দাবীতে বেশ কয়েকবার মানববন্ধন করেছি, প্রশাসনের উর্দ্ধতন মহল থেকে সরেজমিনে তদন্তও করে গেছেন বেশ কয়েকবার, এখন পর্যন্ত কোন স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। নদীতে ৩য় বারের মতো পানি হওয়ায় এবং নৌকায় বাংলা ড্রেজার বসিয়ে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে নদীর দুই পাড়ে তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনা জেলার উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, অল্প দিনের ব্যবধানে অত্র এলাকায় পর পর বন্যা হওয়ায় পানির চাপে বেশ কিছু এলাকা ভেঙে গেছে। ইতোমধ্যে অত্র এলাকায় স্থায়ীবাঁধ নির্মানের জন্য প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম বলেন, সোমেশ্বরী নদীর ভাঙন ঠেকাতে ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক সার সহ পানি উন্নয়ন রোর্ডের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ নিয়ে স্থানীয় বাঁধ নির্মানের বড় প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বৃষ্টিপাত কমলেই বাঁধ নির্মান কাজ শুরু হবে।