যার দৈহিক শক্তি পর্যাপ্ত তার কাজকর্ম, চলাফেলা, পড়াশুনা ইত্যাদি দৈনন্দিন বিষয়গুলো খুব স্বাভাবিক গতিতে চলে। সে থাকে সতেজ ও প্রাণবন্ত। দৈহিক শক্তি যার কম তার সবকিছুতে গোলমেলে। স্বল্পতেই হাঁপিয়ে উঠে। কোন কিছুতেই পরিপূর্ণ সফলতা পায় না। পুষ্টির অভাব থাকলেই দেহে শক্তির পরিমাণ কম থাকে।
খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে দৈহিক শক্তির । বর্তমান যুগে দৈহিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যই অনেক বেশি কার্যকর বলে পুষ্টিবিদরা মনে করছেন।
শরীরে শক্তি বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেয়ে গেলেই দেহে দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়। তাই দৈনন্দিন খাবারের প্রতি পূর্ণ মনোযোগী হওয়া জরুরি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবারকে অবশ্যই প্রাধান্য দিবেন।
এবার জেনে নেয়া যাক শক্তি বৃদ্ধি করে যে খাবারগুলো:
ডিম
ডিম অধিক প্রোটিন প্রদানকারী খাবার। দৈহিক দুর্বলতা দূর করতে ডিম বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এর ভিটামিন বি১২ খাবারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ টি করে ডিম খান, এতে আপনার শরীরে শক্তি বৃদ্ধি হবে।
দুধ
দুধ এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং প্রাণিজ-ফ্যাট আছে যা দ্রুত দৈহিক শক্তির উন্নতি ঘটায়। যেমন খাঁটি দুধ, দুধের সর, মাখন ইত্যাদি। ছোটদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই প্রতিদিন এই খাবারগুলো রাখবেন।
মধু
হাজারো গুণে ভরা মধুতে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ আছে যা শরীরে শক্তি যোগায়। দৈহিক দুর্বলতার সমাধানে মধুর গুণের কথা সবারই কম-বেশি জানা। তাই দৈহিক শক্তি বাড়াতে প্রতিদিন পরিমাণ মত মধু খেতে পারেন। মধু দৈহিক শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও বৃদ্ধি করে। পানির সঙ্গে মধু মিলিয়ে খেতে পারেন।
বাদাম
বাদামের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ও মিনারেল। বাদাম অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর, এটি কোলেস্টেরল কমায়। এ ছাড়া এর রয়েছে আরও অনেক গুণ। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ গ্রাম বাদাম খেলে দেহের গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, মিনারেল এবং সারাদিনের শক্তির জোগান দিতে পারে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
খেজুর ও কিশমিশ
দেহে শক্তির অন্যতম উৎস হলো খেজুর ও কিশমিশ। এগুলো খেলে দেহে দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি পায়। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ শর্করা। অধিক ক্ষুধার্ত্য অবস্থায় শরীর ক্লান্ত লাগে এ মুহূর্তে তিন-চারটি খেজুর খেলে আপনার শরীরে শক্তি ফিরে আসবে।
কলা
কলার রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি ও পটাশিয়াম। ভিটামিন বি ও পটাশিয়াম দৈহিক শক্তি বাড়ায়। তাছাড়া কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ শর্করা যা দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে ক্লান্তি দূর হয়। সহজ লব্য এই কলা সকালের নাস্তায় নিয়মিত রাখুন।
গরুর মাংস
গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। তাই দৈহিক শক্তি বাড়াতে কম ফ্যাটযুক্ত গরুর মাংস খান।
কফি
কফি দৈহিক শক্তি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কফিতে যে ক্যাফেইন থাকে তা শক্তি বাড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি বৃদ্ধি করে ক্লান্তি দূর করে কফি।
চকলেট
চকলেটে রয়েছে ফেনিলেথিলামিন ও সেরোটোনিন নামক উপাদান যা আমাদের দেহে শক্তির মাত্রা বাড়াতে সহায়ক। ভেজালমুক্ত চকলেট বেছে নিন।
ভিটামিন সি জাতীয় ফল
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে প্রতিদিন খাবার তালিকায় রাখুন ভিটামিন-সি যুক্ত ফলমূল যেমন আঙ্গুর, কমলা, তরমুজ, পিচ ইত্যাদি। এই ফলগুলো দৈহিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারী।
প্রত্যেকেরই এই খাবারগুলোর সঙ্গে পরিচয় আছে। আপনার হাতের নাগালেই এই খাবারগুলো পাচ্ছেন যা দৈহিক দুর্বলতাকে দ্রুত দূর করে আপনাকে করে তুলতে পারে প্রাণবন্ত। তাই আজে বাজে খাবার খেয়ে নিজের শরীরের ক্ষতি না করে উপরোক্ত পুষ্টিকর খাদ্যগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন।