পাবনার রাজনৈতিক অঙ্গনে রফিকুল ইসলাম বকুল এক আলোকিত নাম। ছাত্রনেতা থেকে জননেতা – ছোট থেকে বড়। সকল ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অসম্ভব জনপ্রিয়। আলোচনা এবং সমালোচনার উর্ধে উঠে সকল মত এবং পথের মানুষের কাছে তিনি ছিলেন অতিপ্রিয় একজন মানুষ । নেতা-কর্মীর কাছে তিনি ছিলেন নির্ভরশীল এক রাজনৈতিক অভিভাবক। তাঁর জীবন যাপন ছিল খুবই সাধারন। সৎ, নির্ভিক এবং ধার্মিক হিসেবেও মানুষের হৃদয় জুড়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। তাইতো ভালোবেসে সবাই তাঁকে গুরু বলে ডাকতেন।
রফিকুল ইসলাম বকুল তাঁর পঞ্চাশ বছর জীবনকালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের দুই মেয়াদে সাধারন সম্পাদক ছিলেন। প্রায় ১৫ বছর পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। রাজনৈতিক মেরুকরনে বিপরীত মুখী রাজনীতিতে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বিএনপি’র পাবনা জেলা সভাপতি হয়েছিলেন । উভয় দল থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এসব কিছুর চাইতে জীবনের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাবনা টাউন হল মাঠে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক। ২৮ ও ২৯ মার্চ পাবনায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধের অন্যতম নেতৃত্ব প্রদানকারী বীর যোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের নয়মাস পাবনায় মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব প্রদানকারী অন্যতম প্রধান সংগঠক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল ১৯৪৯ সালের ২৯ জুন পাবনা শহরের দিলালপুর মহল্লায় তাঁর নানার বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম নজিবর রহমান। মাতার নাম রাবেয়া খাতুন। দাদার বাড়ী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং নানার বাড়ী পাবনা শহরের দিলালপুর মৌজায়। নানার পরিবার অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত রাজনৈতিক পরিচয় বহন করে। আপন খালু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ। আপন বড়ভাই শাহজাদপুরের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মুকুল। তাঁর আপন খালাতো ভাই পাবনা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল ইসলাম বিশু । তাঁর পাড়ায় বাল্যবন্ধু ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা হলেন, সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইকবাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমত, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইলিয়াস সহ প্রমুখ। এমন রাজনৈতিক বলয়ে অবস্থান করে রাজনীতি নাকরে কি থাকা যায়? যদিও ছোটবেলা থেকে খেলাধুলা ও শরীরচর্চা এগুলোর উপর বেশী ঝোঁক ছিল।
রফিকুল ইসলাম বকুল ১৯৬৭ সালে পাবনা জেলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হন। ৬৮ সালে কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে ব্যায়ামাগার সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এরপরই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। ৬৮/৬৯ সালের উত্তাল গণআন্দোলনে তাঁর ভূমিকা সবার নজরে আসে। ১৯৬৯ সালে সম্মেলনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। সভাপতি নির্বাচিত হন আতাউল হক হকু। পরের বার ৭০ সালের সম্মেলনে সাধারন সম্পাদক পদে পুনঃ র্নিবাচিত হন। সেবার সভাপতি হন আব্দুস সাত্তার লালু। এটাই মুক্তিযুদ্ধকালীন ছাত্রলীগের কমিটি। ঐ সময়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিদ্ধান্তে পাবনায় আহমেদ রফিক, আতাউল হক হকু, রফিকুল ইসলাম বকুল এবং মোঃ ইকবাল নিউক্লিয়াস বা স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য মনোনীত হন।
১৯৭১ এর উত্তাল মার্চ মাস। ১ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলো। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হলো। ৩ মার্চ ঢাকা পল্টন ময়দানে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষনা করা হলো। ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দান থেকে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষন দিলেন। গোটা দেশের ন্যায় পাবনাতেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ৮ মার্চ থেকে পাড়া মহল্লায় স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদ গঠন শুরু হয় । ১২ মার্চ থেকে পাবনায় তরুন যুবকদের সশস্ত্র ট্রেনিং শুরু হলো। বাড়ী বাড়ী গিয়ে বন্দুক সহ দেশীয় অস্ত্র সংগ্রহ শুরু করা হলো। তীর ধনুক, লাঠি, ফালা এমনকি স্থানীয়ভাবে বোমা বানানো শুরু করা হয়। এসব কিছুতেই রফিকুল ইসলাম বকুলের ভূমিকা ছিল উল্লেখ করার মত। এছাড়া প্রতিদিন মিটিং মিছিল ছিল আবশ্যক।
১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ ছিল পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবস। এই দিবসে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সারাদেশে স্বাধীন বাংলার উত্তোলন কর্মসূচী ঘোষনা করে। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক পাবনায় হাজার হাজার ছাত্র শহরে জমায়েত হতে থাকে। সেদিন সকালে বিশাল মিছিল নিয়ে ছাত্র নেতৃবৃন্দ এডওয়ার্ড কলেজের শহীদ মিনারে প্রথম পতাকা উত্তোলন করে। সকাল ১১ টায় পাবনা টাউন হল মাঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর পাবনার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিকালে পাবনা পুলিশ লাইন মাঠে সেচ্ছাসেবক বাহিনীর কুচকাওয়াজ মধ্যে দিয়ে সর্বশেষ পতাকা উত্তোলন করা হয়।
১৯৭১ এর ২৬ মার্চ পাকিস্তান বাহিনী পাবনায় দখল নেয় । সংসদ সদস্য এড. আমিন উদ্দিন, ডাঃ অমলেন্দু দাক্ষী, সাঈদ উদ্দিন তালুকদার সহ প্রায় শতাধিক লোককে আটক করে । পাবনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক নূরুল কাদের খান, পুলিশ সুপার আবদুল গাফফার পাকিস্তানী পক্ষ ত্যাগ করে। তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের সাথে যোগ দেন। পুলিশ লাইনের অস্ত্রগার খুলে দেওয়া হয়। জেলখানা খুলে দেওয়া হয়। ২৭ মার্চ রাতে পাকিস্তানের সৈন্যদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়। ২৮ মার্চ দুপুরের মধ্যে শহরের টেলিফোন অফিসে অবস্থানরত সমস্ত পাকিস্তান সৈন্যদের হত্যা করা হয়। ২৯ মার্চ পাবনা বিসিকে অবস্থানরত সৈন্যদের পরাস্ত করে পাবনাকে প্রথম শত্রুমুক্ত করা হয়। এরপর ১০ এপ্রিল পর্যন্ত নগরবাড়ী ঘাটে প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়। এই সবকিছুর সাথে রফিকুল ইসলাম বকুলের অগ্রনী ভূমিকা ছিল।
১৯৭১ এর ১০ এপ্রিল পাকিস্তান বাহিনী পুনরায় পাবনা প্রবেশ করলে রফিকুল ইসলাম বকুল, তাঁর বড়ভাই আব্দুর রাজ্জাক মুকুল, মোঃ ইকবাল, জহুরুল ইসলাম বিশু, ফজলুল হক মন্টু সহ বেশ কয়েকজন একসাথে কুষ্টিয়া – চুয়াডাঙ্গা হয়ে ভারতে চলে যান। তাঁরা কলকাতা গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করেন। পর্যায়ক্রমে সবার সাথে দেখা করেন। ১৭ এপ্রিল প্রবাসী সরকার গঠন হলে রফিকুল ইসলাম বকুল, মোঃ ইকবাল, আহমেদ বশীর সহ প্রবাসী সরকারের মন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং আব্দুস সামাদ আজাদ এর সাথে দেখা করেন। তাঁদের কাছে দাবী করেন, পাবনা জেলার জন্য একটি আলাদা ক্যাম্প স্থাপনের। এরপর তাঁদের পরামর্শে কলকাতা দূতাবাসের ডিপুটি হাইকমিশনার পাবনার কৃতিসন্তান এম হোসেন আলীর সাথে দেখা করেন। রাষ্ট্রদূত এম হোসেন আলী পাবনা জেলার জন্য নদীয়া জেলার কেচুয়াডাঙ্গায় একটি ক্যাম্প স্থাপনের ব্যবস্থা করেন। এরপর রফিকুল ইসলাম বকুল সহ পাবনার নেতৃবৃন্দ কেচুয়াডাঙ্গা ক্যাম্পে এসে অবস্থান নেন।
মে মাসের শেষের দিকে শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিংএ পাঠানোর কার্যক্রম। কেচুয়াডাঙ্গা ক্যাম্প ছিল মূলতঃ ট্রানজিট ক্যাম্প। এখন থেকে তরুণ যুবকদের বাছাই করে দুই গ্রুপে ভাগ করা হতো। এক গ্রুপ বিএলএফ বা মুজিববাহিনী আরেক গ্রুপ এফ এফ। মুজিববাহিনীতে শিক্ষিত এবং রাজনৈতিক সচেতনদের রিক্রুট করা হতো। পাবনার মুজিববাহিনীর প্রথম গ্রুপে মোঃ ইকবাল, আব্দুর রাজ্জাক মুকুল, জহুরুল ইসলাম বিশু এবং দ্বিতীয় গ্রুপে বেবী ইসলামের নেতৃত্বে দেরাদূনে উচ্চ প্রশিক্ষনে যায়। রফিকুল ইসলাম বকুল প্রথম গ্রুপে রওয়ানা হলে কলকাতায় গিয়ে তাঁকে থেকে হতে হয়। প্রবাসী সরকারের মন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী একটি বিশেষ কাজে রফিকুল ইসলাম বকুলকে অন্যত্র পাঠান। সেকারনে তাঁর আর প্রশিক্ষনে যাওয়া হয়না। তবে পরবর্তীতে রফিকুল ইসলাম বকুলকে আরো বড় দায়িত্ব দিয়ে কেচুয়াডাঙ্গায় পাঠানো হয়। মুক্তিযোদ্ধা বাছাই করে ট্রেনিং এ পাঠানো, ট্রেনিং শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের অভ্যন্তরে প্রেরন, অস্ত্র প্রদান, গ্রুপ গঠন, অর্থের ব্যবস্থা সহ দেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধের রনকৌশল তিনি নির্ধারন করতেন। বলা যায় তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি পাবনা জেলায় মুজিববাহিনী এবং এফ এফ বাহিনী পরিচালনা করতেন। যুদ্ধের সময় তিনি দেশের অভ্যন্তরে একাধিক বার প্রবেশ করেছেন। পাবনার বেশ কয়েকটি যুদ্ধের সরাসরি নেতৃত্বে দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন তাঁর ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
১৯৭২ সাল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ। পাবনার রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন। এক বছর সময়কালে পাবনার প্রধান রাজনৈতিক নেতাদের অনুপস্থিতি। মুক্তিযুদ্ধের আগে ৭০ সালের ২২ ডিসেম্বর নক্সালদের হাতে নিহত হন নবনির্বাচিত এমপিএ আহমেদ রফিক। ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানের সৈন্যরা হত্যা করেন নবনির্বাচিত এমপিএ এডভোকেট আমিন উদ্দিনকে । ৬ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নবনির্বাচিত এমএনএ আমজাদ হোসেন। স্বাধীনতার কয়েক মাসের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এমসিএ আব্দুর রব বগা মিয়া। দলীয় কোন্দলে বহিস্কার হন ১১ জন শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতা। ঠিক এই সময়ে ক্ষমতাসীনদের সাথে দলীয় কোন্দলে জড়িয়ে যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল। ১৯৭৪ সালে মিথ্যা মামলায় তাঁকে জেলে যেতে হয়। জেলে আটক থাকাবস্থায় তাঁর পিতা ইন্তেকাল করেন। তারপর তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে পিতার জানাযা এবং দাফনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর হস্তক্ষেপে কথিত সেই মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে নিহত হলে পাবনার প্রথম ব্যক্তি যিনি ভারতে যান এবং সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সংগঠিত হতে থাকেন। বঙ্গবন্ধু নিহত হলে তিনি খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। বহুবছর যাবত বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের জন্য তিনি একাধারে রোজা পালন করেছেন। পরে ১৯৭৮ সালে জেনারেল জিয়ার সামরিক সরকার রাজনীতি করার বিধি নিষেধ শিথিল করে দল গঠনের অনুমতি দিলে রফিকুল ইসলাম বকুল পাবনা ফিরে আসেন। তারপর ওয়াজি উদ্দিন খানকে সভাপতি করে তিনি সাধারন সম্পাদক এর দায়িত্ব গ্রহন করে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন করেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পাবনা সদর আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য ( এমপি) নির্বাচিত হন।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে দলীয় কোন্দলের কারনে পরাজিত হন। এরপর দলের নেতাদের প্রতি অভিমান করে ১৯৯৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে পাবনা পুলিশ লাইন মাঠে তাঁর অনুসারীদের নিয়ে বিএনপিতে যোগদান করেন। ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ এবং ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর প্রথমে পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং পরবর্তীতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ সালে ১০ নভেম্বর ঢাকা থেকে বাসে পাবনা আসার পথে সিরাজগঞ্জের কোনাবাড়ী নামক স্থানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরন করেন। তাঁর এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে গোটা পাবনায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এরপর তাঁর মরদেহ পাবনায় আনা হলে সর্বস্তরের মানুষ তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরেরদিন পাবনা পুলিশ লাইন মাঠে লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে জানাযা অনুষ্ঠিত হয় এবং পরে আরিফপুর কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল ১৯৮১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী রাধানগর ইছামতি স্কুল পাড়ায় আবু তাহের আনছারীর কন্যা ও প্রখ্যাত অভিনয় শিল্পী এড. আবদুল হান্নান শেলীর বোন নাসিমা ইসলামকে বিয়ে করেন। তাঁর ১ ছেলে ১ মেয়ে। ছেলে নূর-ই- ইসলাম লেখাপড়া শেষ করে ব্যবসা করেন। মেয়ে রাফিয়া ইসলাম বিবাহিত এবং স্বামীর সঙ্গে প্যারিসে থাকেন।
ক্ষনজন্মা বীর রফিকুল ইসলাম বকুল তাঁর ৫০ বছর জীবনকালে যে মহৎ অমর গাঁথা কাব্যিক জীবন গড়েছিলেন – তা হাজার বছর ধরে অনাগত ভবিষ্যত স্মরণ করবে। ( সমাপ্ত)
লেখক –
আমিরুল ইসলাম রাঙা
রাধানগর মজুমদার পাড়া
পাবনা।