বাংলাদেশে জলাতঙ্ক রোগতত্ত্বের সর্বশেষ চিত্র

গত ২০০৬ থেকে ২০১৮ সালের সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের জলাতঙ্ক মৃত্যুজনিত ৭৮% মানুষ কুকুর-বিড়াল বা প্রাণি কামড়-আঁচড়ে আক্রান্তের পর চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হয়ে ঝাড়ফুঁকের জন্য কবিরাজ, গ্রাম্য হাতুড়ে, ওঝার দ্বারস্থ হয়েছেন। এরা কেউই প্রাণি কামড় পরবর্তী প্রতিষেধক অর্থাৎ Post Exposure Prophylaxis (PEP) নেন নি। ভাবা যায়, কতো ভয়াবহ ব্যাপার এটি। এদের মাত্র ১২% প্রাণি কামড় পরবর্তী প্রতিষেধক নিয়েছেন কিন্তু পুরো কোর্স সম্পন্ন করেন নি। অথবা প্রতিষেধক নিয়েছেন কিন্তু আরআইজি অর্থাৎ Rabies Immunoglobulin নেন নি। এটিও বেশ দুঃখজনক। ভালো দিক:বাংলাদেশে জলাতঙ্কে আক্রান্তের হার কমেছে। জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচির আওতায় সারা দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা পরিচালিত ব্যাপকহারে কুকুর টিকাদান (এমডিভি) কার্যক্রমের মাধ্যমে এটি সম্ভব হয়েছে। এমডিভির মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগের সংক্রমণ কমানোর এই পদ্ধতিটি ওয়ান হেলথ বা সমন্বিত পন্থা’র চমৎকার দৃষ্টান্তের একটি।
উন্নতি করার জায়গা:বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল জলাতঙ্ক রোগীদের সর্বশেষ ঠিকানা। যারা জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়, তাদের আরাম উপশম চিকিৎসা ব্যাবস্থপনার আরো উন্নয়ন ঘটাতে হবে। প্রাণি কামড়ে আক্রান্তের সাথে সাথে সাবান পানি দিয়ে ক্ষতস্থান ১৫ মিনিট ধুয়ে ফেলতে হবে এবং আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে এই জনসচেতনতা আরো বাড়াতে হবে।
সর্বশেষ:এই গবেষণার ফলাফল টা খুবই আশাব্যঞ্জক। ব্যাপকহারে কুকুর টিকাদানের মাধ্যমে জলাতঙ্ক সমূলে নির্মূল করা সম্ভব।
দ্যা রয়েল ভেটেরিনারি কলেজ এর গবেষক ডাঃ নাজমুল হায়দার সুমন এর ফেসবুক পোস্ট থেকে অনুদিত।