গত বছর এই মুহূর্তে জমে উঠেছিল শাহজাদপুরের কাপড়ের হাট বিক্রি ভাল, তাই খুশীর আমেজে ছিলেন কাপড় ব্যবসায়ী ও তাঁতীরা । সাধারনতঃ দুই ঈদকে সামনে রেখেই জমে ওঠে শাহজাদপুরে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ দেশীয় শাড়ী কাপড়ের হাট । এই অঞ্চলের তাঁতের শাড়ীর পাশাপাশি থ্রি পিস, লুঙ্গী, গামছাসহ থান কাপড়ও বিক্রি হয় এই হাটে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো এবার ঈদুল ফিতর প্রায় সমাগত হলেও মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে শাহজাদপুর উপজেলা প্রশাসন জনগনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে গত ২৫ মার্চ, ২০২০ তারিখে শাহজাদপুর কাপড়ের হাটসহ সকল দোকানপাট বন্ধ ঘোষনা করা হয় । শুধু মাত্র কাঁচাবাজার ও মুদিখানা সকাল থেকে দুপুর ১২ ঘটিকা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয় । শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে প্রতি সপ্তাহে কোটি কোটি টাকার কাপড় কেনাবেচা হলেও ঈদের হাটগুলোতে তা বেড়ে দাঁড়ায় কয়েক গুনে । শাহজাহদপুর কাপড় হাট তাঁত কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক মোঃ হায়দার আলী বলেন মহামারী করোনার কারনে হাট বন্ধ থাকায় শত শত কোটি টাকার ব্যবসা বন্ধ রয়েছে । কয়েক লক্ষ তাঁতী বেকার হয়ে পড়েছে, মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে । তিনি আরো বলেন বেশীর ভাগ তাঁত মালিক ব্যাংক ঋন নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন তাঁরা এবার বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপে পড়বেন ঋনের কিস্তি দেওয়া তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়বে । করোনা পরবর্তী সময়ে স্বল্প সুদে ঋন সুবিধা পাওয়ার ব্যাপারে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে । তিনি মনে করেন এই মুহূর্তে এই শিল্পকে ও এই শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে সকল কারখানা সকাল থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত চালু রাখার ব্যাপারে প্রশাসনের অনুমতি চান । এবার ঈদ সামনে হাট যদি না বসে বিক্রিবাট্রা না হয় তাহলে শুধু শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটকে কন্দ্রে করেই লেনদেন বন্ধ থাকবে কয়েক হাজার কোটি টাকার । শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটকে কেন্দ্র করে বেলকুচি চৌহালী কামারখন্দ উল্লাপাড়া বেড়া সাঁথিয়া পাবনা দোগাছিতে হ্যান্ডলুম পাওয়ারলুম স্ক্রিনপ্রিন্ট ডাইং এমব্রয়ডারীসহ বিভিন্ন সহায়ক শিল্প কারখানার প্রায় কয়েক লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে । ঈদকে সামনে রেখে শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটে তাঁতীরা যেখানে তাদের পসরা সাজিয়ে বসে থাকার কথা আর কাপড় কিনতে আসার কথা হাজার হাজার ব্যবসায়ীর সেখানে এখন সুনসান নিরবতা নেই কোন প্রাণচঞ্চল্য
উল্লেখ্য শাহজাদপুর কাপড়ের হাট শুরু হওয়ার আগে কাপড় ব্যবসায়ীরা যেতেন ঘাটাবাড়ী হাট ও পাবনার আতাইকুলা হাটে। স্থানীয় মানুষের উদ্যোগে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা পায় শাহজাদপুর কাপড়েরর হাট । এ হাটে মূলতঃ পাইকারী বিক্রি হয় তাঁতের শাড়ী লুঙ্গী গামছা থ্রি পিছ রং ও সুতা । সপ্তাহে চারদিন হাট বসে শনি রবি মঙ্গল ও বুধবার। সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকার শাড়ী লুঙ্গী গামছা ও থ্রি পিছ এবং প্রায় ২৫ কোটি টাকার রং ও সুতা বিক্রি হয় । শাহজাদপুর পৌরসভা প্রায় এক কোটি টাকার উপরে পায় এই হাট ইজারা দিয়ে ।