সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রাজনৈতিক দল ও বর্ষীয়ান নেতাদের কটাক্ষ করার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে প্রশাসন। ওই শিক্ষার্থীর নাম সাদিকুল ইসলাম (জি কে সাদিক)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং শাখা ‘ছাত্র ইউনিয়নের’ সাধারণ সম্পাদক।
সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশের মাধ্যমে তথ্যটি জানানো হয়েছে।
এত বলা হয়, সাদিক তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে বিভিন্ন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদসহ, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক দল সম্পর্কে অশ্লীল, ব্যাঙ্গাত্মক, আপত্তিকর, প্রতিহিংসামূলক ও নৈতিক মূল্যবোধ পরিপন্থি বক্তব্য ধারাবাহিক ভাবে উপস্থাপন করে চলেছে। তার প্রদত্ত স্ট্যাটাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে এবং যা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির কারণ হতে পারে। ফলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী তাকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না এ মর্মে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, সাদিক তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন। এতে সদ্য প্রয়াত অাওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম ও সরকারের সমালোচনায় আপত্তিকর ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিনি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার সমালোচনা করে বিভিন্ন পোস্ট দেন। তার এসব পোস্টের পর থেকেই শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে সাদিকের শাস্তি দাবি করে। ছাত্রলীগের দাবির প্রেক্ষিতে তার বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলামের বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির বিভিন্ন সংসদের নেতা-কর্মীরা।
এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল ও সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের যৌক্তিক সমালোচনা করলেই কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করে ভয় ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এরই ধারাবাহিকতায়, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জিকে সাদিককে অভিযুক্ত করে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা অনতিবিলম্বে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।
এবিষয়ে জি কে সাদিক বলেন, আমার কিছু ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে আমার যৌক্তিক অবস্থান তুলে ধরে কারণ দর্শাবো।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, জাতীর এ ক্রান্তিলগ্নে আমার শিক্ষার্থীর এমন কুরুচিপূর্ণ ও প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। সে এগুলো কেন বলেছে, কি জন্য বলেছে তার জবাব দিবে। আমরা ছাত্র উপদেষ্টাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটি রিপোর্ট জমা দিলে তার প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।