বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
বড়াইগ্রামে দোকানপাট নির্মাণ করে রাস্তার জায়গা দখল করে রেখেছেন প্রভাবশালীরা। অপরদিকে, মানুষের চলাচলে সাময়িকভাবে ব্যবহৃত ব্যাক্তিমালিকানা জমিতেও বাঁশের বেড়া দিয়ে সেখানে দোকান ঘর তুলছেন জমির মালিক। এতে রাস্তা পাকাকরণ কাজ স্থগিত হয়ে যাওয়াসহ আশেপাশের পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের পথ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এসব মানুষেরা বাজার-ঘাটসহ কোন খানে যেতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তাই অবিলম্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে চলাচলের পথ উন্মুক্ত করার দাবী জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।
জানা যায়, উপজেলার জোনাইল-রাজাপুর সড়কের কুশমাইল নাসির মোড় থেকে সংগ্রামপুরগামী একটি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। কুশমাইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও আমজাদ হোসেন এ রাস্তার শুরুতে নাসির মোড়ে কুশমাইল মৌজার ১৩৪ হালদাগে সাতটি দোকান ঘর তুলে দখল করে রেখেছেন। এ কারণে স্থানীয় লোকজন পাশের ব্যাক্তি মালিকানা জমি দিয়ে চলাচল করতো। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের অর্থায়নে রাস্তাটি পাকা করার কাজ শুরু হয়। এ সময় ঠিকাদার ভুল:বশত ব্যাক্তিমালিকানা জমিতে সাময়িকভাবে চলাচলের রাস্তায় বক্স কাটেন। কিন্তু জমির মালিক আব্দুল মজিদ আকন্দ তার জমি দিয়ে রাস্তা করতে বাধা দিলে এ অংশে পাকাকরণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে দফায় দফায় মাপজরিপে রাস্তার জমি জবরদখলের সত্যতা পেয়ে উপজেলা ভূমি অফিস দোকানপাট সরিয়ে নেয়ার নোটিশ দেয়। কিন্তু তারা উল্টো নোটিশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালতের নির্দেশে পুনরায় মাপজরিপেও অভিযোগের সত্যতা মিললে আদালত স্থগিতাদেশের আবেদন বাতিল করে দেন। কিন্তু তারপরও দখলদাররা জোরপূর্বক রাস্তার জমি দখল করে রেখেছেন। অপরদিকে, শুক্রবার পাশ দিয়ে সাময়িকভাবে চলাচলের রাস্তার জমির মালিক আব্দুল মজিদ আকন্দ বাঁশের বেড়া দিয়ে তার জমি দখলে নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি সেখানে ইট বালু ফেলে দোকান ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে কুশমাইল, সংগ্রামপুর, মানইরসহ এ পথে চলাচলকারী আশেপাশের ৪-৫টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়ে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে শনিবার সরেজমিনে গেলে সংগ্রামপপুর গ্রামের ভ্যাচনচালক মফিজউদ্দিন ও দুলু মিয়া জানান, আমরা ভ্যান চালিয়ে কোন রকমে সংসার চালাই। এতোদিন রাস্তা পাকা করার কাজ বন্ধ থাকলেও আমরা চলাচল করতে পারতাম। কিন্তু বর্তমানে রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা বাড়ি থেকে ভ্যান বের করতেই পারছি না।
উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রহিম জানান, রাস্তাটির শুরুর অংশ বেদখল থাকায় কাজ বন্ধ থাকার পাশাপাশি মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আমি অবৈধ দখল উচ্ছেদের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করেছি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাইমেনা শারমিন জানান, আমি এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।