নেত্রকোনার দুর্গাপুর ইউএনও অফিসের বদলীকৃত নৈশ প্রহরী জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। দায়িত্বে অবহেলা, চোরাই বিদ্যুৎ ব্যবহার, খাবার সরবরাহের ব্যবসা, পুকুরের মাছ ধরা, বাগানের কাঠ নেয়া ও ভবন দখল সহ মোটরগাড়ীর ব্যবসার সাথে জড়িত থাকায় সে চাকুরীজীবী না ব্যবসায়ি জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
এ বিষয়ে সোমবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দুর্গাপুরে বালুবাহী মুন এন্টার প্রাইজ নামে ট্রাক গুলোর মালিক নৈশপ্রহরী জহিরুল
ইসলাম। এছাড়া তিনি উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠান, দুর্গাপুরে বেড়াতে আসা পিকনিক পার্টি ও অফিস গুলোতে এনজিওদের খাবার সরবরাহ করে থাকে। রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয় চোরাই পথে নেয়া উপজেলা পরিষদের বিদ্যুৎ।
জোর করে দখলে নেয়া উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির অফিস কক্ষ সহ অন্য
একটি কক্ষ দখল করে বসবাস করছে বহাল তবিয়তে। উপজেলার জায়গা থেকে
কেটে নেয়া গাছ দিয়ে তার ড্রইং রুমে বানিয়েছে আলিশান সোফা ও বক্সখাট। ওই কক্ষের লাইট, ফ্যান, তার ও চেয়ার টেবিল সব গুলোই উপজেলা পরিষদের।
সাংস্কৃতিক কার্যক্রমকে ব্যহত করে শিল্পকলা একাডেমি ভবনের সামনেই তৈরী করে রেখেছে লাকড়ীর ঘর ও মুরগীর খোয়ার। সেখান থেকে প্রতিনিয়ত ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ যার ফলে একাডেমির প্রশিক্ষন কেন্দ্রে ক্লাশ করতে আসা
শিক্ষার্থীদের প্রায়ই ক্লাশ থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। একই ষ্টেশনে প্রায় ১৫বছর ধরে চাকুরী এবং ইউএনও অফিসের ষ্টাফ হওয়ায় খোদ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নাম ব্যবহার করে নিজের বালুবাহী ট্রাকগুলো দিয়ে
পৌরটোল, আমদানী-রপ্তানী টোল, ডাইভার্সন টোল প্রদান না করে প্রতিদিন হাতিয়ে নেয় বহু টাকা এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। রাতে
ট্রাকের ডিউটি করায়, অফিসের সময় শেষ হলেও অফিসের পতাকা নামাতে মনে থাকে না তার। যে কারনে প্রায়ই রাতে অফিসের সামনে পতাকা ঝুলতে দেখাযায়। এ নিয়ে জহির কে জিজ্ঞাসা করলে সে ইউএনও অফিসে চাকুরী
করে এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, কারো কাছে জবাবদিহি করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এ সকল প্রশ্নবিদ্ধ কারনে প্রায়ই তাকে এই ষ্টেশন থেকে অন্যত্র বদলী হতে হয়। অজ্ঞাত কারনে ২ থেকে ৩ মাস পর ঐ স্থান থেকে পুনরায় আগের ষ্টেশনে বদলী হয়ে চলে আসে জহিরুল। এ যেন আলাদিনের চেরাগ
প্রশ্ন জাগে তাঁর খুটির জোর কোথায় ?
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে নানা
অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে এমন অভিযোগে উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
বিষটি খতিয়ে দেখে সত্যতা পেয়ে ইতোমধ্যে এই ষ্টেশন থেকে তাকে পুর্বধলা ইউএনও অফিসে বদলী করা হয়েছে। সেই সাথে শিল্পকলা একাডেমির অফিস কক্ষ সহ আশপাশে জায়গা খালি করে চাবি বুঝিয়ে
দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। নৈশপ্রহরী জহিরুলের এ সকল সম্পদের সঠিক হিসাব ও তাঁর অপকর্মের বিষয় গুলো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন উপজেলা
প্রশাসন, এমনটাই আশা করছেন এলাকাবাসী।