নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী লেঙ্গুরা বাজারে আদিবাসী হংসরাজ হাজং এর বিক্রিত জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লেঙ্গুরা হাইস্কুল সংলগ্ন রাস্তার উত্তর পাশের্^ হংসরাজ হাজং তার নিজস্ব ভুমি হতে এলাকার মোঃ জাহেদ আলী মাষ্টার এর নিকট ১২ শতক ও মনিন্দ্র হাজং এর কাছে ১৪ শতক ভুমি বিক্রি করেন। জাহেদ আলী মাষ্টার তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি ২০০৫ সাল থেকে ভোগ দখল করে
আসছে অপর দিকে ২০০৮ সালে একই দাগ থেকে ১৪ শতাংশ মনিন্দ্র হাজং এর কাছে বিক্রি করে যার দলিল নং-৩৫১৪। একই দিনে এবং একই সময়ে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসকে ম্যানেজ করে ঐ আদিবাসীর কাছ
থেকে সুকৌশলে একই দাগ ও একই চৌহদ্দীতে পূর্বে বিক্রিত ১৪ শতাংশ ভূমি পুনরায় জাল দলিল সম্পাদিত হয়, যাহার নং-৩৫১৫। ঐ ভূমি হাত বদল হয়ে ওই এলাকার বাবুল মিয়ার স্ত্রী নাসরিন ক্রয় করেন।
ভুয়া দলিলের খবর পেয়ে জমির সাবেক মালিক হংসরাজ হাজং জাল দলিল পন্ডের জন্য দুর্গাপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় গত ২৫ মার্চ নাসরিন আক্তার
গং’রা ক্রয়কৃত ভূমি ও জাল দলিলের ভূমিতে অবৈধভাবে দখল করতে গেলে জাহেদ আলী মাষ্টার এর ভাতিজা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মাসুম হাওলাদার ও রিয়াদ হাওলাদারকে গুরুতর আহত করে নাসরিনের বাহিনী। স্থানীয়রা
তাঁদের উদ্ধার করে কলমাকান্দা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখতে উভয় পক্ষকে ওই জায়গাতে যেতে নিষেধ করে। এমন গন্ডগোলের আবাস পেয়ে জাহেদ মাষ্টার
কলমাকান্দা থানায় গত ১৮মার্চ সাধারণ ডায়েরী করেন।
পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার কিছুক্ষন পরেই নাসরিন আক্তার গংরা পুলিশের নিষেধ অমান্য করে পুনরায় স্থাপনা নির্মাণ করার চেষ্টা করলে জাহেদ আলী গংরা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ দ্বিতীয়বারের মতো ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের নিষেধ অমান্য করায় নাসরিন গংদের গালমন্দ করে ওখানে না যাওয়ার জন্য নিষেধ
করে স্থানীয় দররারের শেষ করে দেয়ার জন্য উভয়ের কাগপত্রাদী নিয়ে আসার জন্য আহবান জানান। ঘটনা স্থল থেকে পুলিশ চলে গেলে কে বা কাহারা ওই চালাঘর ভেঙ্গে দিলে উল্টো জাহেদ মাষ্টারকে প্রধান আসামী দিয়ে গত ২৮মার্চ ১৪ জনের বিরুদ্ধে ঘর ভাঙ্গার মামলা দায়ের করেন নাসরিনের স্বামী বাবুল হাওলাদার।
এ ঘটনায় আহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করতে গেলে কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে শেষ করতে বলেন। এ ব্যাপারে ঘটনার তদন্তে আসা কলমাকান্দার থানার এস.আই শহিদুল জানান, জমি দখলকে কেন্দ্রকরে আইনশৃংখলা ভঙ্গের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করে আসি। জাহেদ আলী মাষ্টার গংরা আমাদের আদেশ মানলেও নাসরিন গংরা আদেশ না মেনে পুনরায় স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে আমরা পুনরায় ঘটনা স্থলে গিয়ে নির্মান কাজ বন্ধ করি। এ সময় দুই উপজেলা ৮ থেকে ১০জন সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এলাকার সুধীমহল মনে করছেন, জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় মামলা আর মারামারিতে শেষ হবে না। ছোট একটি বিষয় নিয়ে যে অবস্থা শুরু হয়েছে, যে কোন মুহুর্তে শান্ত এলাকাটি অশান্ত এলাকায় পরিনত হতে পারে। ঘটতে পারে খুন খারাপি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের মার খেয়েছে থানায় তাদের
মামলা না নিয়ে, থানায় অন্য পক্ষের মামলা নেওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিষয়টি খতিয়ে দেখে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে নিষ্পত্তির জন্য উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।