ইয়ানূর রহমান : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টারে আরও ১১জনের নভেল করোনাভাইরাসের জীবাণু মিলেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জেলার মোট ৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে ১১ রোগী কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। এরমধ্যে যশোরে ৮ নমুনায় ১ জন স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৪ জন, ঝিনাইদহে ৩৯ নমুনায় ৪ জন, নড়াইলের ২০ নমুনায় ৩ জন রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেনোম সেন্টারের সহকারী পরিচালক প্রফেসর ড.ইকবাল কবির জাহিদ জানান, এদিন মাগুরা জেলার ১১ জনের নমুনা পরীক্ষা হলেও সবগুলোর ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। যশোরে আক্রান্তদের মধ্যে ৮ জনের অবস্থা গুরুতর। বাকিরা শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনায় সন্দিগ্ধ চিকিৎসাধীন ৩ জনের মধ্যে ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, যশোর জেলায় আক্রান্ত ৪ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় ১জন, কেশবপুর উপজেলায় ১ জন ও চৌগাছা উপজেলায় ২ জন। এদের মধ্যে পূর্বে করোনায় আক্রান্ত রোগীর স্বজন ৩জন। আরেকজন কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মী। তারা সকলেই সংস্পর্শে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যশোর জেলায় এই পর্যন্ত মোট ৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। এরমধ্যে ২ জন চিকিৎসক ও ১১ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। সিভিল সার্জন আরো জানান, ৩৪ জনের মধ্যে গুরুতর ৮ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে চিকিৎসা চলছে। এরমধ্যে যশোর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ৩ জন, কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ জন, মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন ও শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন রয়েছেন। বাকি ২৬ জনের নিজ বাড়িতে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তারা শারিরীকভাবে সুস্থ। তবুও অন্যদের সংস্পর্শ এড়াতে প্রত্যেকের বাড়ি লকডাউন করা আছে।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন আরো জানান, সোমবার নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে যশোর জেলার ৩৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি জানিয়েছেন, চৌগাছায় নতুন যে দুই জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা পূর্বে আক্রান্ত স্কুল ছাত্রের নানা ও নানী। তাদের বাড়ি আগে থেকেই লকডাউন করা আছে।
যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মাউদ জানান, লেবুতলায় আক্রান্ত ওই নারীর কাছ থেকেই ওই ইউনিয়নে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। তিনি গোপালগঞ্জ বেড়াতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।কিন্ত নিজ বাড়ি ফিরে এসে বিষয়টি গোপন করেছিলেন। দ্বিতীয় বারের পরীক্ষায় তার আবারো করোনা পজেটিভ হয়েছে। ওই নারীর কাছ থেকে আক্রান্ত হয়েছেন তার ছেলে ও ছেলের দুই বন্ধু। তিনি আরো জানান, রেলগেটে আক্রান্ত যুবকের বাড়ি শনাক্ত করে সোমবার লকডাউন করা হয়েছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, সোমবার পর্যন্ত হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে মোট ৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে ১ জনের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট রয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।#