২১ মার্চ রাত ১০ টা, ফেসবুক মেসেঞ্জারে আলোচনা করে পরের দিন সকালেই সবাই ১০০ টাকা করে চাঁদা তুলে ঢাকার সিদ্দিক বাজারে চলে যায় ৪ জন তরুণ। কিনে আনা হল ১৮ লিটারের একটা স্প্রেয়ার, ২৫০ টি ছোট ছোট স্প্রেয়ার (যা বোতলের মুখে এঁটে স্প্রে করা যায়), ১ বস্তা ব্লিচিং পাউডার, ৩ গ্যালন ফিনাইল (১ লিটার প্রতি গ্যালন)। এরপর নিজেরাই ইন্টারনেট ঘেটে তৈরি করা হল ২৫০ টি সচেতনতামূলক লিফলেট।
শুরু হল সবাই মিলে পুরো গলি ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ধুয়ে ফেলা, প্রতিটা ড্রেনে, মেইনহলে, গলির প্রতিটা বাড়ির গেটে স্প্রে করে যথাসম্ভব সেনিটাইজ করা হল। তারপরই বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট এবং স্প্রে বোতল দিয়ে আসা শুরু হল এবং এক এক করে সবাইকে বুঝানো হল কিভাবে থাকতে হবে সচেতন এবং নিরাপদ।
অবশেষে গলির বাইরে বসানো হল একটি বেসিন আর হ্যান্ড ওয়াশ, পাশে লাগান একটি সতর্কীকরণ পোস্টার দিয়ে দেয়া হল। নিয়ম করা হল বাইরে থেকে আসা মাত্রই হাত ধুতে হবে। এই আয়োজন দেখে গলির বয়োজ্যেষ্ঠরা উৎসাহ দিলেন এবং পুরো খরচটাই তারা দেয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন।
লকডাউন শুরু হল এবং সবাই নিজেকে এবং নিজের এলাকাকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ করে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করলো, কারন এখন কাজ একটাই অযথা ঘুরাঘুরি না করে বাড়িতে থেকে সরকারকে সহযোগিতা করা।
এই কাজ কোন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা কোন নির্দেশনা প্রনদিত না, এইকাজ দেশ ও পাশের বাড়ির মানুষটির জন্য। এটা ভালোবাসা, সততা এবং একতা।
তাদের মধ্যে একজন জানালেন, “আমগো গল্লি আমরা সেফ করছি, এখন আমরা সবাই বাড়িতে, খামাখা বাইরে আড্ডা মারা পুরাপুরি বন্ধ। কিন্তু এলাকার প্রয়োজনে এক হইতে আমাগো ১ মিনিটও সময় লাগবো না ইনশাল্লাহ। আমরা আমগোটা করসি, আপনারাও করেন”
এই ঘটনাটি পুরনো ঢাকার “হাজী ইয়াসিন বেপারী লেন” পোস্তা, লালবাগের, আসুন আমরাও সবাই এই সংকট মোকাবেলায় সচেতনতার সাথে একে অপরের পাশে দাঁড়াই।