এমন দুর্দিনে বন্ধু


এনামুল হক টগর

আমি নিউজিল্যাণ্ড প্যালেস্টাইন ইথিওপিয়া কাশ্মীর
আর মিয়ানমারের রক্তাক্ত পথ অতিক্রম করে
শুনি,এই পৃথিবীর করুণ আর্তনাদ ধ্বনি হাহাকার।
হাঁটতে হাঁটতে এইমাত্র আমার প্রিয় বাংলাদেশের মাটিতে এসে দাঁড়ালাম বন্ধু।
তোমার ঠিকানা মনে নেই আবার মোবাইল নন্বরও বন্ধ!
বিমানবন্দর থেকে হাঁটতে হাঁটতে শুনি বাঁচার আকুতি
দেখি স্বজনের কান্নার দহন দাউ দাউ লেলিহান আগুনে পোড়া মৃত্যু আর মৃত্যুর যন্ত্রণা অগতি।
আইন অমান্যকরী বিত্তবানদের অবহেলায় জ্বলছে বননী গুলশান নীমতলী সাভার আশুলিয়া ও পুরাতন ঢাকার প্রান্তর আগে পিছে।
আহত আর যন্ত্রণার বিভীষিকাময় আতংক চিৎকার ধ্বনি,
আমার হৃদয়কে বেদনা বিধুঁর করে তুলে বিদীর্ণ মরণের বার্তা অশনি।
কোথায় বন্ধু কতোদূর প্রিয়তম প্রেম আমার আর
কতো পথ হেঁটে গেলে পাবো এই জীবন ভালোবাসা আমার।
আমি অসংখ্য নদী আর সমুদ্র পাড়ি দিয়ে এই স্মৃতিময় বুড়িগঙ্গার প্রান্তরে,
এসে দাঁড়িয়েছি,এক অতন্দ্র বিপ্লবী জীবন যুদ্ধে নির্মাণ করা এক সমাজ সংস্কার।
হয়তো এই নগরেই ছিল তোমার বাস্তবতার ছোট কুটির
বিদগ্ধ প্রেম ও শান্তিভরা ভালোবাসার আশ্রয় ঠিকানা।
সময়ের কিছু পথ হেঁটে গেলেই হয়তো তোমার সাথে দেখা হতে পারে নতুন আহবান:
কিন্তু হঠাৎ করেই এক ভয়ংকর অশনি করোনা ভাইরাস মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে বিশ্বকে।
কিভাবে এই পথ অতিক্রম করে তোমার কাছে যাবো বন্ধু ভেবে হই বিস্ময় ক্লান্ত নির্বাক।
পৃথিবীর দিকে দিকে ইরান ইতালী ফ্রান্স ভারত স্পেন
চীন যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য কানাডা অষ্ট্রেলিয়া পাকিস্থান
আরব-সহ সব দেশেই বেদনা বিধুর আহত আক্রান্ত ও লাশে ক্লান্ত,
কিন্তু আমার প্রিয় জন্মভূমিতে এখনো শুনি প্রাণের স্পন্দন যদিও বিশ্বজুড়ে জীবনের যন্ত্রণা জর্জর ক্ষত!
এই প্রিয় মহান জাতিকে বাঁচানো জন্যে আমাদের সম্মেলিত প্রত্যাশার দৃঢ় যুদ্ধ শুরু,
এখন বিশ্ব মানবতার আর্দশ সেবা ও সভ্যতার যুদ্ধে দীপ্ত সাহসী দেশপ্রেমিক আমরা,
পৃথিবী জুড়ে বাকরুদ্ধ ও মৃত্যুযজ্ঞ জীবনের নির্মম ও নিষ্ঠুরতার পরিণতি মৃত্যু আর লাশ।
বহুযুগ ও শতাব্দীর পথে পথে হাঁটতে হাঁটতে সহসা সময় যদিও বিপন্ন কিন্তু আমরা লড়াইয়ে বীর সাহসী।
ভেবেছিলাম হয়তো খুঁজে পাবো তোমার নতুন গন্তোব্যের ঠিকানা।
কিন্তু বিষ্ময় শুধু ধূঁ-ধূঁ নীলিমা আর অবরোহ দিগন্ত শূণ্য
জগতের কতো অগণিত নদী কত সাগর পর্বত পাহাড়!
মাঝে মাঝে বহুমাত্রার গতিশীল আধুনিক গ্রাম ও নগর
আমাদের প্রেম ও ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধাশীল বিনম্র মহৎ,
ভোরের আকাশ ছুঁয়ে অতন্দ্র পাখি উড়ে যায় দূরে মুক্ত
এই বৈপরীত্য বেদনার জগত যেন বৈশিষ্টপূর্ণ ও বিচিত্র
অন্যায় যুদ্ধ যেমন বিশ্বমানবতাকে করে ধ্বংস আর রক্তাক্ত ক্ষত।
আবার ন্যায়েপরায়ণ যুদ্ধ আনে মানবতার মহাপ্রেম ও সভ্যতার মহাশান্তি,
বিপরীত আন্তঃসম্পর্কের মিলনেই যেন গড়ে ওঠে আগামীর নতুন আর্দশ সভ্যতা:
আর জগতের নিজেস্ব সত্ত্বা ও অস্তিত্বকে করে রাখে দীর্ঘায়িত স্থির ও স্থিতি!
কোন এক বৈশ্বিক প্রজ্ঞার তত্ত্বজ্ঞান থেকে এই মহাবিশ্ব আর মহা-জগতকে দেয় আদেশ নির্দেশ ও নির্মাণ আজব!
তাঁর ভেতরই তুমি আর আমি যেন ব্লুু-প্রিন্ট মানব কোষ
আমারা ক্ষুদ্রের ভেতর থেকেই যেন এক বৃহৎ চৈতন্যের প্রগতি কল্যাণ অশেষ,
আমরা বার বার ও নব নব উৎপাদন করি সময়ের দক্ষ ও নিপুণ চেতনার অশেষ আহবান-
স্বদেশ প্রেমের গভীরেই যেন লুকিয়ে আছে আমাদের সংগ্রাম ও ভালোবাসার মহৎ জীবন।
প্রেম আর মহাপ্রেমের সদ্য মৌলিক উপাদানগুলোই যেন অনাগত চেতনায় নতুন,
গবেষণায় জড়কে বস্তুতে রূপান্তর ও পরিবর্তন করেই মানব জ্ঞান সেবা দেয় সময়ের কল্যাণ।
প্রকৃতির শাশ্বত গৌরবের ভেতরেই মহা-বিশ্বত্মার বিধি ও প্রজ্ঞাময় আইন!
এই মহা-অস্তিত্ব ও মহাবিশ্বের ভেতরই যেন তুমি আর আমি ও আমরা সবাই অবিচ্ছেদ্য রতন,
কিন্তু তুমি এখনো নিরব নিঃশব্দে কেন প্রিয়তম সর্বদা?
এইতো আমি জেগে আছি,দেখছো না অশনি ভাইরাসে ক্লান্ত মানুষ,মাঝে মাঝে মৃত্যুর সংবাদ।
গ্রাম ও নগর শূন্য ক্ষত-বিক্ষত মানুষের আহাজারীতে বিত্তবান মধ্যবিত্ত সবাই হাত বাড়িয়েছে অশেষ,
সরকারের মহৎ দেশনেত্রী প্রশাসন রাজনীতিবিদ আরো দেশপ্রেমিকরা বিশেষ।
এমন বেদনার দিনেও সময়ের ঘাতক ও প্রতারকরা চুরি করে আত্মসাৎ ও লালসায় মিশে।
এমন সাহসী দিনে তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছো প্রিয়তম, প্রিয় বন্ধু?
অভিযোগ ও অনুযোগের ভেতরই আমাদের নিয়তি যুদ্ধ
প্রেমিক আর প্রেমিকার দরজায় স্পন্দন করেই হয় মিলন পরিচয়!
তাই বিবেক বর্ণনা করে ন্যায় ও অন্যায়ের প্রতিক্রিয়া।
আমরা ছিলাম ভোরের বকুল ও পলাশ ফুল কুড়ানো ইতিহাসের স্মৃতিময় বালক ও বালিকার মধুময় প্রেম যমুনা।
আমাদের জীবন ছিল রোমান্টিক প্রজ্ঞাময় লুকোচুড়ি,
ওই আসমানে অজস্র নক্ষত্র ও রূপালী চাঁদের
সাথে আমরা ছিলাম স্বর্গের জীবন্ত নূড়ি।
পেছনে হাজার বছরের স্মৃতিময় দিন ও রাতগুলো হাসতো কাঁদতো জীবনের কতো বিদগ্ধ ইতিহাস।
সামনে আত্মার দর্শন আলোকিত বসন্ত ফুলের বুকে কতো স্বপ্ন আশা,
তাঁরা এক সময় তোমাকে আর আমাকে খুঁজতো বিরহ বিচ্ছেদ প্রেমের কঠিন ব্যথায়।
কিন্তু তুমি আর আমি এখন দূর অচিন ও নৌকাবিহীন বিরহ আর বিচ্ছেদে যন্ত্রণায়,
যদিও আমি জেগে আছি,তুমি কিন্তু বন্ধু উদাস নিরব?
ডুবে ডুবে আবার ভেসে ভেসে তোমাকে খুঁজি কিন্ত তোমার বন্ধু বিফল ব্যর্থ স্বভাব?
জানি ঠিকানাবিহান যাত্রা তোমার তবু নাবিক আমি তোমাকে খুঁজে নেবো চৌকোষ জ্ঞানে দক্ষ,
হয়তো খুঁজে পাবো নৌকায় জাহাজে কখনো বিমান দূর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আহত চিহৃ ক্ষত।
তারপরও পথের পর পথ দূর-বহুদূর পথ পাড়ি দিয়ে
দেখি আর ভাবি,
আমাদের সেই প্রেম ও ভালোবাসা আবার নতুন করে দিতে পারে মানবতার সেবা নব নব!
এখনো তোমাকে খুঁজে পাইনি,কিন্তু আমি ও আমরা সবাই এই অশুভ ভাইরাসের বিরুদ্ধে করে যাই লড়াই আমরণ যোদ্ধা বীর।
সফল যুদ্ধ শেষে তোমাকে না পাওয়ার
বিচ্ছেদ বিরহ বুকে নিয়ে আমি আবার
ফিরে যাবো অতন্দ্র পৃথিবীর দিকে দিকে রোগমুক্তির চিকিৎসায় স্বচ্ছ সুন্দর!
মহাকালের ইতিহাস আর মানবতার বিশাল মহত্ব
আমাদের ও দেশপ্রেমিকদের মনে রাখবে অমর অক্ষয় কথা বন্ধুত্ব।
০৪/০৭/২০২০