জামায়াত সভাপতির ছেলে থানা ছাত্রলীগ সভাপতি প্রার্থী ! বিস্মিত এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাবেক ২ নং ওয়ার্ডের জামায়াতে ইসলামীর সভাপতির ছেলে এবার থানা ছাত্রলীগের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন। ছাত্রলীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ায় জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম ওরফে নুর মোহাম্মাদের ছেলে তাওহীদুর রহমান বাচ্চু সলঙ্গা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় বিস্মিত হয়েছেন এলাকাবাসী। চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সিরাজগঞ্জ-৩ – সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও সলঙ্গা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবার তাওহীদুর রহমান বাচ্চুর বাবা জামায়াতের সভাপতি ছিল বলে সলঙ্গা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আল আমিন সরকার সহ একাংশ অভিযোগ দিয়েছেন।

ছাত্রলীগের একাধিক নেতা কর্মী জানিয়েছেন ,তাওহীদুর রহমান বাচ্চু সলঙ্গা থানা ছাত্রীলীগের সহ-সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাগিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আরও জানান তাওহীদুর রহমান বাচ্চু ছাত্রদলের সক্রিয় সদস্য ছিল। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সে বিভিন্ন জনসভায় আওয়ামীলীগ বিরোধী বক্তব্য ও শ্লোগান দিত। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও বাচ্চুকে কোন দিন মিছিল মিটিং এ পাওয়া যায়নি। সলঙ্গা থানা ছাত্রলীগের সম্মেলনের আগে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। সীমিত সময়ের মধ্যে থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ বাগিয়ে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা হওয়ায় তাকে ছাত্রলীগের কমিটিতে নাম দেখা যায়। থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ বাগিয়ে নেওয়ার পর পরই রাতারাতি কলাগাছ ফুলে তালগাছ হয়ে যায় এই বাচ্চু। বাচ্চু ছাত্রদলের সদস্য ছিল বিষয়টি তখন প্রকাশ পেলেও কর্ণপাত করেনি নেতা কর্মীরা। আরো অভিযোগ করে বলেন, বাচ্চুর নানা থানার ভট্টমাঝুড়িয়া গ্রামের মৃত ফজলার রহমান এক জন রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্য ছিল। তার মামারা বর্তমান জামায়াতের রাজনীতির সাথে জরিত। তার খালাত ভাই মেহেদী হাসান রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছে। তার নামে সলঙ্গা থানায় একাধিক নাশকতা মামলা রয়েছে।

সাম্প্রতিক তাওহীদুর বাচ্চু থানা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থীতা ঘোষনা করলে তার বাবা নুর মোহাম্মাদ জামায়াতের সভাপতি ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

বাচ্চুর মত ছাত্রদলের এক জন কর্মী যদি অনৈতিক ভাবে নেতা কর্মীদের কাছ থেকে থানা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ বাগিয়ে নিলে থানার প্রতিটি আওয়ামী পরিবারের মাঝে আত্মবিরোধ ও অশান্তির সৃষ্টি হবে। আর প্রকৃত আওয়ামীলীগের ত্যাগি নেতা কর্মীরা বঞ্চিত হবে পদ পদবী থেকে। থানা ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতা কর্মীদের দাবি থানা ছাত্রলীগে যেন কোন জামায়াত বিএনপি পরিবারের সদস্য পদ-পদবী না পায়। জামায়াত বিএনপি পরিবারের কোন সদস্য যদি থানা ছাত্রলীগের পদ পায় তা হলে কঠোর আন্দলনের হুশিয়ারি দেন নেতাকর্মীরা।

সলঙ্গা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী তাওহীদুর রহমান বাচ্চু তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সামনে থানা ছাত্রলীগের সম্মেলন আমি সভাপতি পদে পদপ্রার্থী একটি কুচক্রি মহল আমার ও আমার পরিবারের মান ক্ষুন্ন করার জন্য উঠে পরেছে। আমার পরিবার জামায়াত বিএনপির রাজনীতির সাথে কোন দিন জরিত ছিল না। এক প্রশ্নের উত্তরে বলে, আমার বাবার নামে যে কমিটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে এটা তারা নিজেরা তৈরী করেছে।

সলঙ্গা থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিয়াদুল কবির হান্নান বলেন, বাচ্চু আমার ইউনিয়নের ছেলে আমি যখন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম বাচ্চুকে কোন মিটিং মিছিল আন্দলন সংগ্রামে পাইনি। তার পরিবার জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। বাচ্চু নিজেও ছাত্রদলের সক্রিয় সদস্য ছিল।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ জানান, বাচ্চু জামায়াত পরিবাররে সন্তান তার নানা এক জন রাজাকার ছিল। তার বাবা নুর মোহাম্মাদ ইউনিয়নের সাবেক ২ নং ওয়ার্ড জামায়াতের আমির ছিল। জামায়াত পরিবারের সন্তান যদি ছাত্রলীগের নেতা হয় তা হলে দলের অপূরনীয় ক্ষতি হবে ।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব মোক্তার হোসেন মল্লিক জানান, বাচ্চু বর্তমান ছাত্রলীগ করে। পূর্বে বাচ্চু ও তার পরিবার কোন দলের সদস্য ছিল আমার জানা নেই।

সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল্লাহ- বিন আহমেদ বলেন, বাচ্চুর বিষয়ে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ট তদন্ত করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টার্চায্য নির্দেশ বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কোন জামায়াত – বিএনপি পরিবারের লোকের স্থান হবে না ।

সলঙ্গা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব রায়হান গফুরের সাথে কথা হলে তিনি জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগের সাথে বাচ্চুর বাবার জামায়াতের সভাপতি ছিল তার একটি কপিও পেয়েছি। তদন্ত করে যদি প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবেও বলে জানান।