রওশন আরা শিলা,নওগাঁ প্রতিরিধিঃ- নওগাঁর আত্রাইয়ে করোনা ভাইরাসের কারণে অনিদিষ্টকালের জন্য সাপ্তাহিক হাট বন্ধ থাকায়
চরম বিপাকে পড়েছেন হাট –ইজাদাররা।হাট বন্ধ থাকার কারণে লাখ লাখ টাকা হারিয়ে পথে বসতে চলেছে ছোট-বড় হাট ইজাদাররা।
এমতাবস্থায় সরকারি অনুদান প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করছেন তারা। তা না হলে লাখ লাখ টাকা পুঁজি হারিয়ে সর্বশান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন ইজাদাররা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছোট-বড় মোট ১৭টি সাপ্তাহিক ও দৈনিক হাট বাজার রয়েছে। প্রতি বছর সরকার
এই সব হাট ও বাজার ইজাদার এর মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে আসছে।
কিন্তু বিশ্বব্যাপী মরণঘাতক করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশেও স্ববির হয়ে পড়েছে সবকিছু। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের
কারণে জন সমাগম বন্ধ করার লক্ষে সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল উপজেলার সকল সাপ্তাহিক হাট গুলো।
দৈনিক বাজার গুলো দিনের নির্দিষ্ট সময়ে বসলেও সে গুলোও বন্ধ ছিল সিংহভাগ সময়ে। আত্রাই উপজেলার হাট গুলোর মধ্যে
ঐতিহ্যবাহী ও বৃহত্তম হাট আহসানগঞ্জ হাট। বান্দাই খাড়া হাট, সমসপাড়া হাট, নওদুলী হাট, কাশিয়াবাড়ী হাট,পতিসর ধানের হাট, ভবানীপুর,ব্রজপুরহাট,এবং তিলাবাদুরী হাট। করোনা ভাইরাসের কারণে অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল এই হাট
গুলো। এত করে হাটের ইজাদাররা লাখ লাখ টাকা লোকসানের মূখে পড়েছেন। এ ছাড়াও হাট বন্ধ থাকায় কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত
বিভিন্ন কৃষি পন্যগুলো বিক্রি করতে না পারায় লোকসানে পড়েছেন।কারণ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা এই হাট গুলোতে এসেপণ্য কিনে বিভিন্ন জেলায় চালান করতেন।
আহসানগঞ্জ হাটের ইজাদার আবুল কালাম আজাদ
সাংবাদিকগনকে বলেন,সরকারি ইজারার মাধ্যমে আই টি ও ভ্যাট দিয়ে মোট কোটি ৫ লাখ টাকার মাধ্যমে এক বছরের জন্য
আহসানগঞ্জ এ হাটটি ইজারা নিয়েছি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে ১২টি হাট বসানো সম্ভব হয় নাই। সপ্তাহের একদিন এই হাটটি বসানো হতো। কাঠ, প্ট সহ অন্যান্য পণ্যের পাশা পাশি গরু ও ছাগল বিক্রি এই হাটের আয়ের প্রধান উৎস। গরু ও
ছাগলের জন্য অন্যতম এই হাট টি। এই হাট দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় হাট প্রতি আমার প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।
ইতি মধ্যেই সরকার কৃষি, গার্মেন্টসসহ অন্যান্য খাতেত কোটি কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষনা করেছেন কিন্তু সারা দেশের কয়েক লাখ হাট-বাজার ইজাদারদের জন্য কিছুই ঘোষনা করা
হয়নি। এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে হাট বাজার বন্ধ থাকার কারণে আমরা ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকা পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে চলেছি।সরকারী শর্র্ত মোতাবেক হাট বসলেও সরকারকে
রাজস্ব দিতে হয় আবার হাট না বসলেও রাজস্ব দিতে হচ্ছে।তাহলে আমরা কোথায় যাবো।
সরকারি ভাবে আমাদেরকে যদি কোন সহায়তা না দেওয়া হয় তাহলে পুঁজি হারিয়ে পরিবার- পরিজনকে নিয়ে ভিক্ষা করেও অন্ন জোটানো সম্ভব হবে না। একই বক্তব্য ব্যক্ত করেন ভবানী পুর ও
বান্দাই খাড়া ও দৈনিক সাহেবগঞ্জ হাট-বাজার ইজাদার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। এ বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাট- বাজার ইজাদার
সরকারের কাছে দাবী জানিয়ে বলেন যে কয়েকদিন হাট-বাজার বন্ধ
ছিল সে কয়েক দিনের ডাকের অংক বা টাকার পরিমান অনুসারে
মওকুফ অথবা সরকারি প্রণোদনা প্রদান করার জন্য অনরোধ জানান।
এবিষয়ে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ছানাউল ইসলাম বলেন, সারা দেশে একই অবস্থা ।আমি মনে করি সরকার অবশ্যই
কেন্দ্রীয় ভাবে হয়তো হয়তো এ বিষয়ে কোন না কোন সিদ্ধান্ত
নিবেন। এ বিষয়ে আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অবহিত করবো যাতে হাট ইজাদাররা কোন বড় ধরনের ক্ষতি গ্রস্থ না হয়।
আত্রাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ এবাদুর রহমান বলেন, হাট ইজাদাররা চরম ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে । তাদেরকেও
প্রণোদনার আওতায় আনা উচিত বলে মনে করি তা না হলে তাদেরঅনেকেই পুঁজি হারিয়ে পথে বসবে। আমি এ বিষয়ে অবশ্যই সরকারের নীতি নির্ধারকদের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য অনুরোধ করছি।