বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে কক্সবাজারে ভেসে আসা বিপুল পরিমাণ বর্জ্য পরিষ্কারে স্থানীয় পরিবেশবাদী ও যুব সংগঠনগুলোকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ করছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। বুধবার সৈকতের দরিয়ানগর এলাকা থেকে এ পরিষ্কার অভিযান শুরু করেন জেলা প্রশাসক ও বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি কামাল হোসেন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ অভিযানে যোগ দিয়েছে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস।
অভিযানের শুরুতে জেলা প্রশাসক বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ প্রায় ১১টি সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের ৫ শতাধিক কর্মী নিয়ে সৈকতের নাজিরারটেক পয়েন্ট থেকে হিমছড়ি পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পড়ে থাকা বৈর্জ্য অপসারণ করার কাজ শুরু করেছি। তিনি আরো বলেন, ভেসে আসা নানা ধরণের বর্জ্য সৈকতকে দূষিত করেছে। কারণ, এসব বর্জ্যের বেশিরভাগই বোতলজাত ও প্লাস্টিক দ্রব্য। যা আমাদের দেশে ব্যবহার হয় না। বর্জ্যের উৎসের সন্ধানে ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) দিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যে কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
সমুদ্র সৈকতের শাহীন বীচ পয়েন্ট এলাকায় প্লাস্টিকসহ বর্জ্য অপসারণ ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’র জেলা সমন্বয়ক মোঃ জাবেদ নূর শান্ত বলেন, নজিরবিহীন ভাবে ভেসে আসা সমুদ্র সৈকতের ময়লা স্তুপ সরিয়ে সৈকতের সৌন্দর্য ফিরে আনতে এবং জীববৈচিত্র সংরক্ষণে আমরা জেলা প্রশাসনের সাথে কাজ করছি। ১২জন জলবায়ু কর্মী নিয়ে আমরা এখন পর্যন্ত মোট ৩৬ব্যাগ বর্জ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি। ডায়বেটিক পয়েন্টে আমাদের একটু কষ্ট হয়েছে। অন্যান্য পয়েন্টের তুলনায় এই পয়েন্টে প্লাস্টিক কিংবা কাচের বোতল তুলনামূলক ভাবে কম ছিলো। সবই ছিলো পলিথিন আর ছেড়া জাল। বর্জ্যের সাথে ভেসে আসা মৃত সামুদ্রিক কাছিমসহ নানা উভয়চর প্রাণীর বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই শংকিত। সমুদ্র সৈকতকে বাঁচাতে স্থায়ীভাবে যাতে প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা হয় এর জন্য জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বর্জ্যের উৎসের সন্ধানে গঠিত কমিটির প্রধান আশরাফুল আফসার বলেন, ‘এ ধরনের বর্জ্য আসার ঘটনা কক্সবাজারের ইতিহাসে ঘটেনি। কীভাবে, কারা এ বর্জ্য সাগরে ফেলছে, তার অনুসন্ধানে মঙ্গলবার থেকে আমরা কাজ করব। আশা করি, সাত কর্ম দিবসের মধ্যে আমরা তদন্তের কাজ শেষ করতে পারব,’ যোগ করেন তিনি।