সিরাজগঞ্জের তাড়াশের হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের ৬ নং ব্রীজের মুখে জাল দিয়ে ঘের বসিয়ে মাছ চাষ প্রকল্পের উদ্যোগ গ্রহন করায় শিক্ষা স্বাস্থ্য উন্নয়ন কার্যক্রম (শিসউক) নামের একটি বে-সরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় কৃষকরা।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে প্রায় ২ শতাধিক ভুক্তভোগী কৃষকদের গণস্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্র ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে , শিক্ষা স্বাস্থ্য উন্নয়ন কার্যক্রম (শিসউক) নামের একটি বে-সরকারি সংস্থার উদ্দ্যোগে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের ৬ নং ব্রীজের পাশে নওগাঁ ইউনিয়নের দেবীপুর মৌজার দেবীপুর ব্রীজ ও নলুয়া কান্দি ব্রীজের মুখে এনজিওদের চিহিৃত উপকারভোগীরা মাছ চাষের জন্য লোহার জাল দিয়ে ব্রীজের মুখ ঘেড় করে দিয়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ মাছ চাষ করার লক্ষ্যে তারা ফসলী জমিতে বেশী মাত্রায় চুন ও লবন প্রয়োগ করার কারণের মাঠের ফসল মরে যায়। এমনকি ধানে প্রচুর পরিমাণ চিটা হয়। এতে করে কৃষকরা কাংখিত ধান উৎপাদন না করতে পেরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন প্রায় ২ বছর ধরে।
এছাড়া বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি নিস্কাশনে বাঁধার সৃষ্টি হওয়ায় সঠিক সময়ে রবিশস্যর আবাদও করতে পারেন না তারা। এমনকি পানি প্রবাহের মুখে প্রতিবন্ধতা সৃষ্টির ফলে ওই এলাকার কৃষক বর্ষাকালে নৌকাযোগে তাদের ফসল ও পণ্যাদি বিক্রি করতে পারেন না। ফলে এলাকার শত শত কৃষকের স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে।
কৃষকদের স্বার্থ বিঘিœত করে এনজিওদের মাছ চাষ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন নাহার লুনা জানান, তিন ফসলী জমি এলাকায় ব্রীজের মুখে জাল দিয়ে ঘেড় করে মাছ চাষ করলে নিশ্চিতভাবে বন্যার পানি নিস্কাশন বাধাগ্রস্থ হবে। ফলে ওই এলাকার কৃষকদের ফসলী জমির খাদ্য উৎপাদন ব্যাপক হারে হ্রাস পাবে। এজন্য সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স্থানীয় কৃষক আব্দুর রশিদ, মজনু মিঞা, আব্দুল লতিফ, মোক্তার হোসেন সহ একাধিক কৃষকেরা অভিযোগ করে আরো বলেন, মূলত: এনজিও নির্ভর ওই প্রকল্পের মাছ চাষ করে কতিপয় প্রভাবশালী ও এনজিও লাভবান হলেও বেশির ভাগ কৃষকই ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই এনজিওদের মাছ চাষ প্রকল্পটি জরুরী ভিত্তিতে বন্ধ হওয়া দরকার।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন কার্যক্রম (শিসউক) এর প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, জাল দিয়ে ঘেড় বানানো পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হলে পানি প্রবাহের পথে কোন রকমের বাধার সৃষ্টি হবেনা। তাছাড়া বেশিরভাগ জমি মালিকদের মতামতের ভিত্তিতেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ ইউএনও ইফ্ফাত জাহান বলেন, বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।