দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত শাহানার প্রয়োজন মাথা গুজার ঠাই

উন্নয়নের মহা সড়কে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বেড়েছে নাগরিকদের মাথাপিছু আয়, তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করা শাহানাদের মত নারীদের ভাগ্যের পরিবর্তন আজও হয়নি। বৃদ্ধা মায়ের দেয়া মাত্র দুই শতক ভুমির উপর অসুস্থ বৃদ্ধা মা ও তিন সন্তানকে নিয়ে জীর্ণশীর্ন কুঁড়েঘরে কোন রকম বসবাস করে আসছেন ৩৮ বছর বয়সী নারী শাহানা বেগম। দারিদ্রের কষাঘাতে চরমভাবে জর্জরিত শাহানা অন্যর বাড়িতে কাজ করেই অসহায় বৃদ্ধা মা ও তিন সন্তানদের ভরণ পোষণ চালিয়ে জীবন সংগ্রামে কোনরকম টিকে আছেন। অনেক সময় তাদের দু’বেলা খাবার জুটাতে হিমশিম খেতে হয়,অনাহারে অর্ধাহারে কাটাতে হয় বিভিন্ন সময়। সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী মুজিব বর্ষে দেশের কোন নাগরীক গৃহহীন থাকবেনা বলে ঘোষনা করা হয়েছে, তাতে করে শাহানাও সপ্ন দেখেন অন্তত মুজিব বর্ষে তিনি আর গৃহহীন থাকবেন না। আর এজন্য তার এখন প্রয়োজন কোন রকমের মাথা গুজার ঠাই। সদর উপজেলার ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আটগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শাহানা ৬ বছর ধরে স্বামী পরিত্যক্ত। তার এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। জানা গেছে- শাহানা বেগমের মা রেণু বেগমের দেয়া ২শতক ভূমির উপর বর্তমানে তাদের বসবাস। বর্ষা মৌসুমে ভারি বৃষ্টিতে টিন ছিদ্র করে পুরো ঘরে পানি জমে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে ঝরবাদলেও থাকে আতঙ্ক আর উদ্বেগ,কখন যে ঝরের উত্তাল হাওয়া নিয়ে যায় কুঁড়ে ঘরটি। বিগত মার্চ মাস থেকে দেশব্যাপী প্রাণঘাতী করোনায় বিপর্যস্থ হয়ে পরে দেশের সবগুলো জনপদ,থেমে যায় মানুষের জীবন-যাত্রার সকল আয়োজন। লকডাউনের কবলে নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্তদের জীবনে বয়ে আসে মহা এক ক্লান্তিকাল। এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসীরাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো মানুষের জীবন রক্ষায় খাদ্য সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে আসলেও তাতে ভাগ্য জুটেনি শাহানার। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও পাননি কোন নাগরিক সুবিধা। কেউ খোঁজও নেয়নি শাহানাদের । ভিজিএফ কার্ড কিংবা সরকারের আর্থিক প্রণোদনার কোনটাও পাননি তিনি। ইাউপি মেম্বার লুৎফুর মিয়া জানান- করোনা সঙ্কটের সময় আমার এলাকায় কেউ ত্রাণ সামগ্রী পাননি এমন তথ্য আমার জানা নেই, অনেকে পেয়েও অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, মুজিব বর্ষে গৃহ নির্মাণের জন্য আমার ওয়ার্ডে এখনো কোন বরাদ্ধ আসেনি। কান্নাজড়িত কন্ঠে শাহানা বেগম এ প্রতিবেদককে বলেন,আমি বড়ই অসহায়,আমার স্বামী তিন মাসের আন্তঃসত্তা রেখে চলে যান,বর্তমানে আমি এবং আমার মেয়ে অন্যর বাড়িকে কাজ করেই কোনরকম সংসার চালাই। আমার পাশে দাঁড়ানোর মত কেউ নেই। তিনি বলেন,আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করি তিনি যেন মুজিব বর্ষে আমাকে অন্তত একটি গৃহ নির্মাণ করে দিয়ে আমার পাশে দাঁড়ান। মুঠো ফোনে কথা হয় ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রানা খান শাহীনের সাথে, এসময় তিনি বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, আমি ঐ ওয়ার্ডের মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খোঁজ নিয়ে দেখবো। তিনি বলেন, শাহানা বেগম নামে ওই নারী আমার সাথে কখনো যোগাযোগ করেছেন বলে আমার জানা নেই,যদি যোগাযোগ করেন, তাহলে আমি আগামীতে তাঁকে গৃহ নির্মাণের ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগীতা করব।