বেদে সম্প্রদায়ের মানুষগুলো বেশিরভাগ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে সাপ খেলা দেখায় এবং নিজেদের পেটের তাগিদে জেলা থেকে জেলা ভাসমানভাবে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু প্রায় ৩ মাস আগে এমন একটি দল করোনা দুর্যোগে আটকা পরে যায় বগুড়ায় বর্তমানে পুরান বগুড়া এলাকায় অস্থায়ী পলিথিন এর ঘর বানিয়ে কোনরকম রাত্রি যাপন করছেন। বেশকিছু দিন একে অপরের থেকে সাহায্য নিয়ে চললেও লকডাউনে আর তো পারছে না দুই বেলা দুমুঠো খাবার যোগাড় করতে। বগুড়ায় আটকে পরা বেদে সম্প্রদায়ের এমন ৩৪টি পরিবারের প্রায় দেড় শতাধিক অসহায় মানুষের অসহায়ত্বের কথা জানতে পারে জেলা পুলিশের মানবিক পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার)। সাথে সাথেই তার দিকনির্দেশনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরান বগুড়া এলাকায় ঐ সম্প্রদায়ের অস্থায়ী বাসস্থানে সপ্তাহব্যাপী খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুটে যান সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী এবং বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এস.এম বদিউজ্জামান। প্রতিটি পরিবারকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রদান করা হয় বেশ কিছুদিন চলার মতো খাদ্যসামগ্রী। জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র সনাতন চক্রবর্তী জানান, করোনা দুর্যোগে একজন পুলিশ সুপার হিসেবে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে বগুড়ায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে আলী আশরাফ ভূঞা। শুধু পুরান বগুড়া নয় এর আগে শেরপুর এলাকাতেও আটকে পরা বেদে সম্প্রদায়ের এমন ৩০টি পরিবারের মাঝেও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে করোনা মোকাবেলায় বগুড়াতে শেষ পর্যন্ত জেলা পুলিশের প্রতিটি সদস্য মাঠে থাকবেন বলে জানান জনবান্ধব এই পুলিশ কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, এর আগে গত মঙ্গলবার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আইসোলনে থাকা করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য জেলা পুলিশ বগুড়ার পক্ষে এসপি আলী আশরাফ পাঠিয়েছেন এক ঝুড়ি ফল। শুধু তাই নয় সারাদেশে সুপরিচিত বাউল শিল্পী সুকুমার বাউল এর করোনা দুর্যোগে অর্থনৈতিক দূরাবস্থার কথা জানতে পারে শহর থেকে ৫০ কি.মি দূরে তার বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুটে গিয়ে তাকে সহযোগিতার মানবিক হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এই মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা। শুরু থেকে এমন শত শত উদাহরণ সৃষ্টি করে নিরবে ও নিভৃতে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার)।