শার্শায় জমজমাট মাদকের ব্যবসা বেপরোয়া মাদক কারবারিরা, করোনা ঝুঁকিতে সীমান্তবাসী

ইয়ানূর রহমান : করোনা দূর্যোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শার্শা উপজেলার মাদক কারবারিরা। দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে তারা তাদের মাদকের কারবার। লক ডাউনেও থেমে নেই তাদের মাদকের ব্যবসা। লক ডাউনে মোটরসাইকেল চালানোর সুবিধায় তারা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মাদকের কারবার। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এসব মাদক দেশে আসায় করোনা ঝুঁকিতে আতঙ্কগ্রস্থ সীমান্তবাসীরা। 

আজ রবিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ১১টার সময় যশোরের শার্শা বাগআঁচড়া গালর্স স্কুলের সামনে থেকে ৬০ বোতল ফেনসিডিল ও একটি পালসার মোটর সাইকেলসহ রনি বাবু (২৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ।এসময় রজব আলী নামে অপর এক পাচারকারী  পালিয়ে যায়।
আটক রনি শার্শার মহিশাডাঙ্গা গ্রামের মিলন হোসেনের ছেলে ও পলাতক রজব আলী তমিজ উদ্দীনের ছেলে।
পুলিশ জানায়,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, দুজন মাদক ব্যবসায়ী ফেনসিডিলের একটি চালান নিয়ে বাগআঁচড়া বাজারের গার্লস স্কুলের সামনে অবস্থান করছে। এমন খবরে সেখানে অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেলসহ রনিকে আটক করা হয়। পরে মোটরসাইকেলের ভিতরে বিশেষ কায়দায় লুকিনো ৬০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়। এসময় তার সহযোগী রজব কৌশলে পালিয়ে যায়। 
বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের (ওসি) উত্তম কুমার জানান, আটকের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা দিয়ে শার্শা থানায় প্রেরন করা হয়েছে।

এদিকে, স্থানীয়রা জানান, করোনা দূর্যোগে এমনিতে পরিবার পরিজন নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তায় আছি। দেশের যে হাল, কখন কি হয়। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদিনই গৃহ বন্দী আছি করোনা প্রতিরোধে। প্রতিদিনের রোজকারের চিন্তা না করে, দুমুঠো খাবারের কথা না ভেবে সবাই নিজ ঘরে অবস্থান করছি। সেখানে ভারত থেকে এভাবে ফেনসিডিল আসাতে সীমান্তে করোনা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। কারণ, করোনা ভাইরাস যেখানে বিশ্বব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করেছে, ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের ২০৩টি দেশে। লক ডাউন করা হয়েছে অনেক দেশ। প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনার ভয়াবহতায় ভারত সরকার অনেক আগেই লক ডাউন করেছে নিজেদের দেশকে। সেখানে ভারত থেকে চোরাই পথে মাদক আসা ঝুঁকিপূর্ণ একটা ব্যাপার। কারণ এভাবে মাদকের কারবার চললে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা গুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা। তাই তারা প্রশাসন সহ সকল মহলের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান। আর করোনায় লক ডাউন ঘোষণার পরও কিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে দেশে মাদকের চালান প্রবেশ করছে তা নিয়েও এলাকাবাসী প্রশ্ন তোলেন। 
উল্লেখ্য, প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে গত তিনদিনে শার্শা ও বেনাপোলে ১৯৬ বোতল ফেনসিডিল ও দুটি মোটরসাইকেল সহ ২ মাদকব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা। আর পলাতক রয়েছে ৩ জন মাদকব্যবসায়ী। গত ১০ এপ্রিল শুক্রবার রাতে শার্শার গোগা সীমান্ত থেকে বিজিবি সদস্যরা ৪৯ বোতল ফেনসিডিল ও প্রেস লেখা একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে। এসময় কৌশলে মাদকব্যবসায়ীরা জুতা ও হেলমেট ফেলে পালিয়ে যায়। এঘটনায় শামীম হোসেন নয়ন ও মাহবুব ইসলামের নামে শার্শা থানায় পলাতক আসামি হিসাবে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। একই রাতে সাদিপুর সীমান্ত থেকে ৮৭ বোতল ফেনসিডিল সহ সাগর নামে এক মাদকব্যবসায়ী আটক করে বিজিবি সদস্যরা।