টাঙ্গাইলের কালিহাতী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে সম্প্রতি একটি মাহফিলে উস্কানিমূলক বক্তব্য ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে, তার অপসারণ দাবীতে ইউএনও বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছেন কালিহাতী উপজেলা ওলামা পরিষদ।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের নিকট এ স্মারক লিপি প্রদান করেন কালিহাতী উপজেলা ওলামা পরিষদ নেতৃবৃন্দ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের প্রসেস সার্ভার আব্দুল কাদের।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কালিহাতীর সাতুটিয়া খাইরুল নগর জামে মসজিদ সংলগ্ন মাঠে একটি মহিলা ক্বওমি মাদরাসা আয়োজিত
মাহফিলে ওয়াজ করার সময় সহশিক্ষা তথা বালক-বালিকা এক সাথে শিক্ষা গ্রহণ করা হারাম, যারা সরাসরি ছেলে-মেয়েদেরকে শিক্ষা দিবে তারা ফাসেক। কোন মৌলবী যদি ছেলে মেয়েদের একসাথে পড়ান তাহলে তাদের পিছনে নামাজ পড়া কবিরাহ গুনাহ তথা
মাকরুহে তাহরিমি। এ ধরণের কোন মৌলবীকে কোন কমিটি যদি ইমাম হিসেবে
নিয়োগ দেয় তাহলে নিয়োগ কমিটিও কবিরাহ গুনাগার হবে। আমাদের হাই স্কুলে যে সকল ছেলে-মেয়েরা পড়ে তাদের নামাজ শিক্ষা দেয়া হয় না। সরকার বা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে যারা সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান করেন তাদের ইমামতি করার যোগ্যতা নাই এবং এতে কর্তৃপক্ষসহ উভয়ই কবিরাহ গুনাগার হবে।
এমন বক্তব্যে আলেম ওলামা, মসজিদ কমিটির সদস্যবৃন্দ সহ সকলের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে এবং কালিহাতী উপজেলার সকল সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অভিভাবক
এবং আলেম-ওলামাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত ঐ ইমামকে দ্রুত অপসারণের দাবীও জানিয়েছেন কালিহাতী ওলামা পরিষদ।
এ বিষয়ে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে গনমাধ্যমের নিকট পাঠানো কালিহাতী
কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা আব্দুস সালাম লিখিত বক্তব্যে বলেন,
মূলত আমি মেয়েদের দ্বীনি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও শরঈ পর্দার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে
প্রাসঙ্গিকভাবে অর্থাৎ মহিলাদের ক্বওমী মাদরাসায় পড়ানো আলোচনা করতে গিয়ে
বলি যে, বালেগ (প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে) ও বালেগা (প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে) এর বেপর্দাভাবে
একসাথে দরস দেওয়া (ক্লাস করানো) কে শরীয়ত কোন ভাবেই অনুমোদন করেনা এবং এর সাথে জড়িত ব্যক্তিগণ আসাদ্দে দরজার ফাসেক (মারাত্মক কবিরা গুণাহে লিপ্ত)।শুধুমাত্র শরয়ী মাসআলাটি বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। সেইসাথে বলেছি যে, কোন মৌলবী সাহেবও যদি কোন বালেগা মেয়েকে বেপর্দা অবস্থায় পড়ান তাহলে তার
ইমামতি করা মাকরুহে তাহরিমী। এর সাথে আরও বলি যে, মহিলা ক্বওমী মাদরাসায় যে
পরিমাণ গুরুত্বের সাথে মেয়েদেরকে বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত শিক্ষা দেওয়া হয় এবং নিয়মিত তেলাওয়াত, নামাজ ও অন্যান্য আমলে অভ্যস্ত করা হয় অন্য কোথাও এর নজির পাওয়া যায় না এবং হাইস্কুলে যে সকল মেয়েরা পড়ে তাদের কোন নামাজ শিক্ষা দেওয়া হয়না এ কথা আমি আমার বয়ানে বলিনি। তিনি আরও বলেন, উক্ত মাহফিলে আমি কোন প্রকার দেশ তথা রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী কোন বক্তব্য প্রদান করিনি।