আটঘরিয়ায় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি গ্রেপ্তার

স্টাফ রির্পোটার :
মুক্তিযোদ্ধা, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বাদ দিয়ে
প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা খাতুন তার স্বামীকে নিয়ে মহান “শহীদ দিবস ও
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে
ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে বাগবিতন্ডার জের ধরে মিথ্যা অপবাদ
দিয়ে থানায় মামলা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বিদ্যালয়ের
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুনজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করায় ক্ষুদ্ধ হয়ে
ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
তাদের সাথে একত্বতা প্রকাশ করে মানববন্ধনে অংশ নেয় জনপ্রতিনিধি,
শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার চাঁদভা
ইউনিয়নের ৭০নং রতিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এদিকে থানা পুলিশ শনিবার গ্রেপ্তারকৃত সভাপতিকে আদালতের মাধ্যমে
জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ,
মহান “শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রতিপুর সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রদান শিক্ষিকা সেলিনা খাতুন এলাকার মুক্তিযোদ্ধা
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বাদ দিয়ে তার স্বামী
সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অবস্থিত শহীদ মিনারে ফুল দেয়। ঘটনাটি
ম্যানেজিং কমিটি প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষিকা মিথ্যা অভিযোগ
নিয়ে আটঘরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তাৎক্ষনিক আটঘরিয়া
থানা পুলিশ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুনজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েলে এলাকাবাসী, অভিভাবক ও
জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
গ্রেপ্তার ঘটনায় কমিটির সভাপতির মুক্তির দাবীতে ক্লাস বর্জণ করে
বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের সাথে
একত্বতা জানিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষার্থী
অভিভাবক ও এলাকাবাসী

পরে আটঘরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. তানভীর ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান
মো. জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিরাজুম মুনিরা,
চাঁদভা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম কামাল ঘটনাস্থলে
পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রত্রনে আনে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা
খাতুন আমাদের বাদ দিয়ে তিনি আর তার স্বামীকে নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল
দেয়।
চাঁদভা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন,
দুর্নীতিবাজ এই প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা খাতুন এলাকার বীর
মুক্তিযোদ্ধাদের অসন্মান করে কথা বলাও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ছবি তার অফিস কক্ষে রেখে
অবমাননারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনিই সৎ একজন ম্যানেজিং
কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন। এই
দুনর্িিতবাজ প্রধান শিক্ষিকার বিচার দাবী করেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিরাজুম মনিরা বলেন, এই
প্রধান শিক্ষিকাকে আর এই স্কুলে রাখা যাবে না। তার বিরুদ্ধে দ্রুতই
প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিক জানান,
প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা খাতুন শুক্রবার বাদী হয়ে আটঘরিয়ায় থানায়
মারপিট, সরকারি কাজে বাধা, চাঁদাবাজি ও হুমকির অভিযোগ এনে ৫জনের
নামে মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি,
সহসভাপতি, একজন সহকারী শিক্ষক ও দুইজন অভিভাবক রয়েছেন। আসামিকে
গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম বলেন, ঘটনাটি সত্যিই দু:খজনক।
বিষয়টি আমরা জেনেছি। তবে এলাকাবাসী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে চরম ক্ষুদ্ধ।
তবে বিদ্যালয়ে শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা
হবে।