হট লাইনে ফোন করে ত্রাণ সহায়তা চাওয়ায় চেয়ারম্যান কর্তৃক কৃষককে মারপিট,চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

নাটোরের লালপুর উপজেলার ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক কৃষককে মারপিট করায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু।
থানাসূত্রে জানাযায় বুধবার (১৫ এপ্রিল) লালপুর উপজেলার আঙ্গারীপাড়া গ্রামের মৃত চয়েন উদ্দিন প্রাং এর পুত্র শহিদুল ইসলাম (৫৫) একজন কৃষক। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ায় ত্রাণ সহায়তার জন্য হটলাইন “৩৩৩” নম্বরে শুক্রবার (১০এপ্রিল) বিকেলে ফোন করে ত্রাণ সহায়তা চাইলে ০৯নং অর্জুনপুর বরমহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার সহ ০৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজা (৩৫) এবং আঙ্গাড়ীপাড়া গ্রামের হযরত আলীর পুত্র রুবেল (৩০) কৃষক শহিদুল ইসলামকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে হটলাইনে ফোন করে ত্রান সহয়তা চাওয়ায় মারপিট করেন । শহিদুল ইসলামের পুত্র শাহিন আলী জানান মারপিটের কারণে তার পিতা শহিদুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যান। এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৫এপ্রিল বুধবার লালপুর থানায় হাজির হয়ে চেয়ারম্যানসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০৯, তারিখ-১৫/০৪/২০২০ইং,ধারা-৩৬৫/৩৪২/৩২৫/৫০৬ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
সরকারি সহায়তার হটলাইন নম্বর ৩৩৩ এ ফোন করে ত্রাণ চাওয়ায় নাটোরের লালপুরে এক কৃষককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (১২ এপ্রিল) এ ঘটনা ঘটে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, লালপুরের ৯ নং অর্জুনপুর-বরমহাটি(এবি) ইউনিয়নের আঙ্গারিপাড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলামসহ গ্রামের প্রায় ৩০০জন করোনা ভাইরাসের এ সময়ে বেকার হয়ে পড়ে। একদিন গণমাধ্যমে কৃষক শহিদুল জানতে পারেন ৩৩৩ নাম্বারে ফোন করলে খাদ্য সহায়তা পাওয়া যায়। এরপর গত ১০ এপ্রিল ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে তিনিসহ গ্রামের সবার জন্য খাদ্য সহায়তা চান । সেখান থেকে খাদ্য সহায়তার আশ্বাস মেলে। ৩৩৩ এর মাধ্যমে অবগত হয়ে ইউএনও চেয়ারম্যানকে ঐ এলাকায় ত্রাণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর দুইদিন পর গত ১২ এপ্রিল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার চৌকিদার দিয়ে শহিদুলকে ডেকে এনে নিজেই মারধর করেন। ৩৩৩ নম্বরে ফোন করায় এলাকার সম্মান গেছে বলে ঐ কৃষককে ধমক দিয়ে বিষয়টি কাউকে না বলার হুসিয়ারি দেন।
পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ত্রাণ চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে একটু উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতে বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে। কৃষককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কৃষককে মারধরের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়ায় চেয়ারম্যানকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এটা একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। চেয়ারম্যান বিষয়টি নিস্পতির কথা বললে তা তিনি মিথ্যা বলেছেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কৃষক জানান টিভি স্ক্রিনে বিজ্ঞাপনে সরকারি সহায়তার হটলাইন নাম্বার ৩৩৩ দেখে আমি সহ এলাকাবাসীর ত্রাণ সামগ্রী না পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছি, এরপরে চেয়ারম্যান আমাকে ডেকে মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানের লোকজনের হুমকির মুখে আছি। এই মূহুর্তে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত আছে।