বড়াইগ্রামের কচুগাড়ী ঝাউবুনা বিলে আব্দুল হালিম নামে এক ব্যক্তি তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছেন। পুকুর খনন করে রাস্তা দিয়ে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে জনসাধারণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গত ১৫ দিন ধরে রাস্তা দিয়ে ৭-৮টি ট্রাক্টরে অনবরত মাটি বহন করায় সম্প্রতি নির্মিত এইচবিবি রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে যাওয়াসহ এর স্থায়ীত্ব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া নয়াবাজার থেকে জোনাইল গামী পিচ ঢালাই রাস্তাটিও একই ভাবে বিনষ্ট হচ্ছে।
অপরদিকে, সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব রাস্তায় পড়ে থাকা মাটি কাদায় পরিণত হয়ে ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
জানা যায়, আব্দুল হালিম গত বছর কিছু মাটি কেটে প্রায় তিন ফসলি ৫ বিঘা জমির পাড় বেধে রাখেন। এবার করোনা মোকাবেলায় প্রশাসনের ব্যস্ততার সুযোগে এক্সকেভেটর দিয়ে পুকুর খনন করে চলাচল নিষিদ্ধ ট্রাক্টর দিয়ে সেই মাটি ইটভাটাসহ আশেপাশে বিক্রি করছেন। এতে মাত্র দুই মাস আগে নির্মিত প্রায়
এক কিলোমিটার এইচবিবি রাস্তা বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে যাচ্ছে। এ রাস্তার প্রায় পুরোটুকুই খালের ধারে হওয়ায় মাটি বোঝাই ট্রাক্টরের চাপায় রাস্তা ভেঙ্গে খালের ভেতর নেমে যাচ্ছে।
শুক্রবার সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পুরোটাই মাটি চাপা পড়ে এটি পাকা রাস্তা না কাঁচা বোঝা যাচ্ছে না। ট্রাক্টরের চাপায় এইচবিবি রাস্তাটির নানা স্থানে ইট গুড়া হয়ে যাচ্ছে, কোথাও বা ভেঙ্গে খালে নেমে যাচ্ছে।
এ সময় কিছু লোকজনকে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল থেকে মাটি তুলে রাস্তার পার বেঁধে দিতে দেখা যায়। স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কাটার কাজে ব্যস্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, কচুগাড়ি গ্রামের লোকজনের পাশ^বর্তী গুরুদাসপুরসহ বড়াইগ্রাম ও জোনাইল ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগের কোন পাকা রাস্তা ছিল না। সম্প্রতি আব্দুল কুদ্দুস এমপি’র বরাদ্দে রাস্তাটি এইচবিবিকরণ করায় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। কিন্তু এখন আব্দুল হালিম পুকুর কেটে ট্রাক্টরে করে মাটি বিক্রি করায় রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষ,
কিছু বলতে পারি না। তাই নিজেরাই মাটি কেটে রাস্তাটি টিকানোর চেষ্টা করছি। একই ভাবে ট্রাক্টর চলাচল ও মাটি পড়ে গুরুদাসপুরের নয়াবাজার থেকে
বড়াইগ্রামের জোনাইল বাজারগামী পাকা রাস্তাটিতে যত্রতত্র মাটি পড়ে রাস্তার স্থায়ীত্ব নষ্ট হওয়াসহ প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানান স্থানীয়রা।
কচুগাড়ি গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, রাস্তাটি এইচবিবিকরণ করায় আমাদের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হয়েছিল। কিন্তু যেভাবে রাতদিন মাটি টানা ট্রাক্টর চলাচল করছে, তাতে রাস্তা ৬ মাসও টিকবে না।
এ ব্যাপারে পুকুর খননকারী আব্দুল হালিমের কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রশাসনের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়েই পুকুর কাটছি।
তাছাড়া সরকারী রাস্তা নষ্ট হলে সরকার আবার রাস্তা করে দেবে, এলাকাবাসীর তো তাতে কিছু বলার নাই। এ সময় প্রশাসনের কার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে পুকুর কাটছেন জানতে চাইলে তিনি তা বলতে রাজি হননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ জানান, এভাবে পুকুর খনন করে রাস্তা নষ্ট করে মাটি বিক্রি করার এখতিয়ার কারো নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।