অজ পাড়াগাঁয়ের এক ডানপিটে ছেলে বাঁশ বনের মাঝ দিয়ে পথ চলতে গিয়ে অজানা ভয় ও আশ্কংায় তার গা ছম ছম করতে থাকে। মনে মনে দারুন ভয় পেয়ে বাড়ি গিয়ে তার মাকে বলে, মা আমি ডরাইছি।
অথাং ভয় পেয়েছি। মা বলে ওরে আমার সোনা ডরাইছে, তো এইখানে বস্। বলে চুলার পিঠে ছেলেকে বসিয়ে রেখে একটি কাস্তে চুলার
আগুনে দেয়। দগদগে আগুনে কাস্তে যখন লাল রঙ ধারণ করে তখন তা তুলে পাশে রাখা পানি ভর্তি একটি থালায় ছেড়ে দিলে ছ্যাঁনাৎ করে শব্দ হয়।
ছেলেটি লাফ দিয়ে উঠে মাকে জড়িয়ে ধরে বলে মাগো আমি আগে ডরাইছিলাম না এই এখন ডরালাম।
বর্তমান বৈশি^ক মহামারি করোনা নিয়ে যখন সারা পৃথিবীর মানুষের মত বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ করোনাভয়ে ভীত। সকলেরই যখন ত্রাহি
ত্রাহি অবস্থা তখন বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলে
বসলেন, করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে সংক্রমণ ‘দুই থেকে তিন বছর ধরে চলতে পারে।’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম
আজাদ এর মুখ থেকে একথা শোনার পর থালার পানিতে ছ্যাঁনাৎ করা শব্দের মত দেশের মানুষ যেন নতুন করে ডরালো। অর্থাৎ সমগ্র দেশের
মানুষ নতুন করে করোনা ভয়ে ভীত হয়ে পড়লো।
গত ১৮ জুন-২০২০, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত স্বাস্থ্য ব্যুলেটিনে উপস্থিত
হয়ে বলেন, তিনি নিজেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন। তবে বেশ কিছুদিন যাবত আগে তিনি ফিরে আসেন দপ্তরে এবং কাজ শুরু করেন। মি. আজাদ বলেন টেস্ট বাড়ালে
মৃদু ও সুপ্ত করোনাভাইরাস বের হয়ে আসবে, সেক্ষেত্রে সংক্রমিত ব্যক্তিরসংখ্যা যে কমেছে সেটা বোঝা যাবেনা। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি
এক, দুই বা তিন মাসে শেষ হবেনা বলছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। ‘‘ এটি দুই থেকে তিন বছর ধরে চলতে পারে, যদিও
সংক্রমণের মাত্রা একই হারে নাও থাকতে পারে। ’’ বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ও পরিস্থিতি সামাল দিতে কি কিি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার এবং এখন পর্যন্ত কি কি করা হয়েছে
তার একটা তালিকা তুলে ধরেন মি. আজাদ। *দুই হাজার চিকিৎসক ও পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগ হয়েছে। * স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ ্ওবং মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ করা হবে। * দীর্ঘস্থায়ী কোভিড-১৯
পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আসা হবে। * জেলা হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা দেওয়া হবে। * সকল সরকারি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন নেয়া হবে। * হাসপাতালে হাইফ্লোন্যাসাল ক্যানেলা, অক্সিজেন
কনসেন্ট্রটর দ্রুত সরবরাহ করা হবে। * পরীক্ষার কীট ও পিপিই সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি খাত যাতে যৌথভাবে এই দায়িত্ব পালন
করে সেটার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন মি. আজাদ।
উচ্চ রক্ত চাপ, ডায়বেটিস ও শ^াসকষ্ট আছে তাদের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি বলে তাদের আলাদাভাবে সাবধান থাকার কথা বলেন তিনি। (সুত্র বিবিসি
নিউজ)।
করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য কান্ডজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের আয়ুস্কাল নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তার অদূরদর্শী ও কান্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য মানুষকে
হতাশ করেছে। স্পর্শকাতর এসময় দায়িত্বশীল পদে থেকে কারো দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখা মোটেও সমীচীন নয়। গত ১৯ জুন সংসদ ভবন
এলাকার সরকারি বাস ভবন থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় একথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার যখন দিন রাত পরিশ্রম করে মানুষের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য নিয়মিত প্রয়াস
চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনা যোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত সাহস দিচ্ছেন। তখন সংখ্যা যে কমেছে সেটা বোঝা যাবেনা। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি
এক, দুই বা তিন মাসে শেষ হবেনা বলছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। ‘‘ এটি দুই থেকে তিন বছর ধরে চলতে পারে, যদিও
সংক্রমণের মাত্রা একই হারে নাও থাকতে পারে। ’’ বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ও পরিস্থিতি সামাল দিতে কি কিি
পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার এবং এখন পর্যন্ত কি কি করা হয়েছে তার একটা তালিকা তুলে ধরেন মি. আজাদ। *দুই হাজার চিকিৎসক ও
পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগ হয়েছে। * স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ ্ওবং মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ করা হবে। * দীর্ঘস্থায়ী কোভিড-১৯ পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আসা হবে। * জেলা হাসপাতালে আইসিইউ
সুবিধা দেওয়া হবে। * সকল সরকারি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন নেয়া হবে। * হাসপাতালে হাইফ্লোন্যাসাল ক্যানেলা, অক্সিজেন
কনসেন্ট্রটর দ্রুত সরবরাহ করা হবে। * পরীক্ষার কীট ও পিপিই সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি খাত যাতে যৌথভাবে এই দায়িত্ব পালন করে সেটার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন মি. আজাদ।
উচ্চ রক্ত চাপ, ডায়বেটিস ও শ^াসকষ্ট আছে তাদের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি বলে তাদের আলাদাভাবে সাবধান থাকার কথা বলেন তিনি। (সুত্র বিবিসি
নিউজ)।
করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য কান্ডজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের আয়ুস্কাল নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তার অদূরদর্শী ও কান্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য মানুষকে
হতাশ করেছে। স্পর্শকাতর এসময় দায়িত্বশীল পদে থেকে কারো দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখা মোটেও সমীচীন নয়। গত ১৯ জুন সংসদ ভবন
এলাকার সরকারি বাস ভবন থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় একথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার যখন দিন
রাত পরিশ্রম করে মানুষের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য নিয়মিত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনা যোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত সাহস দিচ্ছেন। তখন স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধতন কোন কোন কর্মকর্তার করোনার আয়ূস্কাল
নিয়ে অদুরদর্শী ও কান্ডজ্ঞনহীন বক্তব্য জনমনে হতাশা তৈরি করছে। তিনি বলেন, আমি এধরণের সমন্বয়হীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য থেকে নিজেদের
বিরত রাখার অনুরোধ করছি।
প্রসঙ্গত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ গত ১৮ জুন মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংএ অংশ নিয়ে
বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এক. দুই বা তিন মাসে শেষ হবেনা।
এটি দুই থেকে তিন বছর ধরে চলতে পারে, যদিও সংক্রমণের মাত্রা একই হারে নাও থাকতে পারে।
এ বিষয়ে দৈনিক প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি গত ১৯ জুন লেখেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ
মেডিকেল এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশিদ-ই-মাহবুব মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন,‘ মহা পরিচালকের উচিত ছিলো
মানুষকে আশার কথা, স্বপ্নের কথা শোনানো।’ ফেসবুকেও মহাপরিচালকের বক্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। একজন মন্তব্য করেছেন,
‘ডিজি হেলথ ভবিষ্যৎ বাণী দিলেন, আরো দুই তিন বছর থাকবে করোনা। কিন্তু সেটাকে নিয়ন্তণের কোন পথ বল্লেন না। এমনকি এর থেকে পরিত্রাণের কোন রাস্তাও তিনি দেখালেন না।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘দেশের মানুষের মধ্যে হতাশা ছড়ানো অথবা অন্ধকার দেখানোর জন্য তাঁকে নিশ্চয়ই বেতন দেওয়া হয়না। ’ অন্য একজন
লিখেছেন, ‘ .. এখন যখন হতাশাজনক পরিস্থিতি যখন সবাইকে আশার বাণী শোনানো উচিত , তখন আপনারা বলছেন হতাশার কথা। বিশে^র
প্রতিটি দেশ করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করছে। অনেক দেশ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে, অনেক চেষ্টা করছে। নিয়ন্ত্রণ হয়েছে এমন জায়গায় আবার সংক্রমণ ফিরে আসছে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থাও বলছে ,
করোনার সঙ্গে বসবাস করতে হবে। জনস্বাস্থ্যবিদদের অনেকে মনে করেন, কার্যকর কোন টিকা না আসা পর্যন্ত সংক্রমণ বন্ধ হবেনা। কিন্তু সেই
টিকার আশায় বিশে^র কোন দেশ হাত গুঁটিয়ে বসে নেই। বিশে^র কোন দেশ ভাগ্যের ওপর নিজেদের ছেড়ে দেয়নি।
করোনা পরিস্থিতি জানার জন্য বহু মানুষ প্রতিদিন বেলা আড়ইটায় টেলিভিশনের সানমে হাজির হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বেশ কিছুদিন যাবৎ সংবাদ বুলেটিন পড়ে শোনান। গত সপ্তাহে তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, প্রতিদিন
আক্রান্ত আর মৃত্যুর খবর পড়তে তার আর ভালো লাগছেনা। এদিন তাঁর সঙ্গে হাজির হন মহাপরিচালক। কিন্তু মহাপরিচালকের বক্তব্য মানুষকে আরো
আতঙ্কিত করে তুলেছে। (প্রথম আলো, ১৯ জুন-১০১০)। (চলবে) (লেখক:
সাংবাদিক ও কলামিস্ট)।
এবাদত আলী
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
সদস্য পাবনা প্রেসক্লাব।
মোবাইল ফোন নং ০১৭১২২৩২৪৬১