ঝিনাইদহে মাটির নীচ থেকে বেরিয়ে এলো ২শ বছরের পুরাতন মুদ্রা


পুরাতন মাটির ঘরের মাটি কাটছিল শ্রমিকরা। হঠাৎ মাটির নীচ থেকে বেরিয়ে এলো রুপকথার গুপ্তধন শত শত মুদ্রা। মাটিটানা পাওয়ার ট্রলির চাকার ঘর্ষণে বেরিয়ে আসা মহামূল্যবান এসব প্রতœতাত্তি¡ক সম্পদ মুদ্রা কুড়াতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে উপস্থিত সবাই। সংবাদ পেয়ে মুহুর্তের মধ্যে সেখানে ছুটে আসে প্রতিবেশি নারী পুরুষ ও শিশুরা। সবাই মাটি নীচে আরো এমন মুদ্রা আছে গুজবে মাটি খুড়তে থাকে। সময় গড়ানোর সাথে সাথে বাড়তে থাকে শত শত উৎসুক মানুষের ভিড়। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের দে পাড়ায়।ঘটনার পর কালীগঞ্জ থানার পুলিশ কয়েক দফায় সেখানে অভিযান চালিয়ে শতাধিক সিলভার কালারের বেশকিছু কয়েন উদ্ধার করে। এরমধ্যে ওই বাড়ির গৃহবধূ করুণা রাণী দে’র কাছ থেকে ২৬ টি এবং পাশ^বর্তী বলরামপুর গ্রামের নয়ন হোসেনের কাছ থেকে ছয়টি। তবে, মুদ্রা উদ্ধারের বিষয়টি প্রথমে অসিকার করলেও মঙ্গলবার দুপুরের পর পুলিশের পক্ষ থেকে ৪৩টি ভারতীয় মুদ্রা উদ্ধারের কথা গণমাধ্যকর্মীদের জানায়।তবে, স্থানীয়রা বলছেন মাটি কাটার সময় শত শত মুদ্রা বেরিয়ে আসে। তাদের দাবি উদ্ধার হওয়া মুদ্রাগুলো সবই রৌপ মুদ্রা। তবে কত পরিমান পাওয়া গেছে তা নিয়ে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামবাসী জানিয়েছে পুলিশ তাদের কাছ থেকে অর্ধশত মুদ্রা নিয়ে গেছে আর বাকি মুদ্রা শ্রমিকরা আত্মসাত করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলা পূর্বে জামাল ইউনিয়নের গ্রাম গোপালপুর। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বেগবতী নদী। দুইশত বছরের অধিক সময় ধরে এই গ্রামে বসবাস করছে মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। ওই গ্রামের কৃষক সুনিল দে। তাদের বাড়িতে রয়েছে চার পুরুষ পূর্বের ২০০ বছরের একটি পুরাতন মাঠির ঘর। ১৫ দিন আগে পুরাতন সেই ঘর ভেঙ্গে মেঝের মাটি কেটে পান বরজে নিয়ে যা্িচ্ছল। সোমবার মাটি কাটার সময় পাওয়ার ট্রলির চাকার সাথে হঠাৎ বেরিয়ে আসে শত শত মুদ্রা। যে সব মুদ্রায় গ্রেট ব্রিটেনের রাণী ভিকটরিয়া ও রাজা সপ্তম এ্যাডওয়ার্ডের ছবি রয়েছে।বাড়ির মালিক সুনিল দে’র ভাই সুদিপ কুমার দে জানায়, আমার দাদার বাবা মানে চার পুরুষ আগের তারুণ দে গোপলপুর গ্রামে এই মাটির ঘরটি তৈরি করেন। তখন থেকেই পর্যায়ক্রমে এই ঘরে আমরা বসবাস করে আসছি। সম্প্রতি ঘরটি ভেঙ্গে সেই মাটি মাঠের পান বরজে নেওয়া হচ্ছিল। সে সময় মাটির নীচ থেকে রৌপ মুদ্রা বের হয়ে আসে। এসময় আমার ভাবি করুণা রাণী দে ২৬টি কয়ের কুড়াই। যেগুলো সোমবার সন্ধ্যা রাতে সাদা পোশাকের পুলিশ এসে নিয়ে গেছে। পরে রাতে আরো দু’ফায় পুলিশ বাড়িতে এসে তল্লাসি করে। তবে তার ধারণা এসব কয়েন আমাদের চার পুরুষ আগের তারুণ দে মাটির নীচে রেখে দিয়েছিল। ২নং জামাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের হোসেন জানান, আমি লোকমুখে শুনেছি কিন্তু নিজে দেখিনি। শুনেছি একটি পুরাতন বাড়ির মাটি
কাটার সময় রৌপ মুদ্রাগুলো বেরিয়ে আসে। যা উপস্থিত সবাই যে যার মতো কুড়িয়ে নিয়ে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে মুদ্রা উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দেওয়া কালীগঞ্জ থানার এএসআই সুজাত আলী জানান, সংবাদ পেয়ে সন্ধ্যা রাতে ওই গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৪৩ টি মুদ্রা উদ্ধার করা হয় বাকি মুদ্রা স্থানীয়রা আত্মসাৎ করেছে। উদ্ধার হওয়ার মুদ্রার মধ্যে ২২টিতে রাণীর ছবি ও ১৯টি ব্রিটেনের রাজার ছবি রয়েছে। উদ্ধার করা মুদ্রাগুলো বাংলাদেশ সরকারের প্রতœতাত্তি¡ক অধিদপ্তরকে দিয়ে দেওয়া হবে বলে যোগ করেন।কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রাণী সাহা জানান, সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানার পর থানার ওসিকে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।