ভারতসহ বাংলাদেশের লাখো ভক্তের সমাগমে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র’র ১৩২ তম আবির্ভাব বর্ষ স্মরণ তিনদিনব্যাপী মহোৎসব রোববার থেকে শুরু হয়েছে।
পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স প্রধান অতিথি হিসেবে তিনদিনের এই মহোৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় প্রত্যেক ধর্মের মানুষ তাদের নিজস্ব ধর্মীয় রীতিনীতি ও আচার অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণ ভাবেই পালন করছেন। যা ইতোপূর্বে ছিল কঠিন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেক ধর্মের মানুষকে নিরাপদে শান্তিতে তাদের ধর্মীয় কর্মকান্ড পরিচালনায় অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। অনুকূল ঠাকুর যে ঔবাণী রেখে গেছেন। এই বাণী শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নয়। প্রত্যেক ধর্মের
মানুষের জন্য কিছু দিকনির্দেশনা রয়েছে। ধর্মীয় দিক বিবেচনায় না নিয়ে যে কোন ধর্মের মানুষ যদি এই বাণীগুলো মেনে চলেন, তাহলে দেশে বা
সমাজে কোন অশান্তি বা অপ্রীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়।
শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ আশ্রমের সভাপতি ড. শ্রী রবীন্দ্রনাথ সরকারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য
দেন জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। এই মানুষের মধ্যেই রয়েছে ধর্মীয় শ্রেণীবিন্যাস। প্রত্যেক ধর্মের অনুসারীদের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা গ্রন্থ। তেমনি ঠাকুর অনুকূল তার ভক্ত অনুসারীদের
সুন্দর পথ দেখানোর জন্য কিছু উপদেশ বাণী রেখে গেছেন। তিনি আজ এই নশ্বর পৃথিবীতে নেই। কিন্তু তার রেখে যাওয়া কর্ম, ধর্ম ও বাণী রয়েছে। তিনি
বলেন, আপনারা যারা এই মহোৎসবে এসেছেন। তারা ঠাকুরকে অনুসরণ করে
এই দেশকে শান্তিতে পরিপূর্ণ রাখুন। নিরাপদে থাকুন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস ও হেমায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা।
আলোচনা সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য দেন, ভারত থেকে আগত অধ্যাপক অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়, জগদীশ দেবনাথ, শ্রী কমল সেন ও চট্টগ্রাম জেলা সৎসঙ্গ ও শ্রীশ্রী ঠাকুরের মাতৃমন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা লায়ন সংকর সেনগুপ্ত। অনুষ্ঠানে
স্বাগত বক্তব্য দেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ’র সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার রায় ও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সহসভাপতি যুগোল কিশোর ঘোষ।
অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন মহোৎসব আয়োজক কমিটির আহবায়ক ড. নরেশ মধু ও সঞ্চালনায় ছিলেন সৌমিত্র মজুমদার পলাশ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।
উদ্বোধনী দিনে ভোরের সমবেত প্রার্থনা, সদগ্রন্থাদি পাঠ, কর্মি বৈঠক, ভক্তিমূলক গানের আসর, আনন্দবাজার ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে
মাতৃ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এদিকে তিনদিনব্যাপী মহোৎসব শুরুর আগে থেকেই আশ্রমে দেশি বিদেশী ঠাকুর ভক্ত অনুরাগীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে মহোৎসব প্রাঙ্গন। সৎসঙ্গ
আশ্রমের চিত্র রঞ্জন দাস বলেন, মহোৎসবে আমরা ৫০/৬০ হাজার ঠাকুর ভক্ত অনুরাগীদের আগমন ধরেছিলাম। কিন্তু সেটি ছাড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন,
আনন্দ বাজার তাদের থাকা ও খাওয়ার সু ব্যবস্থা করেছে। তিনি দাবী করেন, ঠাকুরের স্মরণ মহোৎসব ঘিরে আবাসন ও দর্শণার্থী মিলে কমপক্ষে লক্ষাধিক
মানুষের সমাগম হয়েছে।
মহোৎসব ঘিরে বসেছে মেলা। নানা পণ্য বাহারি সামগ্রী ভক্ত অনুরাগী ও দর্শণার্থীদের মন কেড়েছে। পাশাপাশি নানা স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরী করেছে
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। যে কোন ধরণের নাশকতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিহত করতে সচেষ্ঠ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।