নওগাঁর বদলগাছীতে ছোট যমুনা নদীর বালুমহালে অবৈধভাবে গাছ লাগিয়ে জোরপূর্বক দখল নিয়ে বালু উত্তোলনে বাধা প্রদান করে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে শৈলেন মেম্বার নামে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এব্যাপারে ইজারাদারদের পক্ষে বদলগাছী সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) অফিসে লিখিত অভিযোগ করায় ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের সার্ভেয়ার দ্বারা বালুমহাল মাপ করে বুঝে দেওয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ছোট যমুনা নদীর তাজপুর দওয়ের পাশে সময়ের ভাঙ্গনে প্রায় ১০/১৫ বিঘা জমির বালু চর তৈরী হয়। স্থানীয় কটকবাড়ী গ্রামে সুযোগ সন্ধানী শৈলেন মেম্বার চরের পাশে তার পৈতৃক কিছু জমি থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই চর নিজের বলে জোরপূর্বক দখল করে পর্যায়ক্রমে গাছ লাগাতে থাকেন। বালু মহাল ইজারাদার ওই স্থানে বালু উত্তোলন করতে গেলে তাদের প্রান নাশের হুমকি দিয়ে প্রভাব দেখিয়ে বালু উত্তোলনে বার বার বাধা সৃষ্টি করে। গত ১ জুলাই বালুমহাল ইজারার লোকজন ওই স্থানে বালু উত্তোলন করতে গেলে (হিন্দু সম্পদায়ের লোক হওয়ায় তার জমি কেউ জোরপূর্বক দখল করছে বলে) নিজেকে অসহায় সংখ্যালঘু পরিচয় দিয়ে ভুল বুঝিয়ে পুলিশকে নিয়ে এসে ইজারাদারের লোকজনকে হুমকি ধামকি দিয়ে বালু উত্তোলন কাজের বেশ কিছু জিনিস ছিনতাই করে নিয়ে যান। পরে ইজারাদারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে মাপযোগ করলে উল্লেখিত স্থানে ১০/১৫ বিঘা জমি বালু মহালের বলে প্রতিয়মান হয়। যেখানে ভুমি অফিস লাল ফ্লাগ দিয়ে ইজারাদারকে বুঝিয়ে দেয়। এরপরও প্রভাবশালী শৈলেন মেম্বার বার বার বালু উত্তোলন কাজে বাধা সৃষ্টিসহ লোকজনকে প্রানে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। বালুমহাল ইজারার লোকজন শৈলেন মেম্বারকে এসব বন্ধ করতে অনুরোধ করলে তিনি ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় তাজপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, চরের পাশে সামান্য কিছু জমি থাকায় শৈলেন মেম্বার বালু মহালের সম্পর্ন চরটায় গাছ লাগিয়ে দখল করে নিয়েছে। এখানে ১০/১৫ বিঘা চর ছাড়াও আরও ৫ বিঘা খাস জমি আছে যা অবৈধভাবে শৈলেন মেম্বারের পরিবার দখল করে রেখেছে। এমন কি অন্যদের সেখানে গরু ছাগলকে ঘাস খাওয়াতেও দেয়না। আর কিছু বললেই নিজেকে অসহায় সংখ্যালঘু পরিচয় দিয়ে সংবাদিকদের নিকট মিথ্যা অভিযোগ করেন ।
বালু মহালের সংঙ্গে সংম্পৃক্ত মানিক বলেন, শৈলেন মেম্বার একজন ভুমিদস্যু ও চাঁদাবাজ লোক। এর আগে নৌকা প্রতি ৩শত টাকা করে সে নিত। যখন জানলাম এটি বালু মহালের জায়গা তখন ঐ টাকা দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর তারপর হতে সে আমাদের বালু উত্তোলনে বাঁধা সৃষ্টি করছে। গত ১ জুলাই আমাদের লোকজনকে সে বেধরক মারপিট করে বেশ কিছু মালামাল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ব্যবসার স্বার্থে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। এখন আবার ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করছে। আমরা এর প্রতিকার চাই।
অভিযুক্ত শৈলেন মেম্বার বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বালুর নৌকা হতে আমি কোন টাকা নেইনি। এবং কোন চাঁদা দাবি করিনি। নদীর চরের পাশে যে জায়গায় গাছ লাগানো হয়েছে সেটি আমার ব্যক্তি মালিকানা জমি।
বদলগাছী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) নাহারুল ইসলাম জানান, তাজপুর বালুমহালের ইজারাদারদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই এলাকা সার্ভে করা হয়। সেখানে ব্যাক্তি মালিকানা কোন জমি পাওয়া যায়নি সব জমি বালুমহালের।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহির বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। গাছগুলো আমাদের জিম্মাই নিয়ে তহশিলদারকে সার্বক্ষনিক নজরদারির জন্য বলা হয়েছে। এরপরও কেউ গাছ কাটলে তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।