নির্ধারিত সময়ের একদিন আগে ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি) এর সুবিধাভোগীকে নির্ধারিত সময়ের একদিন আগে চাল দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীর বাগমারার বড়বিহানালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে রাতভর থানায় আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় বিকেলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (৪ এপ্রিল) রাতে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল হোসেন ভিজিডির সুবিধাভোগী পাঁচ নারীর স্বামীকে নিয়ে তাঁর কাছে যান। করোনা ভাইরাসের সংকটের কারণে তাঁরা কষ্টে আছেন এবং ঘরে খাবার নেই বলে জানান। তাই তাঁদের নির্ধারিত সময়ের একদিন আগে ভিজিডির বরাদ্দ চাল দেওয়ার অনুরোধ করেন। সোমবার (৬ এপ্রিল) ভিজিডির চাল বিতরণের কথা ছিল। তাঁদের অনুরোধে চেয়ারম্যান রাতেই তাঁদের পরিষদে ডেকে নিয়ে চলতি মাসের বরাদ্দ দেয়া ভিজিডির তালিকায় স্বাক্ষর নিয়ে একবস্তা (৩০ কেজি) করে চাল দিয়ে দেন। এর আগে তাঁদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কাগজে প্রাপ্তিস্বীকারের স্বাক্ষর গ্রহণ করেন। এদিকে চাল নিয়ে ফেরার পথে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন কর্মী সুবিধাভোগীদের চ্যালেঞ্জ করেন। এসময় নেতাদের পক্ষে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিডি চাল পাচারের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের কাছে ফোন করেন। তিনি বিষয়টি দেখার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে জানালে রাতেই পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিষদের গুদামঘর সিলগালা করে দেন এবং চেয়ারম্যানকে ধরে থানায় নিয়ে আসেন। রাতভর থানায় আটকের পর বিকেলে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুবিধাভোগী ওইসব ব্যক্তিদের বক্তব্য গ্রহণ করেন। তবে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সুবিধাভোগী বড়কয়া গ্রামের বাসিন্দা নিমাই চন্দ্র, আবদুল মজিদ, বিদ্যুৎ, সজিব ও শিতু চন্দ্র বলেন, তাঁদের স্ত্রীরা ভিজিডির সুবিধাভোগী। চলতি মাসে বরাদ্দ ৩০ কেজি চাল সোমবার বিতরণের কথা ছিল। তবে করোনাভাইরাসের সংকটের কারণে তাঁরা বেকার হয়ে পড়েন। ঘরে কোনো খাবারও ছিল না। নিরুপায় স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে চালগুলো একদিন আগে নিয়ে ফিরতে গিয়ে বাঁধার মুখে পড়েন। ইউপি সদস্য আবুল হোসেন ও পরিষদের সচিব রেজাউল করিম বলেন, তাঁদের স্ত্রীরা ভিজিডির সুবিধার তালিকাভূক্ত। চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মিলন বলেন, তিনি রাজনৈতিভাবে বিএনপির সমর্থক। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে সুবিধা আদায় করতে না পেরে হেনেস্থা করার জন্য এমন অভিযোগ করেছেন। ১৫০ কেজি চাল পাচার করা হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয় বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তবে রাতের বেলায় চাল গুলো বিতরণ করা ঠিক হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহমেদ বলেন, রাতের বেলায় চালগুলো বিতরণে লোকজনের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে চেয়ারম্যানকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়াতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।