করোনা ভাইরাসের মরণ থাবায় সারাবিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। এর প্রভাব থেকে বাদ যায়নি আমাদের প্রিয় জন্মভুমি বাংলাদেশও। করোনা ভাইরাসের কারনে দেশের সকল সরকারী-বেসরকারি স্কুল কলেজের পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে সকল কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুলগুলো।
সরকারিভাবে বিভিন্ন পেশার মানুষকে বিভিন্নভাবে সাহায্য প্রদান অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু কোন সহযোগীতা না পেয়ে গাবতলী উপজেলায় ৫৫টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ৬শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করছে। পারছে না তারা কারো কাছে হাত পাততে বা সাহায্য চাইতে বা দিন মজুরের কাজ করতে। এবছরে ১৮মার্চ হতে সরকারি ঘোষনা মধ্যদিয়ে বন্ধ হওয়া এসকল স্কুলগুলো শিক্ষক-কর্মচারীরা বাড়িতে বসে বেকার জীবন যাপন করছে। অথচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের বেতন-ভাতা যথা নিয়মে পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষকরা পারছেন না কোচিং ও ব্যক্তিগত ভাবে প্রাইভিট পড়াতে। গাবতলী উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন সাধারন সম্পাদক গাবতলী আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক রায়হানুল হক রানা জানান, কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুলগুলো বন্ধ হওয়া কারনে ৫৫টি স্কুলে ৬শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তারা মহান আল্লাহ দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছে। কবে করোনা ভাইরাস থেকে দেশ মুক্ত হবে। স্কুল-কলেজ খুলবে। তিনি আরো জানান, তাদের সামান্য গচ্ছিত পুঁজি ১মাসের মধ্য শেষ হয়ে যাওয়া কারনে বাবা-মা এবং স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে সংকটে ও সমস্যায় পড়েছে। এই অবস্থা কতদিন থাকবে মহান আল্লাহই ভালো জানেন।
শিক্ষকদেরকে সমাজের মানুষ গড়ার কারিগর বলা হয়। অথচ এই শিক্ষক সমাজ আজ দারুন অভাব ও অসহায়ত্ব স্বীকার হচ্ছে। পারছেনা দিন মজুরের কাজ করতে। পারছে না রিক্সা-ভ্যান চালাতে। গাবতলী উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন সভাপতি শফিকুল ইসলাম দুলাল বলেন, শিক্ষক সমাজ কারো কাছে হাত পাততে পারে না। সে জন্য সরকারের কাছে তাদের দাবি’সহ সরকারি প্রনোদনা আর্থিক সহযোগিতা বা সুদ বিহিন ঋণ পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ নিকট হস্তক্ষেপ কামরা করেছেন তারা। সুদ বিহিন ঋণ পেলে তারা হয়তো ছোট ব্যবসা। খামার ও বিভিন্ন মৌসুমি ব্যবসা করে যতদিন স্কুল বন্ধ থাকে ততদিন তারা তাদের সংসার চালিয়ে নিতে পারবেন।
মানবেতর জীবন যাপন করা কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুলের ৬শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী জন্য সরকারি কোন সহযোগীতা আছে কি-না জানতে চাওয়া হলে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রওনক জাহান জানান, গাবতলী উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন পক্ষ থেকে ১২মে একটি আবেদন আমার কাছে দেয়া হয়েছে। তাদের জন্য বিশেষ কোন বরাদ্দ নেই। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান’কে তিনি তাদের বিষয়টি জানাবেন, তাদের বরাদ্দ থেকে স্ব-স্ব ইউনিয়নে অর্ন্তভুক্ত কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের সাধ্যমত সহযোগীতা করার জন্য। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরো জানান, ঋণ পেতে হলে ব্যাংকের নিয়ম মেনে ঋণ নিতে হবে। সুদ বিহিন ঋণ বিষয়ে সরকারি কোন নির্দেশনা নেই। গাবতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাহিদা আক্তারের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের বিষয়ে আমাদের কাছে কোন নির্দেশ নেই। আমাদেরকে এ ধরনের কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। সরকারি ভাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকা চাওয়া হলে তা প্রস্তুত করে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।