নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহী জেলার পুঠিয়ায় শ্যালিকাকে ধর্ষণ এবং তার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার প্রধান আসামি র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। তার নাম ইখলাস আলী (২৮)। তিনি উপজেলার হলহলিয়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার (২১ জুলাই) ভোর রাতে পীরগাছা নামক সস্থানে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, দুই রাউন্ড তাজা গুলি, একটি ম্যাগজিন, একটি গুলির খালি খোসা এবং ৪৮০ পিস ইয়াবা বড়ি উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র্যাব। বন্দুকযুদ্ধে নিহত ইখলাস গত এপ্রিল থেকে পলাতক ছিলেন। পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছিল না। ইখলাস তার সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া শ্যালিকা ইভা খাতুনকে (১২) ধর্ষণ করেছিলেন। ইভা উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের দিনমজুর মো. সেলিমের মেয়ে। এপ্রিলে বড় বোনের বাড়ি বেড়াতে গেলে দুলাভাই ইখলাস জুসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন অবস্থায় তাকে ধর্ষণ করেন। পরে নিজের বাড়ি ফিরে লোকলজ্জায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ইভা। এ ঘটনায় ইখলাস আলী ও তার বাববা-মাকে আসামি করে পুঠিয়া থানায় ধর্ষণ এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার একটি মামলা দায়ের করা হয়। ইভা পুঠিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী ছিল। তার আত্মহত্যার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় গত ১০ জুন একাই রাস্তায় নামেন তার হতভাগা বাবা। তিনি পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সামনে ইভা খাতুনের ছবি সম্বলিত একটি ব্যানার নিয়ে একাই দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিবাদ জানান। পর দিন রাজশাহীতে কয়েকটি সংগঠন মানববন্ধন করে। র্যাব এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, র্যাব-৫ এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল ভোররাতে পুঠিয়ার পীরগাছা এলাকায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে যায়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ীরা র্যাব সদস্যদের উপর এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। আত্মরক্ষায় র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় ১০-১৫ মিনিট গুলি বিনিময়ের মাদক ব্যবসায়ীরা পিঁছু হটেন। পর স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল তল্লাশী করলে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে খোঁজ নিয়ে র্যাব জানতে পারে, নিহত ব্যক্তি স্কুলছাত্রী ইভাকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার প্রধান আসামি। র্যাব জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য ইখলাসের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর র্যাবের ওপর আক্রমণ এবং অস্ত্র উদ্ধারের এ ঘটনায় পুঠিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।#