জাতীয় সংসদের চলমান বাজেট অধিবেশনের বাকি কার্যদিবসগুলোতে যেসব সংসদ সদস্য অংশ নেবেন, তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রায় ১৭০ জন এমপিকে এরইমধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ জন এমপি শনিবার সংসদের মেডিকেল সেন্টারে নমুনা দিয়েছেন। সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী নিজেও শনিবার নমুনা দেন।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীসহ ১৩ জন এমপি করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এমপিদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিশেষ করে, চলতি অধিবেশনে যোগ দেওয়া বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও গণফোরামের এমপি মোকাব্বির খান করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে চলতি অধিবেশনের বাকি কার্যদিবসগুলোতে অংশ নেওয়া এমপিদেরও নমুনা পরীক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই ১৭০ জনের নমুনা পরীক্ষার পর অবশিষ্ট সংসদ সদস্যদেরও কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হতে পারে। চিফ হুইপ জানান, কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানোর জন্য সংসদ সদস্যদের আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা সাড়াও দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ জুন মৃত্যুবরণ করেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। একইদিন মৃত্যুবরণ করেন টেকনোক্র্যাট কোটায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী হওয়া শেখ মো. আব্দুল্লাহ। এছাড়া এমপিদের মধ্যে প্রথম করোনায় আক্রান্ত হওয়া নওগাঁর শহীদুজ্জামান সরকার ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। আর করোনা পজিটিভ হলেও শারীরিক কোনো সমস্যা না থাকায় গণফোরামের মোকাব্বির খান গতকাল রবিবার ঢাকা সম্মিলিতি সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে রিলিজ পেয়ে বাসায় আইসোলেশনে গেছেন।
এদিকে, সংসদ সচিবালয়ে ও সংসদ এলাকার ভেতরে অবস্থিত অন্যান্য সরকারি দফতরে কর্মরত প্রায় ১০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে তাদের বেশিরভাগই বাসায় আইসোলেশনে গেছেন। এত সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ১৩ জন এমপি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণেই অন্যান্য এমপিদের করোনা পরীক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়।
মহামারীকালে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পাসের জন্য ১০ জুন সংসদের অধিবেশন ডেকে ১২-১৫ দিন চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেও তা আরও সংপ্তি করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে এবার বাজেট অধিবেশন ৮-৯ কার্যদিবসে সীমাবদ্ধ থাকছে। এ ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনার দিন ও ঘণ্টা কমছে। পরিবর্তিত পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনা হবে তিনদিন; ২৩, ২৪ ও ২৯ জুন। ৩০ জুন বাজেট পাসের পর জুলাই মাসে একদিন সংসদের বৈঠক বসত পারে। প্রতিবছর জুন মাসজুড়ে বাজেট অধিবেশন চলার পর তা জুলাইয়েও প্রলম্বিত হয়। তবে এবার করোনার কারণে পূর্ববর্তী অধিবেশনের (সপ্তম) মতো বাজেট অধিবেশনও (অষ্টম) খুব সংক্ষিপ্ত হচ্ছে।