বিভাগের নাম ফলিত পরিসংখ্যান করার দাবিতে এবার আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একমাসেরও বেশি সময় ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে লাগাতার কর্মসূচি পালনের পর গতকাল বুধবার (২৬.০২.২০) সকাল থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করে তারা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলছিল।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। ভবনটির তৃতীয় তলায় তাদের বিভাগ অবস্থিত। সাড়ে ১০টার দিকে তারা ভবনটির সামনে বসে অনশন শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা ‘স্বাধীন বাংলায় দাবি আদায়ে কেন আমাদের অনশন করতে হবে, জীবন লাগলে দেবো, তবুও ফলিত পরিসংখ্যান নেবো, ডিমান্ড ফর অ্যাপ্লাইড স্ট্যাটিসটিকস’ লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। কর্মসূচিতে বিভাগটির বিভিন্ন বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।
অনশনরত শিক্ষার্থী এমএস সোহাগ হোসানই বলেন, পপুলেশন সায়েন্স এবং হিউম্যান রিসোর্স সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র দু’টি বিষয়। পপুলেশন সায়েন্স সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের এবং হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ব্যবসায় অনুষদের অন্তর্ভূক্ত। অথচ দু’টি ভিন্ন স্বতন্ত্র বিষয়কে এক করে কেবল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ান হচ্ছে এবং বিএসসি সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে। অপরিকল্পিত নামান্তরের কারণে পিএসসিও দীর্ঘ ২৪ বছরে বিষয়টির স্বতন্ত্র কোড প্রণয়ন করেনি।
তিনি আরো বলেন, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগটির মূলই হল পরিসংখ্যান বিভাগ। আমাদের পপুলেশন সায়েন্স সম্পর্কিত ৩৪ ক্রেডিট এবং হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত ১৬ ক্রেডিট পড়ান হয়। এরই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পরিসংখ্যান সিলেবাসের ১০১ ক্রেডিট পড়ান হয়। যা পিএসসি’র পরিসংখ্যান কিংবা ফলিত পরিসংখ্যানের সঙ্গে ৯৫ শতাংশ সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ম-ল বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তারা বলছে যে এ বিষয়ে উপাচার্য স্যারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লিখিত আশ্বাস দিতে হবে।
এদিকে, অনশন শুরু হওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, বিজ্ঞান অনুষদের ডিনসহ অন্যান্য শিক্ষক অনশনস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি স্থগিতের জন্য আহ্বান জানান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকেন। দুপুর ৩টার দিকে পুনরায় তারা পুনরায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছিলাম। তাদের দাবির বিষয়টি উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।